মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন

নওগাঁর পতœীতলায় নজিপুর পৌরসভার এক নারী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মৃত. মাকে জীবিত দেখিয়ে গত ৯ মাস ধরে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মজার বিষয় হলো উক্ত নারী কাউন্সিলরের মা প্রতিবন্ধী না হলেও তাকে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে ভাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও পরিবারের সকল সদস্য, আত্মীয়-স্বজনকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কোন না কোন সেবায় অন্তর্ভুক্ত, পৌরসভার বাহিরের মানুষকে পৌর সেবায় অন্তর্ভুক্তকরণ এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিল্ডিং প্লান পাস করিয়ে নেওয়ার জন্য সুপারিশসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত পৌর নির্বাচনে ২য় বারের মতো নজিপুর পৌরসভার ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হোন মোছা. ফারজানা খাতুন। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই তিনি নানারকম অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। নিজের সুস্থ মা মোছা. ফাতেমা বেগমকে প্রতিবন্ধী বানিয়ে তিনি ভাতায় অন্তর্ভুক্ত করেন (ওয়ার্ড নং-৭, সিরিয়াল নং-৩৬) এবং পিতা নেজাম উদ্দিনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন (ওয়ার্ড নং-৭, সিরিয়াল নম্বর ৩২)। গত ৯ মাস আগে কাউন্সিলরের মা মারা গেলেও তিনি মৃত মায়ের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, বাবা-বোনসহ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কোন না কোন সেবায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে জানা গেছে।

কাউন্সিলর ফারজানা খাতুন এর বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ পাওয়া গেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সেবায় অন্তর্ভুক্ত করে দেয়ার নামে উপকারভোগীদের নিকট অর্থ গ্রহণ, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিল্ডিং প্লান পাস করে দেয়ার জন্য সুপারিশ করা, পৌরসভার বাহিরের মানুষকে পৌরসভার সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা, অকৃষদের মাঝে ভর্তুকির সার ও বীজ বিতরণ করাসহ ইত্যাদি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হরিরামপুর কলেজ পাড়ার বাসিন্দা মানিক নামের এক ব্যক্তিকে কাউন্সিলর ফারজানা কৃষি ভর্তুকির কার্ড করে দিলেও উক্ত মানিকের কোন কৃষি জমি নেই। মানিক কাউন্সিলর ফারজানার বোন জামাই।

নজিপুর নতুনহাট মোড় এলাকার বাসিন্দা হাসান হাবিব সরকার বলেন, তার স্ত্রী নাসরিনের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেয়ার জন্য কাউন্সিলর ফারজানার নিকট গেলে তিনি টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারার কারণে তার স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড হয়নি।

এ বিষয়ে সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারজানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

নজিপুর পৌরসভার মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরী জানান, কাউন্সিলর ফারজানা নিজের মৃত মায়ের নামে ভাতা খাচ্ছে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এছাড়াও পৌর এলাকার বাইরে মানুষদের বিভিন্ন সেবায় অন্তর্ভুক্ত করাসহ সকল অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. সুলতান আহমেদ বলেন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা খাতুনের মা প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী ছিলেন এটা সত্য। তিনি কয়েক মাস আগে মারা গেছেন শুনেছি। আমরা বিষয়টি জানার পর পৌর মেয়রকে নতুন নাম প্রতিস্থাপন করতে বলেছি। নাম প্রতিস্থাপন না করায় গত জানুয়ারি হতে মার্চ পর্যন্ত ভাতার টাকা ওই অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। নিজের মৃত মায়ের নামে ভাতা খাচ্ছেন একজন কাউন্সিলর এটা দেখে অবাক হচ্ছি। তার বাবা নেজাম উদ্দীনের নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শনিবার, ১৪ মে ২০২২ , ৩১ বৈশাখ ১৪২৮ ১২ শাওয়াল ১৪৪৩

মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন

প্রতিনিধি, বদলগাছী (নওগাঁ)

নওগাঁর পতœীতলায় নজিপুর পৌরসভার এক নারী কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মৃত. মাকে জীবিত দেখিয়ে গত ৯ মাস ধরে প্রতিবন্ধী ভাতা গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মজার বিষয় হলো উক্ত নারী কাউন্সিলরের মা প্রতিবন্ধী না হলেও তাকে প্রতিবন্ধী সাজিয়ে ভাতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও পরিবারের সকল সদস্য, আত্মীয়-স্বজনকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কোন না কোন সেবায় অন্তর্ভুক্ত, পৌরসভার বাহিরের মানুষকে পৌর সেবায় অন্তর্ভুক্তকরণ এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিল্ডিং প্লান পাস করিয়ে নেওয়ার জন্য সুপারিশসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত পৌর নির্বাচনে ২য় বারের মতো নজিপুর পৌরসভার ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হোন মোছা. ফারজানা খাতুন। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পর থেকেই তিনি নানারকম অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। নিজের সুস্থ মা মোছা. ফাতেমা বেগমকে প্রতিবন্ধী বানিয়ে তিনি ভাতায় অন্তর্ভুক্ত করেন (ওয়ার্ড নং-৭, সিরিয়াল নং-৩৬) এবং পিতা নেজাম উদ্দিনকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন (ওয়ার্ড নং-৭, সিরিয়াল নম্বর ৩২)। গত ৯ মাস আগে কাউন্সিলরের মা মারা গেলেও তিনি মৃত মায়ের নামে প্রতিবন্ধী ভাতা উত্তোলন অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, বাবা-বোনসহ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কোন না কোন সেবায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে জানা গেছে।

কাউন্সিলর ফারজানা খাতুন এর বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ পাওয়া গেছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সেবায় অন্তর্ভুক্ত করে দেয়ার নামে উপকারভোগীদের নিকট অর্থ গ্রহণ, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিল্ডিং প্লান পাস করে দেয়ার জন্য সুপারিশ করা, পৌরসভার বাহিরের মানুষকে পৌরসভার সেবায় অন্তর্ভুক্ত করা, অকৃষদের মাঝে ভর্তুকির সার ও বীজ বিতরণ করাসহ ইত্যাদি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হরিরামপুর কলেজ পাড়ার বাসিন্দা মানিক নামের এক ব্যক্তিকে কাউন্সিলর ফারজানা কৃষি ভর্তুকির কার্ড করে দিলেও উক্ত মানিকের কোন কৃষি জমি নেই। মানিক কাউন্সিলর ফারজানার বোন জামাই।

নজিপুর নতুনহাট মোড় এলাকার বাসিন্দা হাসান হাবিব সরকার বলেন, তার স্ত্রী নাসরিনের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেয়ার জন্য কাউন্সিলর ফারজানার নিকট গেলে তিনি টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারার কারণে তার স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড হয়নি।

এ বিষয়ে সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারজানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

নজিপুর পৌরসভার মেয়র রেজাউল কবির চৌধুরী জানান, কাউন্সিলর ফারজানা নিজের মৃত মায়ের নামে ভাতা খাচ্ছে বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এছাড়াও পৌর এলাকার বাইরে মানুষদের বিভিন্ন সেবায় অন্তর্ভুক্ত করাসহ সকল অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো. সুলতান আহমেদ বলেন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ফারজানা খাতুনের মা প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী ছিলেন এটা সত্য। তিনি কয়েক মাস আগে মারা গেছেন শুনেছি। আমরা বিষয়টি জানার পর পৌর মেয়রকে নতুন নাম প্রতিস্থাপন করতে বলেছি। নাম প্রতিস্থাপন না করায় গত জানুয়ারি হতে মার্চ পর্যন্ত ভাতার টাকা ওই অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। নিজের মৃত মায়ের নামে ভাতা খাচ্ছেন একজন কাউন্সিলর এটা দেখে অবাক হচ্ছি। তার বাবা নেজাম উদ্দীনের নামে বয়স্ক ভাতার কার্ড রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।