সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক এমডিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক তিন শীর্ষ কর্মকার্তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছেন কোম্পানিটির বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। আইপিও এবং ব্যাংক ঋণ থেকে পাওয়া এসব টাকা আত্মসাৎ করেছে সাবেক পর্ষদ সদস্যরা।

গত ১০ মে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন কোম্পানির বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। কোম্পানিটির সাবেক এমডি জাহিদুল হক (৬০), চেয়ারম্যান মো. আনিছ আহমেদ (৫৪) এবং পরিচালক সাইয়েদা সাইমা আকতারের (৫২) বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী ২০ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় নির্ধারণ করেছে আদালত।

২০১০ সালের ১২ এপ্রিল সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড কোম্পানি নাম পরিবর্তন করে রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অ্যান্ড ফার্মস থেকে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে আইপিওয়ের অনুমোদন লাভ করে পুঁজিবাজার থেকে ১৪ কোটি টাকা উত্তোলন করে। পাশাপাশি আইপিও ফান্ডের ব্যাংক সুদ হিসেবে টাকা ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ২৬ টাকা পায়।

মামলার এজহার অনুযায়ী, ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জুলাই ২০১৭ সাল পর্যন্ত আসামি সুহৃদের এমডি জাহিদুল হক, সুহৃদ চেয়ারম্যান মো. আনিছ আহমেদ, ডারেক্টর সাইয়েদা সাইমা আকতার, ডাইরেক্টর হিসেবে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বোর্ড দায়িত্বরত ছিলেন।

তাদের যৌথ স্বাক্ষরে কোম্পানির সব ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হতো। দায়িত্ব পালনকালে কোম্পানি ২০১৬-১৭ সালে বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত ৩০ জুন ২০১৭ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় পাবলিক অর্থ ১৪ কোট ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৬০৩ টাকার মিথ্যা একাউন্টিং হেড (সাসপেন্স একাউন্ট এবং ক্যাপিটাল ওয়ার্কিং প্রগ্রেস) তৈরি করে অর্থাৎ উক্ত অর্থ কোম্পানিতে বিনিয়োগ হনি, যা কোম্পানি থেকে আসামিরা আত্মসাৎ করেছেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড বরাবর কোম্পানির সাবেক ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আসামি জাহিদুল হক, মো. আনিছ আহমেদ এবং আসামি সাইয়েদা সাইমা আকতারের যোগসাজশে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমতি ছাড়া বন্ধকি ঋণ আবেদন করলে আর্থক প্রতিষ্ঠন এনআরবি ব্যাংক ১২ জুলাই ২০১৫ তারিখে কোম্পানির মালিকানাধীন ৩৩ শতাংশ জমি, নির্মিত বিল্ডিং ও সব মেশিনারিজ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে মূল্যায়ন করে গত ১৫ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে ১২ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুরপত্র প্রদান করে। আসামিরা ৩৩ শতাংশ সম্পত্তির দলিল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির নাম পরিবর্তন বা সংশোধন না করে এজিএম/ইজিএমের মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমিত না নিয়ে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সম্পত্তি জানা সত্ত্বেও অবৈধভাবে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সাব রেজিস্টার ২য় যুগ্ম গাজীপুর জেলায় মর্টগেজ দলিল নং ১০১৯০ তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখ রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করেন। বন্ধকি দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড হতে প্রায় ৯ কোটি টাকা উত্তোলন করে আসামিরা উক্ত অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আসামিদের পরস্পর যোগসাজশে এবং সহযোগিতায় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সম্পত্তি আত্মসাৎ করার সহযোগিতা এবং সম্পত্তি বন্ধকি ঋণ ও আইপিও করার পাবলিকের অর্থ প্রায় ১৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শুক্রবার, ২০ মে ২০২২ , ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৩

আইপিও এবং ব্যাংক ঋণের অর্থ আত্মসাৎ

সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক এমডিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক তিন শীর্ষ কর্মকার্তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা করেছেন কোম্পানিটির বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। আইপিও এবং ব্যাংক ঋণ থেকে পাওয়া এসব টাকা আত্মসাৎ করেছে সাবেক পর্ষদ সদস্যরা।

গত ১০ মে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন কোম্পানির বর্তমান চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। কোম্পানিটির সাবেক এমডি জাহিদুল হক (৬০), চেয়ারম্যান মো. আনিছ আহমেদ (৫৪) এবং পরিচালক সাইয়েদা সাইমা আকতারের (৫২) বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী ২০ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় নির্ধারণ করেছে আদালত।

২০১০ সালের ১২ এপ্রিল সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রাইভেট) লিমিটেড কোম্পানি নাম পরিবর্তন করে রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানি অ্যান্ড ফার্মস থেকে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে আইপিওয়ের অনুমোদন লাভ করে পুঁজিবাজার থেকে ১৪ কোটি টাকা উত্তোলন করে। পাশাপাশি আইপিও ফান্ডের ব্যাংক সুদ হিসেবে টাকা ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৫৭ হাজার ২৬ টাকা পায়।

মামলার এজহার অনুযায়ী, ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জুলাই ২০১৭ সাল পর্যন্ত আসামি সুহৃদের এমডি জাহিদুল হক, সুহৃদ চেয়ারম্যান মো. আনিছ আহমেদ, ডারেক্টর সাইয়েদা সাইমা আকতার, ডাইরেক্টর হিসেবে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ বোর্ড দায়িত্বরত ছিলেন।

তাদের যৌথ স্বাক্ষরে কোম্পানির সব ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হতো। দায়িত্ব পালনকালে কোম্পানি ২০১৬-১৭ সালে বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লিখিত ৩০ জুন ২০১৭ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় পাবলিক অর্থ ১৪ কোট ১৪ লাখ ১৩ হাজার ৬০৩ টাকার মিথ্যা একাউন্টিং হেড (সাসপেন্স একাউন্ট এবং ক্যাপিটাল ওয়ার্কিং প্রগ্রেস) তৈরি করে অর্থাৎ উক্ত অর্থ কোম্পানিতে বিনিয়োগ হনি, যা কোম্পানি থেকে আসামিরা আত্মসাৎ করেছেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড বরাবর কোম্পানির সাবেক ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আসামি জাহিদুল হক, মো. আনিছ আহমেদ এবং আসামি সাইয়েদা সাইমা আকতারের যোগসাজশে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমতি ছাড়া বন্ধকি ঋণ আবেদন করলে আর্থক প্রতিষ্ঠন এনআরবি ব্যাংক ১২ জুলাই ২০১৫ তারিখে কোম্পানির মালিকানাধীন ৩৩ শতাংশ জমি, নির্মিত বিল্ডিং ও সব মেশিনারিজ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে মূল্যায়ন করে গত ১৫ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে ১২ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুরপত্র প্রদান করে। আসামিরা ৩৩ শতাংশ সম্পত্তির দলিল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির নাম পরিবর্তন বা সংশোধন না করে এজিএম/ইজিএমের মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডারদের অনুমিত না নিয়ে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সম্পত্তি জানা সত্ত্বেও অবৈধভাবে গত ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ সাব রেজিস্টার ২য় যুগ্ম গাজীপুর জেলায় মর্টগেজ দলিল নং ১০১৯০ তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখ রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করেন। বন্ধকি দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড হতে প্রায় ৯ কোটি টাকা উত্তোলন করে আসামিরা উক্ত অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আসামিদের পরস্পর যোগসাজশে এবং সহযোগিতায় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সম্পত্তি আত্মসাৎ করার সহযোগিতা এবং সম্পত্তি বন্ধকি ঋণ ও আইপিও করার পাবলিকের অর্থ প্রায় ১৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।