ড্র টেস্টেও অনেক অর্জন টাইগারদের

চতুর্থ দিনের শেষেই ধারণা করা গিয়েছিল যে, অতি নাটকীয় কোন কিছু না ঘটলে এই টেস্ট ড্র হতে চলেছে। শেষ পর্যন্ত ড্র’ই বাংলাদেশ-শ্রীলংকা দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট। তবে ড্র হওয়া এই টেস্টে বাংলাদেশের রয়েছে অনেক অর্জন। আবার রানখরা কাটিয়ে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। হাফ সেঞ্চুরি এসেছে জয়-লিটনের ব্যাট থেকে। স্পিনার নাঈম হাসান এক ইনিংসে ছয় উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে হয়েছেন ম্যাচের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’। অন্যদিকে সফরকারী শ্রীলঙ্কান দলের সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস দ্বিতীয়বারের মত এক রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও জিতেছেন ম্যাচসেরা ক্রিকেটারের প্রাইজমানি।

গত বুধবার ম্যাচের চতুর্থ দিনে ৬৮ রানে পিছিয়ে থেকে শ্রীলঙ্কানরা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামার পর পঞ্চম ও শেষ দিনে ৯১ দশমিক ১ ওভারে ৬ উইকেটে ২৬০ রান করতেই দ্ইু দল ড্র মেনে নেয়। প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকা ৩৯৭ ও বাংলাদেশ ৪৬৫ রান করেছিল। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ১৩১তম ম্যাচে ১৮তম ড্রর স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। আর শ্রীলংকার সঙ্গে পঞ্চম ড্র এটি।

এই ড্রয়ে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা উভয়ে চার পয়েন্ট করে পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে ৭ ম্যাচে ১ জয়, ৫ পরাজয় ও ১ ড্রয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে বাংলাদেশ। আর ৫ ম্যাচে ২টি করে জয় ও পরাজয় একটি ১টি ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে শ্রীলংকা।

ম্যাচের চতুর্থ দিনে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে নাইটওয়াচম্যান লাসিথ এম্বুলদেনিয়া ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই ওই দিনের খেলা শেষ হওয়াতে নতুন ব্যাটার কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুনারত্নে।

দ্বিতীয় ইনিংসের ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তাইজুলকে চার মেরে শ্রীলঙ্কাকে লিড এনে দেন কুশল। এরপর ২৫তম ওভারে প্রথম ইনিংসের সফল বোলার নাঈম হাসানের বলে ১টি করে ছক্কা ও বাউন্ডারী হাঁকান কুশল।

নিজের ইনিংসের শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে থাকা কুশল হাফ-সেঞ্চুরির দিকেই ছুটছিলেন তিনি। তবে তাইজুলে গুড লেন্থের বল টার্ন করলে, কুশলের অফ-স্টাম্প ভেঙ্গে যায়। ফেরার আগে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৩ বলে ৪৮ রান করেন কুশল। অধিনায়কের সঙ্গে ৮৮ বলে ৬৭ রান যোগ করেন তিনি

প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস প্রথম ১৫টি বল মোকাবেলা করলেও তাইজুলকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরার সময়ে তার নামের পাশে কোন স্কোর লেখা হয়নি।

তাইজুলের জোড়া আঘাতে কুশল ও অ্যাঞ্জেলোকে হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার সময়ে লঙ্কানদের রান ছিল, ৪ উইকেটে ১২৮।

বিরতির পর ফিরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন করুনারত্নে। এজন্য ১৩২ খেলেন তিনি। ইনিংসের ৪৮তম ও তাইজুলের ১৭তম ওভারের প্রথম বলে উইকেট ছেড়ে মারতে গিয়ে মিড-উইকেটে বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুল হকের তালুবন্দি হলে থেমে যায় শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুনারত্নের (৫২) ইনিংস।

পরের ওভারেই ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের সুযোগটা হাতছাড়া হয় তাইজুলের। ওই ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিটি লেগ সাইডে খেলেছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। মিড উইকেটে উড়ে যাওয়া বলটা তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন মুশফিক। তখন ২২ রানে ছিলেন ধনাঞ্জয়া।

শেষ পর্যন্ত সেই মুশফিকের হাতেই শেষ হয় ধনাঞ্জয়ার ইনিংস। সাকিব আল হাসানের করা ২১তম ওভারের শর্ট ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটেই মুশফিককে ক্যাচ দেন ধনঞ্জয়া (৩৩)। ক্রিজে নতুন ব্যাটার নিরোশান ডিকওয়েলা সাকিবের বলে জীবন পেয়ে চান্ডিমালকে পৌছে যা ২০০ রানে। এসময় লঙ্কানদের লিডও হয়ে যায় ১৩২ রান।

কিছুক্ষনের মধ্যেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৯তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ডিকওয়েলা। ৯০তম ওভার পর্যন্ত চান্ডিমাল ও ডিকওয়েলার জুটি ভাঙ্গতে না পারার কারণে, ৯১ তম ওভারের প্রথম বলের পর ম্যাচটি ড্র মেনে নেয় দু’দল। সেসময় শ্রীলংকার সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ২৬০ রান। ডিকওয়েলা ৬১ ও চান্ডিমাল ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।

আগামী ২৩ জুন মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।

শুক্রবার, ২০ মে ২০২২ , ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৩

ড্র টেস্টেও অনেক অর্জন টাইগারদের

ক্রীড়া বার্তা পরিবেশক

image

খেলা শেষে চান্ডিমাল ও ডিকভেলার সঙ্গে তাইজুলের শুভেচ্ছা বিনিময় -সংগৃহীত

চতুর্থ দিনের শেষেই ধারণা করা গিয়েছিল যে, অতি নাটকীয় কোন কিছু না ঘটলে এই টেস্ট ড্র হতে চলেছে। শেষ পর্যন্ত ড্র’ই বাংলাদেশ-শ্রীলংকা দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট। তবে ড্র হওয়া এই টেস্টে বাংলাদেশের রয়েছে অনেক অর্জন। আবার রানখরা কাটিয়ে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। হাফ সেঞ্চুরি এসেছে জয়-লিটনের ব্যাট থেকে। স্পিনার নাঈম হাসান এক ইনিংসে ছয় উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে হয়েছেন ম্যাচের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’। অন্যদিকে সফরকারী শ্রীলঙ্কান দলের সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস দ্বিতীয়বারের মত এক রানের জন্য ডাবল সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও জিতেছেন ম্যাচসেরা ক্রিকেটারের প্রাইজমানি।

গত বুধবার ম্যাচের চতুর্থ দিনে ৬৮ রানে পিছিয়ে থেকে শ্রীলঙ্কানরা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামার পর পঞ্চম ও শেষ দিনে ৯১ দশমিক ১ ওভারে ৬ উইকেটে ২৬০ রান করতেই দ্ইু দল ড্র মেনে নেয়। প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকা ৩৯৭ ও বাংলাদেশ ৪৬৫ রান করেছিল। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ১৩১তম ম্যাচে ১৮তম ড্রর স্বাদ পেলো বাংলাদেশ। আর শ্রীলংকার সঙ্গে পঞ্চম ড্র এটি।

এই ড্রয়ে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা উভয়ে চার পয়েন্ট করে পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপে ৭ ম্যাচে ১ জয়, ৫ পরাজয় ও ১ ড্রয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে বাংলাদেশ। আর ৫ ম্যাচে ২টি করে জয় ও পরাজয় একটি ১টি ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চম স্থানে শ্রীলংকা।

ম্যাচের চতুর্থ দিনে ১৮তম ওভারের প্রথম বলে নাইটওয়াচম্যান লাসিথ এম্বুলদেনিয়া ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই ওই দিনের খেলা শেষ হওয়াতে নতুন ব্যাটার কুশল মেন্ডিসকে নিয়ে পঞ্চম ও শেষ দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুনারত্নে।

দ্বিতীয় ইনিংসের ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তাইজুলকে চার মেরে শ্রীলঙ্কাকে লিড এনে দেন কুশল। এরপর ২৫তম ওভারে প্রথম ইনিংসের সফল বোলার নাঈম হাসানের বলে ১টি করে ছক্কা ও বাউন্ডারী হাঁকান কুশল।

নিজের ইনিংসের শুরু থেকেই মারমুখী মেজাজে থাকা কুশল হাফ-সেঞ্চুরির দিকেই ছুটছিলেন তিনি। তবে তাইজুলে গুড লেন্থের বল টার্ন করলে, কুশলের অফ-স্টাম্প ভেঙ্গে যায়। ফেরার আগে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৩ বলে ৪৮ রান করেন কুশল। অধিনায়কের সঙ্গে ৮৮ বলে ৬৭ রান যোগ করেন তিনি

প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস প্রথম ১৫টি বল মোকাবেলা করলেও তাইজুলকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরার সময়ে তার নামের পাশে কোন স্কোর লেখা হয়নি।

তাইজুলের জোড়া আঘাতে কুশল ও অ্যাঞ্জেলোকে হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার সময়ে লঙ্কানদের রান ছিল, ৪ উইকেটে ১২৮।

বিরতির পর ফিরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন করুনারত্নে। এজন্য ১৩২ খেলেন তিনি। ইনিংসের ৪৮তম ও তাইজুলের ১৭তম ওভারের প্রথম বলে উইকেট ছেড়ে মারতে গিয়ে মিড-উইকেটে বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুল হকের তালুবন্দি হলে থেমে যায় শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুনারত্নের (৫২) ইনিংস।

পরের ওভারেই ইনিংসে পাঁচ উইকেট শিকারের সুযোগটা হাতছাড়া হয় তাইজুলের। ওই ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিটি লেগ সাইডে খেলেছিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। মিড উইকেটে উড়ে যাওয়া বলটা তালুবন্দি করতে ব্যর্থ হন মুশফিক। তখন ২২ রানে ছিলেন ধনাঞ্জয়া।

শেষ পর্যন্ত সেই মুশফিকের হাতেই শেষ হয় ধনাঞ্জয়ার ইনিংস। সাকিব আল হাসানের করা ২১তম ওভারের শর্ট ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটেই মুশফিককে ক্যাচ দেন ধনঞ্জয়া (৩৩)। ক্রিজে নতুন ব্যাটার নিরোশান ডিকওয়েলা সাকিবের বলে জীবন পেয়ে চান্ডিমালকে পৌছে যা ২০০ রানে। এসময় লঙ্কানদের লিডও হয়ে যায় ১৩২ রান।

কিছুক্ষনের মধ্যেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৯তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ডিকওয়েলা। ৯০তম ওভার পর্যন্ত চান্ডিমাল ও ডিকওয়েলার জুটি ভাঙ্গতে না পারার কারণে, ৯১ তম ওভারের প্রথম বলের পর ম্যাচটি ড্র মেনে নেয় দু’দল। সেসময় শ্রীলংকার সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ২৬০ রান। ডিকওয়েলা ৬১ ও চান্ডিমাল ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।

আগামী ২৩ জুন মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।