ইভটিজিং বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ চাই

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে বলে জানা গেছে। সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ, সূর্যতরুণ শিক্ষাঙ্গন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এসব প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক ছাত্রী সড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বখাটেদের উৎপাত ও ইভটিজিং থেকে রেহাই পেতে এ মানববন্ধন করে তারা। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ছাত্রীদের মানববন্ধন থেকে বোঝা যায়, দেশে এখনও ইভটিজিং চলছে। এটা সবসময় ছিল, কখনো লোকচক্ষুর আড়ালে, কখনো প্রকাশ্যে। এমন নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যে কখনো কোনো দিন ইভটিজিংয়ের শিকার হয়নি! স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নারীরা এর শিকার হন।

ইভটিজিং নারীজীবনে ভয়ানক অভিজ্ঞতা। নারীজীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নারীর অবাধ চলার স্বাধীনতায় বাধার সৃষ্টি করে, তার প্রাণচাঞ্চল্য কেড়ে নেয়। ইভটিজিংয়ের শিকার নারী শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হতে পারে। এমনকি অ্যাসিড সন্ত্রাস বা হত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে পারে।

ইভটিজিং অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছলে অনেকেই লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঘরবন্দী জীবনযাপন করে। অনেকে আবার বাল্যবিয়ের শিকার হয়। কেউ কেউ ইভটিজিংয়ের কারণে নিরূপায় হয়ে আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়। ২০০১ সালে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্রী সিমি। এভাবে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত অনেক নারীই আত্মহত্যা করেছে।

ইভটিজিংয়ের কুপ্রভাব শুধু ভুক্তভোগী নারীর ওপরই নয় বরং তা তার পুরো পরিবারের ওপরই পড়ে। অতীতে এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলা, মারধরের শিকার হয়ে আহত হয়েছেন অনেকে। এমনকি হত্যার শিকারও হয়েছেন ভুক্তভোগী কোন কোন পরিবারের স্বজনরা।

ইভটিজিং এখন মারাত্মক ‘সামাজিক ব্যাধি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাধি থেকে সমাজকে রেহাই দিতে প্রশাসনিক তৎপরতার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। রাজনৈতিকভাবে সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা ও আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ না হলে ইভটিজিং বন্ধ হবে না। ইভটিজাররা অপরাধ করেও বারবার পার পেয়ে যাওয়ার কারণে আবারও ইভটিজিংয়ে জড়িয়ে পড়ে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। টাঙ্গাইলের সখীপুরে রাস্তায় রাস্তায় বখাটেদের উৎপাত ও ইভটিজিংয়ের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। কোন অঘটন ঘটার আগেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

শুক্রবার, ২০ মে ২০২২ , ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৮ শাওয়াল ১৪৪৩

ইভটিজিং বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ চাই

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে বলে জানা গেছে। সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ, সূর্যতরুণ শিক্ষাঙ্গন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও সখীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এসব প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক ছাত্রী সড়কের দুইপাশে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বখাটেদের উৎপাত ও ইভটিজিং থেকে রেহাই পেতে এ মানববন্ধন করে তারা। এ নিয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

ছাত্রীদের মানববন্ধন থেকে বোঝা যায়, দেশে এখনও ইভটিজিং চলছে। এটা সবসময় ছিল, কখনো লোকচক্ষুর আড়ালে, কখনো প্রকাশ্যে। এমন নারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যে কখনো কোনো দিন ইভটিজিংয়ের শিকার হয়নি! স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নারীরা এর শিকার হন।

ইভটিজিং নারীজীবনে ভয়ানক অভিজ্ঞতা। নারীজীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। নারীর অবাধ চলার স্বাধীনতায় বাধার সৃষ্টি করে, তার প্রাণচাঞ্চল্য কেড়ে নেয়। ইভটিজিংয়ের শিকার নারী শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হতে পারে। এমনকি অ্যাসিড সন্ত্রাস বা হত্যার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। পাশাপাশি মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে পারে।

ইভটিজিং অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছলে অনেকেই লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঘরবন্দী জীবনযাপন করে। অনেকে আবার বাল্যবিয়ের শিকার হয়। কেউ কেউ ইভটিজিংয়ের কারণে নিরূপায় হয়ে আত্মহত্যার পথও বেছে নেয়। ২০০১ সালে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইনস্টিটিউটের ছাত্রী সিমি। এভাবে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে এ পর্যন্ত অনেক নারীই আত্মহত্যা করেছে।

ইভটিজিংয়ের কুপ্রভাব শুধু ভুক্তভোগী নারীর ওপরই নয় বরং তা তার পুরো পরিবারের ওপরই পড়ে। অতীতে এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলা, মারধরের শিকার হয়ে আহত হয়েছেন অনেকে। এমনকি হত্যার শিকারও হয়েছেন ভুক্তভোগী কোন কোন পরিবারের স্বজনরা।

ইভটিজিং এখন মারাত্মক ‘সামাজিক ব্যাধি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ব্যাধি থেকে সমাজকে রেহাই দিতে প্রশাসনিক তৎপরতার পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। রাজনৈতিকভাবে সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা ও আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ না হলে ইভটিজিং বন্ধ হবে না। ইভটিজাররা অপরাধ করেও বারবার পার পেয়ে যাওয়ার কারণে আবারও ইভটিজিংয়ে জড়িয়ে পড়ে। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। টাঙ্গাইলের সখীপুরে রাস্তায় রাস্তায় বখাটেদের উৎপাত ও ইভটিজিংয়ের যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। কোন অঘটন ঘটার আগেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।