শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নতুন নৌ অ্যাম্বুলেন্সটিও নষ্টের পথে

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য গত ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি আধুনিক নৌ অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়েছিল। আজ সেটি নিজেই মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। অযন্তে অবহেলায় থাকতে থাকতে এখন সেটি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। বেশ কয়েকদিন যাবত একই অবস্থায় পরে আছে প্রায় ৬০ লাখ টাকার অ্যাম্বুলেন্সটি। শুধু এটিই নয় এর পুর্বে আর একটি ৩০ লাখ টাকার কাঠের অ্যাম্বুলেন্স এসেছিল সেটিও বিনষ্ট হয়ে গেছে। এখন সেটির অস্তিত্ব নেই। এতে করে সরকারের অর্থ বিনষ্ট হচ্ছে তদারকির কারণে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ স্থাপিত হয়ে ওঠেনি ।সেই চিন্তা থেকেই সরকার জনসাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হাওর বেষ্টিত শাল্লায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন সরকার । তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে জানানো হয় চালক না থাকায় ও ব্যয়বহুল হওয়ায় নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি হাওর ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ৬০ লাখ টাকা দামের এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি পানিতে ডুবে আছে। পানি আরও বৃদ্ধি পেলে এটি পানির নিচে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১০ জন শ্রমিক পাঠিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি পানি থেকে তোলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শ্রমিকরা পানি থেকে তুলতে ব্যর্থ হয়। পরে আর অ্যাম্বুলেন্সটি তোলার চেষ্টা করেনি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার (২৭ মে) সেটি হাওরের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। হাওরের পানিতে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি ডুবে যাওয়ার ছবি ইতোমধ্যে ফেসবুকে ব্যপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।

শাল্লা উপজেলা সদরের বাসিন্দা রণজিৎ কুমার দাস বললেন, প্রায় দুই বছর হয়েছে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলা হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি এখন পানিতে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অযতেœর কারণে কোটি টাকার এই নৌ অ্যাম্বুলেন্স এখন নষ্ট হওয়ার পথে এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে।

শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সেলিনা আক্তার অবশ্য জানিয়েছেন আজ (শনিবার) অ্যাম্বুলেন্সটি পানি থেকে উঠানো হবে। তিনি আরো বলেন আমি শাল্লায় নতুন যোগদান করেছি। যতটুকু জানতে পেরেছি নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরেই অকেজো হয়েই পড়ে আছে। এটির বর্তমান অবস্থা সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অবগত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি পানি থেকে তুলতে চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অনুরোধও করা হয়েছে।

শাল্লা উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি গত ৪-৫ দিন ধরেই পানিতে পড়ে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অ্যাম্বুলেন্সটি তোলার জন্য আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। পাঁচ দিন আগেই ১০ জন শ্রমিক পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তারা এটি পানি থেকে তুলতে পারেনি। আজকে (শনিবার) আবারও অ্যাম্বুলেন্সটি তোলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহমদ হোসেন বলেন, নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্বোধনের পর থেকেই বিকল হয়ে রয়েছে। এটি পানিতে ডুবে গেছে বলে জানা গেছে। নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্ধারের জন্য স্থানীয়ভাবে চেষ্টা চলছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন এটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

রবিবার, ২৯ মে ২০২২ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪৩

শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

কর্তৃপক্ষের অবহেলায় নতুন নৌ অ্যাম্বুলেন্সটিও নষ্টের পথে

প্রতিনিধি, শাল্লা (সুনামগঞ্জ)

image

শাল্লা (সুনামগঞ্জ) : পানিতে নিমজ্জিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নৌ অ্যাম্বুলেন্স -সংবাদ

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য গত ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিঃ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি আধুনিক নৌ অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়েছিল। আজ সেটি নিজেই মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। অযন্তে অবহেলায় থাকতে থাকতে এখন সেটি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। বেশ কয়েকদিন যাবত একই অবস্থায় পরে আছে প্রায় ৬০ লাখ টাকার অ্যাম্বুলেন্সটি। শুধু এটিই নয় এর পুর্বে আর একটি ৩০ লাখ টাকার কাঠের অ্যাম্বুলেন্স এসেছিল সেটিও বিনষ্ট হয়ে গেছে। এখন সেটির অস্তিত্ব নেই। এতে করে সরকারের অর্থ বিনষ্ট হচ্ছে তদারকির কারণে।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ স্থাপিত হয়ে ওঠেনি ।সেই চিন্তা থেকেই সরকার জনসাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হাওর বেষ্টিত শাল্লায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন সরকার । তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে জানানো হয় চালক না থাকায় ও ব্যয়বহুল হওয়ায় নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি হাওর ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রায় ৬০ লাখ টাকা দামের এই নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি পানিতে ডুবে আছে। পানি আরও বৃদ্ধি পেলে এটি পানির নিচে চলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ১০ জন শ্রমিক পাঠিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি পানি থেকে তোলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু শ্রমিকরা পানি থেকে তুলতে ব্যর্থ হয়। পরে আর অ্যাম্বুলেন্সটি তোলার চেষ্টা করেনি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার (২৭ মে) সেটি হাওরের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। হাওরের পানিতে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি ডুবে যাওয়ার ছবি ইতোমধ্যে ফেসবুকে ব্যপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।

শাল্লা উপজেলা সদরের বাসিন্দা রণজিৎ কুমার দাস বললেন, প্রায় দুই বছর হয়েছে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি উপজেলা হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি এখন পানিতে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অযতেœর কারণে কোটি টাকার এই নৌ অ্যাম্বুলেন্স এখন নষ্ট হওয়ার পথে এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে।

শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সেলিনা আক্তার অবশ্য জানিয়েছেন আজ (শনিবার) অ্যাম্বুলেন্সটি পানি থেকে উঠানো হবে। তিনি আরো বলেন আমি শাল্লায় নতুন যোগদান করেছি। যতটুকু জানতে পেরেছি নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘদিন ধরেই অকেজো হয়েই পড়ে আছে। এটির বর্তমান অবস্থা সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অবগত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অ্যাম্বুলেন্সটি পানি থেকে তুলতে চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অনুরোধও করা হয়েছে।

শাল্লা উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব বলেন, নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি গত ৪-৫ দিন ধরেই পানিতে পড়ে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অ্যাম্বুলেন্সটি তোলার জন্য আমাকে অনুরোধ করেছিলেন। পাঁচ দিন আগেই ১০ জন শ্রমিক পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তারা এটি পানি থেকে তুলতে পারেনি। আজকে (শনিবার) আবারও অ্যাম্বুলেন্সটি তোলার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।

সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আহমদ হোসেন বলেন, নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্বোধনের পর থেকেই বিকল হয়ে রয়েছে। এটি পানিতে ডুবে গেছে বলে জানা গেছে। নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি উদ্ধারের জন্য স্থানীয়ভাবে চেষ্টা চলছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন এটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।