‘নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসতে মানা’

টাঙ্গাইলের মধুপুরে আটটি ইউনিয়নে ১৫ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদ একটি। এ ইউনিয়নেও নির্বাচন ১৫ জুন। এই ইউনিয়নে নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে নেমেছিলেন। এর মধ্যে অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম মিন্টু দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে ছিলেন। সম্প্রতি নেতাকর্মীদের অনুরোধে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এখন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহিম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সাবেক ইউপি সদস্য লস্কর আলী নির্বাচনের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এক নির্বাচনী সভায় নির্বাচনে যারা নৌকা মার্কায় ভোট দিতে নারাজ, তাদের ভোটকেন্দ্রে আসতে নিষেধ করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

অরণখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গত বুধবার বিকেলে আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় সাদিকুল ইসলাম তার বক্তব্য দেয়ার সময় ওই হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে সাদিকুলের বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ছড়িয়ে পড়ে। সাদিকুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে নিষেধ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সাদিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কেউ হয়তো এডিট করে এই ভিডিও দিয়েছে।’

সাদিকুলের বক্তব্যের পৃথক ভিডিও ক্লিপ ফেইসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তি শেয়ার করেছেন। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, সাদিকুল ইসলাম বক্তৃতায় বলছেন, ‘আমি আজকেও বলে দিতে চাই, ১৫ তারিখ ভোট হবে সারাদিন এবং নৌকা মার্কায় ভোট হবে। আপনারা ভোট দেবেন। যারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন, তারাই কেন্দ্রে আসবেন। আর যারা নৌকায় ভোট দিতে নারাজ, দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না। এখানে ২৪০০ ভোট রয়েছে, যদি দুই হাজার ভোট কাস্ট হয়, আমরা দুই হাজার ভোটই পেতে চাই।’

সাদিকুল ইসলাম জানান, আমি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক চিত্র তুলে ধরে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছি। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরি। বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য ও নির্বাচন কেন্দ্রে যাতে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে সেদিকে কর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছি। তিনি আরও বলেন, আমার বক্তব্যটি এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে প্রচার এবং প্রকাশ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী লস্কর আলী জানান, ওইদিন আমি উপজেলা নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা ও মতবিনিময় সভায় ছিলাম। ওই সময় আমার বাড়ির পাশে আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এমন বক্তব্য হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, এর ফলে সাধারণ মানুষ জেগে উঠতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, ভোটারদের মাঝে ভীতি কাজ করছে।

এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমীন এবং মধুপুর থানার ওসি মাজহারুল আমিন জানান, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি।

মধুপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আরও খবর
জেল থেকে নেতাকর্মীদের চিঠির মাধ্যমে নির্দেশনা দিতাম : প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস পালিত
পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলে প্রসার ঘটবে ব্যবসা-বাণিজ্যের
পত্রিকার ডিজিটাল কনটেন্ট নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই সম্পাদক পরিষদ
বুয়েটের গবেষণা ঢাকা শহরের তুলনায় বস্তিগুলো মাত্র ১ শতাংশ জায়গায়
২০২২-২৩ অর্থবছর খুবই চ্যালেঞ্জিং : আতিউর রহমান
১৯ জনসহ অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনের নামে মামলা
উন্মুক্ত গোসলখানায় ঝুঁকিতে নিম্ন আয়ের এলাকার নারীরা
‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতাই গণতন্ত্রের সঠিক ভিত্তি’
দুই গ্রুপের গোলাগুলি হতাহতের হিসাব নিশ্চিত করা যাচ্ছে না
পরিকল্পিত হত্যা, নিজেরাই লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়

রবিবার, ১২ জুন ২০২২ , ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১১ জিলকদ ১৪৪৩

‘নৌকায় ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসতে মানা’

প্রতিনিধি, মধুপুর (টাঙ্গাইল)

টাঙ্গাইলের মধুপুরে আটটি ইউনিয়নে ১৫ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদ একটি। এ ইউনিয়নেও নির্বাচন ১৫ জুন। এই ইউনিয়নে নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে ভোটযুদ্ধে নেমেছিলেন। এর মধ্যে অরণখোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম মিন্টু দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে ছিলেন। সম্প্রতি নেতাকর্মীদের অনুরোধে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এখন ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহিম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির সাবেক ইউপি সদস্য লস্কর আলী নির্বাচনের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। এক নির্বাচনী সভায় নির্বাচনে যারা নৌকা মার্কায় ভোট দিতে নারাজ, তাদের ভোটকেন্দ্রে আসতে নিষেধ করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

অরণখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গত বুধবার বিকেলে আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় সাদিকুল ইসলাম তার বক্তব্য দেয়ার সময় ওই হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে সাদিকুলের বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ছড়িয়ে পড়ে। সাদিকুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তবে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে নিষেধ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সাদিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কেউ হয়তো এডিট করে এই ভিডিও দিয়েছে।’

সাদিকুলের বক্তব্যের পৃথক ভিডিও ক্লিপ ফেইসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ ও ব্যক্তি শেয়ার করেছেন। একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, সাদিকুল ইসলাম বক্তৃতায় বলছেন, ‘আমি আজকেও বলে দিতে চাই, ১৫ তারিখ ভোট হবে সারাদিন এবং নৌকা মার্কায় ভোট হবে। আপনারা ভোট দেবেন। যারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন, তারাই কেন্দ্রে আসবেন। আর যারা নৌকায় ভোট দিতে নারাজ, দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না। এখানে ২৪০০ ভোট রয়েছে, যদি দুই হাজার ভোট কাস্ট হয়, আমরা দুই হাজার ভোটই পেতে চাই।’

সাদিকুল ইসলাম জানান, আমি বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক চিত্র তুলে ধরে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছি। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার কথা তুলে ধরি। বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য ও নির্বাচন কেন্দ্রে যাতে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে পারে সেদিকে কর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছি। তিনি আরও বলেন, আমার বক্তব্যটি এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে প্রচার এবং প্রকাশ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী লস্কর আলী জানান, ওইদিন আমি উপজেলা নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা ও মতবিনিময় সভায় ছিলাম। ওই সময় আমার বাড়ির পাশে আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এমন বক্তব্য হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, এর ফলে সাধারণ মানুষ জেগে উঠতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, ভোটারদের মাঝে ভীতি কাজ করছে।

এ ব্যাপারে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমীন এবং মধুপুর থানার ওসি মাজহারুল আমিন জানান, এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি।

মধুপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।