বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়কে কৃষিপণ্য পরিবহন আটকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় হাট-বাজারের খাজনার রশিদ বই ব্যবহার করে সড়কের মোড়ে মোড়ে চলছে চাঁদাবাজি। ধানবোঝাই প্রতিটি পরিবহন থেকে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত খাজনার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে গত শুক্রবার সংবাদ-এ বিন্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী পরিবহনে ঘাটে ঘাটে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় প্রায়ই। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীমুখী পরিবহনেই শুধু চাঁদাবাজি হয়। বাস্তবতা হচ্ছে, সারাদেশের পথে পথে সারা বছরই চাঁদাবাজি চলে। পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি স্থায়ী রূপ ধারণ করেছে। অভিযোগ আছে, পুলিশ ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গুপ্ত ও প্রকাশ্যে এ চাঁদাবাজি চলে।
চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে জিম্মি হয়ে পড়েছে বগুড়ার শেরপুরের সাধারণ কৃষকসহ ব্যবসায়ীরা। কৃষকরা জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনিতেই তারা বোরো ধান চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এমন অবস্থায় সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজদের খড়গ তাদের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও তারা নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জেনেও না জানার ভান করছে।
সড়কে চাঁদাবাজির বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের বিভিন্ন সভায় আলোচনা হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায়ই চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। বিভিন্ন সময়ে তারা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা তথা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে আসছেন। এরপরেও পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি থামছে না। বরং এটা আরও বিস্তৃত রূপ ধারণ করেছে, বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। সহসাই এর থেকে মুক্তির কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
চাঁদাবাজির প্রত্যক্ষ শিকার ব্যবসায়ীরা হলেও, চূড়ান্ত মাশুল গুনতে হয় সাধারণ ভোক্তাদেরই। কারণ, চাঁদাবাজির শিকার ব্যবসায়ীরা বাড়তি ব্যয় উঠিয়ে নিতে পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হন। ব্যবসায়ীরাও প্রায়ই বলে আসছেন, পণ্যের দাম বেশি হওয়ার একটা কারণ পণ্য পরিবহনের পথে পথে চাঁদাবাজি। বাজার বিশেষজ্ঞরাও মনে করেন, পণ্য সরবরাহে কোন ঘাটতি না থাকলে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ার অন্যতম কারণ চাঁদাবাজি।
দেশের সড়ক-মহাসড়ক থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকার রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় দেশজুড়ে যারা চাঁদাবাজি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। চাঁদাবাজি বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। বগুড়ার শেরপুরে বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেটাই আমরা দেখতে চাই।
রবিবার, ২৯ মে ২০২২ , ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ২৭ শাওয়াল ১৪৪৩
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়কে কৃষিপণ্য পরিবহন আটকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় হাট-বাজারের খাজনার রশিদ বই ব্যবহার করে সড়কের মোড়ে মোড়ে চলছে চাঁদাবাজি। ধানবোঝাই প্রতিটি পরিবহন থেকে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত খাজনার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে গত শুক্রবার সংবাদ-এ বিন্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী পরিবহনে ঘাটে ঘাটে চাঁদা নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় প্রায়ই। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। সাধারণভাবে ধারণা করা হয়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রাজধানীমুখী পরিবহনেই শুধু চাঁদাবাজি হয়। বাস্তবতা হচ্ছে, সারাদেশের পথে পথে সারা বছরই চাঁদাবাজি চলে। পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি স্থায়ী রূপ ধারণ করেছে। অভিযোগ আছে, পুলিশ ও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গুপ্ত ও প্রকাশ্যে এ চাঁদাবাজি চলে।
চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে জিম্মি হয়ে পড়েছে বগুড়ার শেরপুরের সাধারণ কৃষকসহ ব্যবসায়ীরা। কৃষকরা জানিয়েছেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এমনিতেই তারা বোরো ধান চাষ করে লোকসানের মুখে পড়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এমন অবস্থায় সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজদের খড়গ তাদের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও তারা নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জেনেও না জানার ভান করছে।
সড়কে চাঁদাবাজির বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের বিভিন্ন সভায় আলোচনা হয়েছে। ব্যবসায়ী নেতারা সরকারদলীয় নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রায়ই চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন। বিভিন্ন সময়ে তারা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা তথা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে আসছেন। এরপরেও পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি থামছে না। বরং এটা আরও বিস্তৃত রূপ ধারণ করেছে, বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। সহসাই এর থেকে মুক্তির কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
চাঁদাবাজির প্রত্যক্ষ শিকার ব্যবসায়ীরা হলেও, চূড়ান্ত মাশুল গুনতে হয় সাধারণ ভোক্তাদেরই। কারণ, চাঁদাবাজির শিকার ব্যবসায়ীরা বাড়তি ব্যয় উঠিয়ে নিতে পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হন। ব্যবসায়ীরাও প্রায়ই বলে আসছেন, পণ্যের দাম বেশি হওয়ার একটা কারণ পণ্য পরিবহনের পথে পথে চাঁদাবাজি। বাজার বিশেষজ্ঞরাও মনে করেন, পণ্য সরবরাহে কোন ঘাটতি না থাকলে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়ার অন্যতম কারণ চাঁদাবাজি।
দেশের সড়ক-মহাসড়ক থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত এলাকার রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় দেশজুড়ে যারা চাঁদাবাজি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। চাঁদাবাজি বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। বগুড়ার শেরপুরে বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেটাই আমরা দেখতে চাই।