নিত্যপণ্যের বাজার বিশ্লেষণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বিদেশ থেকে ফল আমদানি আপাতত নিয়ন্ত্রণ করা যায় কি-না সেটিও বিবেচনায় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

নিত্যপণ্যের দাম কেন বেড়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে কী করতে হবে, কীভাবে দাম কমানো যাবে-এসব বিষয় নিয়ে পুরোপুরি একটা ‘সামারি’ করে বাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, ‘এ সময় কী করণীয় সেটার বিষয় নিয়েও কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ে ‘ডিটেইল’ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রিকে কতগুলো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত এবং কম্প্রিহেনসিভ ব্যবস্থা নিয়ে সবার কাছে তুলে ধরার জন্য। বিশেষ করে এই যে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে বা সাপ্লাই কমে যাচ্ছে, এই জিনিসগুলো কীভাবে হ্যান্ডেল করতে পারব; কোন জায়গায় রেস্ট্রিকশন দিলে ভালো হবে বা ওপেন করলে ভালো হবে। এগুলো দু-তিন দিনের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে জানাতে হবে।’

ডলারের দাম বাড়ার বিষয়ে কী করা যায়, সেটা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ?‘দ্রব্যের দামের সার্বিক বিষয় নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে একটা পরিকল্পনা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে হবে।

বছরে বিদেশ থেকে ৮ বা ৯ হাজার কোটি টাকার ফল আমদানি করা হয় জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘৯ হাজার কোটি টাকা ইজ মোর দেন ওয়ান বিলিয়ন ডলার। এখন ট্যাক্স যদি সাময়িকভাবে বাড়ানো হয় বা অন্য যে ফ্যান্সি আইটেমগুলো আছে সেগুলোতে ট্যাক্স বাড়ান, এ বিষয়গুলো আলোচনা করে ২-৩ দিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমাদের কী করণীয়, যেমন মনে করেন আপনি একটি সাজেশন দিলেন- ফল আনার ক্ষেত্রে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেন, যাতে ফল বেশি না আসে। এখন বৈশাখ মাস। এখন তো আমাদের আম, জাম কাঁঠাল পর্যাপ্ত থাকবে। এরকম একটি সাজেশন আপনি দিলেন। এটা বিবেচনা করে লজিক্যাল কি-না, সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সর্ম্পকে ইতিবাচকভাবে সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সারা পৃথিবীই কিন্তু ভুগছে। কালই দেখলাম নাইন পারসেন্ট মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে গ্রেট ব্রিটেনে। আমেরিকাতে এইট পারসেন্টের বেশি। আমরা তো ওয়ার্ল্ডের বাইরে নই, আমরা তো ওয়ার্ল্ডের অংশ। সেক্ষেত্রে আমাদেরও হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও রেশনাল বিহেভ করতে হবে। সেজন্য আমরা মিডিয়াকে অনুরোধ করব, একটু পজিটিভওয়েতে প্রচার করার জন্য। আমরা সবাই যেন একটু সাশ্রয়ী থাকি বা রেশনাল থাকি।’

এছাড়া বাংলাদেশের ভ্যাকসিন কার্যক্রমের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রশংসা করেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী বছর স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৯৪০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

শুক্রবার, ২০ মে ২০২২ , ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৩

নিত্যপণ্যের বাজার বিশ্লেষণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে বৈঠকে বসতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া বিদেশ থেকে ফল আমদানি আপাতত নিয়ন্ত্রণ করা যায় কি-না সেটিও বিবেচনায় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নির্দেশ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

নিত্যপণ্যের দাম কেন বেড়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে কী করতে হবে, কীভাবে দাম কমানো যাবে-এসব বিষয় নিয়ে পুরোপুরি একটা ‘সামারি’ করে বাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, ‘এ সময় কী করণীয় সেটার বিষয় নিয়েও কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’

বৈঠকে দ্রব্যমূল্য নিয়ে ‘ডিটেইল’ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রিকে কতগুলো নির্দেশনা দেয়া হয়েছে পর্যাপ্ত এবং কম্প্রিহেনসিভ ব্যবস্থা নিয়ে সবার কাছে তুলে ধরার জন্য। বিশেষ করে এই যে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে বা সাপ্লাই কমে যাচ্ছে, এই জিনিসগুলো কীভাবে হ্যান্ডেল করতে পারব; কোন জায়গায় রেস্ট্রিকশন দিলে ভালো হবে বা ওপেন করলে ভালো হবে। এগুলো দু-তিন দিনের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে জানাতে হবে।’

ডলারের দাম বাড়ার বিষয়ে কী করা যায়, সেটা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ?‘দ্রব্যের দামের সার্বিক বিষয় নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে একটা পরিকল্পনা করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে হবে।

বছরে বিদেশ থেকে ৮ বা ৯ হাজার কোটি টাকার ফল আমদানি করা হয় জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘৯ হাজার কোটি টাকা ইজ মোর দেন ওয়ান বিলিয়ন ডলার। এখন ট্যাক্স যদি সাময়িকভাবে বাড়ানো হয় বা অন্য যে ফ্যান্সি আইটেমগুলো আছে সেগুলোতে ট্যাক্স বাড়ান, এ বিষয়গুলো আলোচনা করে ২-৩ দিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমাদের কী করণীয়, যেমন মনে করেন আপনি একটি সাজেশন দিলেন- ফল আনার ক্ষেত্রে ট্যাক্স বাড়িয়ে দেন, যাতে ফল বেশি না আসে। এখন বৈশাখ মাস। এখন তো আমাদের আম, জাম কাঁঠাল পর্যাপ্ত থাকবে। এরকম একটি সাজেশন আপনি দিলেন। এটা বিবেচনা করে লজিক্যাল কি-না, সেটা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সর্ম্পকে ইতিবাচকভাবে সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সারা পৃথিবীই কিন্তু ভুগছে। কালই দেখলাম নাইন পারসেন্ট মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে গ্রেট ব্রিটেনে। আমেরিকাতে এইট পারসেন্টের বেশি। আমরা তো ওয়ার্ল্ডের বাইরে নই, আমরা তো ওয়ার্ল্ডের অংশ। সেক্ষেত্রে আমাদেরও হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও রেশনাল বিহেভ করতে হবে। সেজন্য আমরা মিডিয়াকে অনুরোধ করব, একটু পজিটিভওয়েতে প্রচার করার জন্য। আমরা সবাই যেন একটু সাশ্রয়ী থাকি বা রেশনাল থাকি।’

এছাড়া বাংলাদেশের ভ্যাকসিন কার্যক্রমের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রশংসা করেছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগামী বছর স্বাস্থ্য খাতে ব্যয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৯৪০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।