গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে জেল থেকে ‘চিঠির মাধ্যমে নির্দেশনা’ দিতেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
অনেকবার গ্রেপ্তার হতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চিঠির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের নিদের্শনা দিয়েছি। দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি। জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাব, দল কীভাবে চালাবে, সেসব লিখে রেখেছিলাম। ’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা তাকে ‘কোনদিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত’ করতে শেখায়নি বলেও উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের ১১ জুন সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিনটিকে স্মরণ করে গতকাল বেলা পৌনে ১২টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুভেচ্ছা বিনিময়কলে আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে সব সময় উজানে নাও ঠেলে চলতে হয়েছে। দেশে ফেরার পর ’৮৩ সালে অ্যারেস্ট করা হয়। ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নানা সময়েই গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। তবে কারও কাছে কোনদিন মাথা নত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার থেকে, বাবার কাছ থেকে এটা শিখছি যে, কারও কাছে বা কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’ তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবাক হয় যে, ১৫ দিনে আমার মুক্তির জন্য ২৫ লাখ সাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। এটাই আওয়ামী লীগ। জনগণই হলো আমাদের শক্তি। বিএনপির ক্ষেত্রে জন্মই হলো আজন্ম পাপ। জনগণ বিএনপির শক্তি না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাব, দল কীভাবে চালাবে, সেসব লিখে রেখেছিলাম। কীভাবে উন্নয়ন করব সেসব পরিকল্পনা লিখে রাখি। আজ প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা বাজেট দিয়েছি। উন্নত দেশে জিডিপি মাইনাসে। আমরা ৫ ভাগের ওপরে রেখেছি। কিছু মানুষ অর্জনকে অর্জন হিসেবে নিতে পারে না। কেন তাদের এই দৈনতা? বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি। বিনা পয়সায় যাদের ভ্যাকসিন দিয়ে তরতাজা করেছি, তারাই এখন সমালোচনা করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনমানুষের কল্যাণ আমরা বুঝি। আন্তর্জাতিকভাবে এত বাধা তবুও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করেছি। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। এ স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারে না। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে যাব যে যাই বলুক। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত যেন সুফল পায় সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা করেছি।’
দিবসটি উপলক্ষে গণভবনে একে একে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), তাঁতীলীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগের নেতারা এবং গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ‘শেখ হাসিনার কারামুক্ত দিবস’কে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ আখ্যা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আজ গণতন্ত্রের বিজয় দিবস। এ দিন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাঙালি ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে।’
রবিবার, ১২ জুন ২০২২ , ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১১ জিলকদ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নেতাকর্মীদের সংগঠিত করতে জেল থেকে ‘চিঠির মাধ্যমে নির্দেশনা’ দিতেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
অনেকবার গ্রেপ্তার হতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চিঠির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের নিদের্শনা দিয়েছি। দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি। জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাব, দল কীভাবে চালাবে, সেসব লিখে রেখেছিলাম। ’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষা তাকে ‘কোনদিন অন্যায়ের কাছে মাথা নত’ করতে শেখায়নি বলেও উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের ১১ জুন সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দিনটিকে স্মরণ করে গতকাল বেলা পৌনে ১২টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুভেচ্ছা বিনিময়কলে আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে সব সময় উজানে নাও ঠেলে চলতে হয়েছে। দেশে ফেরার পর ’৮৩ সালে অ্যারেস্ট করা হয়। ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর নানা সময়েই গ্রেপ্তার হতে হয়েছে। তবে কারও কাছে কোনদিন মাথা নত করিনি, জীবন ভিক্ষা চাইনি। আমি পরিবার থেকে, বাবার কাছ থেকে এটা শিখছি যে, কারও কাছে বা কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করব না।’ তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবাক হয় যে, ১৫ দিনে আমার মুক্তির জন্য ২৫ লাখ সাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। এটাই আওয়ামী লীগ। জনগণই হলো আমাদের শক্তি। বিএনপির ক্ষেত্রে জন্মই হলো আজন্ম পাপ। জনগণ বিএনপির শক্তি না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাব, দল কীভাবে চালাবে, সেসব লিখে রেখেছিলাম। কীভাবে উন্নয়ন করব সেসব পরিকল্পনা লিখে রাখি। আজ প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা বাজেট দিয়েছি। উন্নত দেশে জিডিপি মাইনাসে। আমরা ৫ ভাগের ওপরে রেখেছি। কিছু মানুষ অর্জনকে অর্জন হিসেবে নিতে পারে না। কেন তাদের এই দৈনতা? বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি। বিনা পয়সায় যাদের ভ্যাকসিন দিয়ে তরতাজা করেছি, তারাই এখন সমালোচনা করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনমানুষের কল্যাণ আমরা বুঝি। আন্তর্জাতিকভাবে এত বাধা তবুও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করেছি। জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন। এ স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারে না। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করে যাব যে যাই বলুক। আমরা আমাদের কাজ করে যাব। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পর্যন্ত যেন সুফল পায় সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ১০০ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা করেছি।’
দিবসটি উপলক্ষে গণভবনে একে একে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ), তাঁতীলীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগের নেতারা এবং গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে ‘শেখ হাসিনার কারামুক্ত দিবস’কে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ আখ্যা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আজ গণতন্ত্রের বিজয় দিবস। এ দিন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করেছে। শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাঙালি ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে।’