ভোগ্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল না করার আহ্বান এফবিসিসিআই নেতার

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআই বাজার মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা আজাদ চৌধুরী।

গতকাল ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচা বাজার সমিতির কার্যালয়ে ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ে মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতারা এসব কথা বলেন।

সভায় ভোগ্যপণ্যের বৈশ্বিক বাজারের সংকটকে পুঁজি করে দেশীয় বাজারকে অস্থির না করার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করতে বাজার কমিটিকে বিশেষভাবে তদারকি করার নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মসলার সংকটের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। যদি কোন ব্যবসায়ী পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, এফবিসিসিআই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।’

কালোবাজারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কারসাজি করলে আমরা জরিমানা করব না, সরাসরি লাইসেন্স বাতিল ও দোকান বন্ধে করে দিব। যাতে তারা আর ব্যবসা করতে না পারে।’

ব্যবসায়ী নেতারা এ ধরনের কোন ব্যবসায়ীকে খুঁজে পেয়েছে কি না বা কোন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কোন সদুউত্তর দিতে পারেনি ব্যবসায়ী নেতারা।

ব্যবসায়ী নেতারা মনে করেন, বিশ্ববাজারের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে যেভাবে দাম বাড়ছে তা বাস্তবতার বাইরে নয়। বিভিন্ন সময়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে কারসাজির যে অভিযোগ উঠছে সেটা তদারকির জন্য বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কাছে ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের তালিকা চেয়েছে এফবিসিসিআই।

ভোক্তা পর্যায়ে জনসচেতনতা বাড়ার তাগিদ দেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবু মোতালেব। তিনি বলেন, ‘একটা পরিবারের যেখানে ৫ লিটার তেল দিয়ে সারা মাস চলে যায়, সেখানে তারা ২০ লিটার তেল কিনে রাখছে। এর ফলে, বাজারে কৃত্তিমভাবে উপরি চাহিদার সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে, একটা ক্রাইসিস তৈরি হচ্ছে।’

বাজারে স্থিতিশীলতা রাখতে প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি পণ্য না কিনতেও ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান আবু মোতালেব। সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদপুর টাউন হল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. লুৎফর রহমান (বাবুল) জানান, যেসব দোকানি পণ্য মজুদ ও সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে পণ্য বিক্রি করার চেষ্টা করেছে, সমিতি তাদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।

ইউক্রেণ-রাশিয়া যুদ্ধের পর থেকে খাদ্য ও ব্যবহার্য পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এ কারণে স্থানীয় বাজারে আটা, ময়দা, মাংস, ডিম, দুধ, টুথপেস্ট, তেল, চিনি, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মশলা থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। বাজারে এই দাম বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে প্রায়ই বিভিন্ন বাজারে সভা করছে এফবিসিসিআই।

রবিবার, ২৯ মে ২০২২ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪৩

ভোগ্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল না করার আহ্বান এফবিসিসিআই নেতার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রির আহ্বান জানিয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এফবিসিসিআই বাজার মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা আজাদ চৌধুরী।

গতকাল ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) উদ্যোগে মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচা বাজার সমিতির কার্যালয়ে ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুদ, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ে মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতারা এসব কথা বলেন।

সভায় ভোগ্যপণ্যের বৈশ্বিক বাজারের সংকটকে পুঁজি করে দেশীয় বাজারকে অস্থির না করার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করতে বাজার কমিটিকে বিশেষভাবে তদারকি করার নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মসলার সংকটের কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। যদি কোন ব্যবসায়ী পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে বাজারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে, এফবিসিসিআই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।’

কালোবাজারীদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কারসাজি করলে আমরা জরিমানা করব না, সরাসরি লাইসেন্স বাতিল ও দোকান বন্ধে করে দিব। যাতে তারা আর ব্যবসা করতে না পারে।’

ব্যবসায়ী নেতারা এ ধরনের কোন ব্যবসায়ীকে খুঁজে পেয়েছে কি না বা কোন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কোন সদুউত্তর দিতে পারেনি ব্যবসায়ী নেতারা।

ব্যবসায়ী নেতারা মনে করেন, বিশ্ববাজারের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে যেভাবে দাম বাড়ছে তা বাস্তবতার বাইরে নয়। বিভিন্ন সময়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে কারসাজির যে অভিযোগ উঠছে সেটা তদারকির জন্য বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কাছে ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটরদের তালিকা চেয়েছে এফবিসিসিআই।

ভোক্তা পর্যায়ে জনসচেতনতা বাড়ার তাগিদ দেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবু মোতালেব। তিনি বলেন, ‘একটা পরিবারের যেখানে ৫ লিটার তেল দিয়ে সারা মাস চলে যায়, সেখানে তারা ২০ লিটার তেল কিনে রাখছে। এর ফলে, বাজারে কৃত্তিমভাবে উপরি চাহিদার সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে, একটা ক্রাইসিস তৈরি হচ্ছে।’

বাজারে স্থিতিশীলতা রাখতে প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি পণ্য না কিনতেও ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান আবু মোতালেব। সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদপুর টাউন হল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. লুৎফর রহমান (বাবুল) জানান, যেসব দোকানি পণ্য মজুদ ও সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে পণ্য বিক্রি করার চেষ্টা করেছে, সমিতি তাদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। ভবিষ্যতেও ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।

ইউক্রেণ-রাশিয়া যুদ্ধের পর থেকে খাদ্য ও ব্যবহার্য পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এ কারণে স্থানীয় বাজারে আটা, ময়দা, মাংস, ডিম, দুধ, টুথপেস্ট, তেল, চিনি, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার, মশলা থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। বাজারে এই দাম বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে প্রায়ই বিভিন্ন বাজারে সভা করছে এফবিসিসিআই।