সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের সুমন মিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন, ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট শীঘ্রই

৩ বছর ৮ মাস পর সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ডাকবাংলায় সুমন মিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। পারিবারিক বিরোধে তাকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে শীঘ্রই আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই পরিদর্শক জিএম কামরুজ্জামান সংবাদকে জানান, আলোচিত এই মামলার তদন্ত শেষ। একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যরা পলাতক রয়েছে। পিবিআই সদর দপ্তরের অনুমতি পেলেই চার্জশিট আদালতে পেশ করা হবে।

মামলার এজাহারে বাদী আবদুল আহাদ ওরফে লেচু মিয়া বলেছেন, তার সন্তান সুমন মিয়া (২১) ২০১৮ সালে ২৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জের বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ১০টার পরও সে বাড়ি না ফেয়ায় পরিবার থেকে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের ২৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় ডাকবাংলার কাছে তার লাশ পাওয়া যায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা বাদীর বসতঘর দখলের পাঁয়তারা করছে। ওই সময় তারা তার ছেলেকে নানাভাবে হত্যার হুমকিও দিয়েছে।

থানায় দায়েরকৃত মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করেন। তারা তদন্ত করে কোন ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি। অবশেষে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে দেয়া হয়। গত দেড় বছর ধরে পিবিআই তদন্ত করে। তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সামছুজ্জামান ওরফে শিমুল নামে এলাকার এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে, আরও ৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা এখনও পলাতক।

পলাতক আসামিরা হলোÑ শিব্বির আহমদ, জুবায়ের আহমদ, গোলাম সরোয়ার ওরফে নাসিম, গোলাম শাহরিয়ার ওরফে তানিম ও গোলাম রসুল ওরফে রিমন। তারা ফেঞ্চুগঞ্জের বাসিন্দা। পাশপাশি তাদের বাড়ি।

মামলার সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃতের মাথার তালুর নিচে একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। বাম চোখের কাছে ও ডান চোখের নিচে ধারালো অস্ত্রের আঘাত, ঠোঁট ফুলা ও গলায় রশি পেঁচানো ছিল।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি সামছুজ্জামান ওরফে শিমুল আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, নিহত সুমন মিয়া তার চাচাত ভাইয়ের ছেলে। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে রিমন বাঁশ দিয়ে সুমনের মাথায় বাড়ি মারে, নাসির ও তানিম সুমনের হাত ধরে রশি বাঁধে, জুবায়ের তার গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দেয়। শিব্বির সব কিছুর নেতৃত্ব ও নির্দেশনা দেয়।

নাসিম, তানিম, রিমন, জুবায়ের ও শিব্বির মিলে সুমনকে বেঁধে ঘরের ভেতর মারধর করে। তাদের বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধের জেরেই তারা এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তার মতে, মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে সোর্সকে কাজে লাগানো হয়েছে। আসামিদের কললিস্ট সংগ্রহ করে নানাভাবে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য পিবিআইয়ের টিম কাজ করছেন।

তদন্তকারী জিএম কামরুজ্জামান জানান, মামলার ডকেট পর্যালোচনা, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র, ঘটনাস্থলের ছবি, আলামত, স্থানীয় সিসি ক্যামরায় ধারণকৃত ফুটেজসহ সব তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে মামলাটি প্রকাশ্যে ও গোপনভাবে তদন্ত করে হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটন ও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে। থানা পুলিশ ছাড়াও পিবিআই প্রায় দেড় বছর ধরে মামলাটি তদন্ত করেছে। এরপর প্রতিবেদন চূড়ান্ত করছেন।

আরও খবর
দেশে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গ করেন ১৬১ বাংলাদেশি
সব নির্বাচনকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছে ইসি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি
শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় শেষ বিদায় একুশের গানের কবিকে
পদ্মা সেতু, দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর বিশ্বব্যাংক দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চাপ দেয় : দাবি মসিউরের
বিশ্বের ৪০ শতাংশ দুগ্ধ উৎপাদন হয় এশিয়ায়
বর্ষার আগে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে, ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি
সরকার ছাত্রদের ধ্বংস করছে ফখরুল
কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ৩৬০ কোটি টাকার প্রকল্প, কাজ শেষ পর্যায়ে
খোমেনি স্টাইলে বিপ্লব করার স্বপ্ন দেখছে বিএনপি : কাদের
ক্ষমতার পরিবর্তন ২০২৩ সালের আগেই : নূর

রবিবার, ২৯ মে ২০২২ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪৩

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের সুমন মিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন, ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট শীঘ্রই

বাকী বিল্লাহ

৩ বছর ৮ মাস পর সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ডাকবাংলায় সুমন মিয়া হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে। পারিবারিক বিরোধে তাকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জনকে অভিযুক্ত করে শীঘ্রই আদালতে চার্জশিট দেয়া হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই পরিদর্শক জিএম কামরুজ্জামান সংবাদকে জানান, আলোচিত এই মামলার তদন্ত শেষ। একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যরা পলাতক রয়েছে। পিবিআই সদর দপ্তরের অনুমতি পেলেই চার্জশিট আদালতে পেশ করা হবে।

মামলার এজাহারে বাদী আবদুল আহাদ ওরফে লেচু মিয়া বলেছেন, তার সন্তান সুমন মিয়া (২১) ২০১৮ সালে ২৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফেঞ্চুগঞ্জের বাড়ি থেকে বের হয়। রাত ১০টার পরও সে বাড়ি না ফেয়ায় পরিবার থেকে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ২০১৮ সালের ২৫ আগস্ট দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় ডাকবাংলার কাছে তার লাশ পাওয়া যায়।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন অভিযুক্তরা বাদীর বসতঘর দখলের পাঁয়তারা করছে। ওই সময় তারা তার ছেলেকে নানাভাবে হত্যার হুমকিও দিয়েছে।

থানায় দায়েরকৃত মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ তদন্ত করেন। তারা তদন্ত করে কোন ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি। অবশেষে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে দেয়া হয়। গত দেড় বছর ধরে পিবিআই তদন্ত করে। তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সামছুজ্জামান ওরফে শিমুল নামে এলাকার এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে, আরও ৫ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা এখনও পলাতক।

পলাতক আসামিরা হলোÑ শিব্বির আহমদ, জুবায়ের আহমদ, গোলাম সরোয়ার ওরফে নাসিম, গোলাম শাহরিয়ার ওরফে তানিম ও গোলাম রসুল ওরফে রিমন। তারা ফেঞ্চুগঞ্জের বাসিন্দা। পাশপাশি তাদের বাড়ি।

মামলার সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মৃতের মাথার তালুর নিচে একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন আছে। বাম চোখের কাছে ও ডান চোখের নিচে ধারালো অস্ত্রের আঘাত, ঠোঁট ফুলা ও গলায় রশি পেঁচানো ছিল।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি সামছুজ্জামান ওরফে শিমুল আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, নিহত সুমন মিয়া তার চাচাত ভাইয়ের ছেলে। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে রিমন বাঁশ দিয়ে সুমনের মাথায় বাড়ি মারে, নাসির ও তানিম সুমনের হাত ধরে রশি বাঁধে, জুবায়ের তার গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দেয়। শিব্বির সব কিছুর নেতৃত্ব ও নির্দেশনা দেয়।

নাসিম, তানিম, রিমন, জুবায়ের ও শিব্বির মিলে সুমনকে বেঁধে ঘরের ভেতর মারধর করে। তাদের বাড়ির জমি নিয়ে বিরোধের জেরেই তারা এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তার মতে, মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে সোর্সকে কাজে লাগানো হয়েছে। আসামিদের কললিস্ট সংগ্রহ করে নানাভাবে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য পিবিআইয়ের টিম কাজ করছেন।

তদন্তকারী জিএম কামরুজ্জামান জানান, মামলার ডকেট পর্যালোচনা, ঘটনাস্থল পরিদর্শন, ঘটনাস্থলের খসড়া মানচিত্র, ঘটনাস্থলের ছবি, আলামত, স্থানীয় সিসি ক্যামরায় ধারণকৃত ফুটেজসহ সব তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে মামলাটি প্রকাশ্যে ও গোপনভাবে তদন্ত করে হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটন ও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে চার্জশিট তৈরি করা হয়েছে। থানা পুলিশ ছাড়াও পিবিআই প্রায় দেড় বছর ধরে মামলাটি তদন্ত করেছে। এরপর প্রতিবেদন চূড়ান্ত করছেন।