এসএসসিতে এবার কমেছে সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার কমেছে প্রায় সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী। গত বছর পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা না হওয়ায় অনুত্তীর্ণ খুব একটা ছিল না এ কারণে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে বলে শিক্ষামন্ত্রীর ধারণা। তার দাবি এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থী কমেনি।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়া হয়। ওই পরীক্ষায় অংশ নেয় ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী, যা আগের বছরের (২০২০) তুলনায় এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেশি ছিল।

সাধারণত করোনা মহামারীর আগে প্রতিবারই পরীক্ষার্থীর সংখ্য কম-বেশি বেড়েছে। কিন্তু এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এবছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীয় অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন, যা গতবছরের তুলনায় দুই লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন কম।

আগামী ১৯ জুন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ পরীক্ষার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে গতকাল ‘আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন মন্ত্রী।

করোনা মহামারীতে দেশে বাল্যবিয়ে বেড়েছে বলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার দাবি। বাল্যবিয়ের কারণে পরীক্ষার্থী কমেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিসংখ্যান তা বলছে না। আমাদের পরিসংখ্যানে ছেলেদের তুলনায় এ বছর মেয়ে শিক্ষার্থী বেশি।’

পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা না হওয়ায় পরীক্ষার্থী কম দেখাচ্ছে-এমন ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছর মানোন্নয়নের জন্য অনেকে পরীক্ষা দেয়। কিন্তু গতবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, শুধু আবশ্যিক বিষয়ে। সে কারণে পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্র্থী নেই বললেই চলে। গতবার যদি পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা হতো তাহলে যারা অকৃতকার্য হতো তারা এবারও পরীক্ষায় অংশ নিত। সে কারণে এবার পরীক্ষার্র্থী কম মনে হচ্ছে।’

গত বছর প্রায় সবাই উত্তীর্ণ হওয়ায় ‘অকৃতকার্য’ কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘প্রতিবছর এমনও হয়, কেউ কেউ রেজিস্ট্রেশন করেও পরীক্ষা দেয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। সবাই পাস করেছে।’

এ বছর পরীক্ষার্র্থী কমলেও পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে। গতবছর মোট তিন হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর তিন হাজার ৭৯০টিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ হিসাবে ১১১টি কেন্দ্র বেড়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ বছর মোট অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ৯ হাজার ৫১১ জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ১২ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে অংশ নিচ্ছে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিলে দুই লাখ ৬৮ হাজার এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। আর বিদেশের আটটি কেন্দ্রে অংশ নিচ্ছে মোট ৩৬৭ জন পরীক্ষার্থী।

গতবছরের তুলনায় এবার ৫৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বছর মোট ২৯ হাজার ৫৯১টি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবে।

৩ সপ্তাহ বন্ধ থাকবে

সব কোচিং সেন্টার

পরীক্ষার জন্য আগামী ১৫ জুন থেকে তিন সপ্তাহ দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোকে নজরদারির আওতায় আনা হবে। এমনিতে পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকে। যারা গোপনে খোলা রাখেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কোচিং সেন্টার স্থায়ীভাবে বন্ধের উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কোচিং শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর তা আমরা বলছি না। সব শিক্ষার্থীর মেধা এক থাকে না। অনেক শিক্ষার্থীর ক্লাসের বাইরে সহযোগিতা প্রয়োজন। শ্রেণীকক্ষে যাদের সব চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না তাদের জন্য কোচিং প্রয়োজন রয়েছে।

কোন কোন শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে মনোযোগ না দিয়ে কোচিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘কোচিং না করলে নম্বর কমিয়ে দেন তাও অনৈতিক। তবে কোচিংয়ের ধরন পাল্টানো হবে। কোন শিক্ষক যদি শ্রেণীকক্ষের বাইরে ভালো শেখান তা কি বন্ধ করা সম্ভব? তবে কোন শিক্ষক যাতে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে বাধ্য না করেন সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে।

২৫ তারিখের পরীক্ষা ২৪ জুন

আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে। এ কারণে ওই দিনের পরীক্ষা একদিন এগিয়ে ২৪ জুন নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

প্রকাশিত সময়সূচি বা রুটিন অনুযায়ী, ২৫ জুন এসএসসির ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

নতুন শিক্ষাক্রম অ্যাপভিত্তিক

‘নতুন শিক্ষাক্রম অ্যাপভিত্তিক’ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন মূল্যায়ন নম্বর দিতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের প্ল্যান রয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।’

অবৈধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

দেশব্যাপী গড়ে উঠা অননুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, তবে হুট করেই এসব বন্ধ করে দেয়া যায় না। পরিকল্পনা করে বন্ধের একটি রূপরেখা তৈরি করার চেষ্টা চলছে।

অননুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সরকার সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনুমোদনহীন বেশিরভাগই প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাখা হবে না। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে আমরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করব। আর নিম্ন মাধ্যমিক থেকে উচ্চ পর্যায়ের অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

অবৈধ কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে নীতিমালায় আনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষা আইনে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দেশীয় কারিকুলামে সহজে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় না। এ কারণে কেউ কেউ ইংরেজি কারিকুলাম বা অন্য উপায়ে যত্রতত্র এসব প্রতিষ্ঠান খুলছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এবং অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার, ১৩ জুন ২০২২ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪৩

এসএসসিতে এবার কমেছে সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার কমেছে প্রায় সোয়া দুই লাখ পরীক্ষার্থী। গত বছর পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা না হওয়ায় অনুত্তীর্ণ খুব একটা ছিল না এ কারণে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে বলে শিক্ষামন্ত্রীর ধারণা। তার দাবি এবার নিয়মিত পরীক্ষার্থী কমেনি।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে ২০২১ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নেয়া হয়। ওই পরীক্ষায় অংশ নেয় ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী, যা আগের বছরের (২০২০) তুলনায় এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেশি ছিল।

সাধারণত করোনা মহামারীর আগে প্রতিবারই পরীক্ষার্থীর সংখ্য কম-বেশি বেড়েছে। কিন্তু এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এবছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীয় অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ জন, যা গতবছরের তুলনায় দুই লাখ ২১ হাজার ৩৮৬ জন কম।

আগামী ১৯ জুন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ পরীক্ষার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে গতকাল ‘আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা’ অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও এ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন মন্ত্রী।

করোনা মহামারীতে দেশে বাল্যবিয়ে বেড়েছে বলে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার দাবি। বাল্যবিয়ের কারণে পরীক্ষার্থী কমেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিসংখ্যান তা বলছে না। আমাদের পরিসংখ্যানে ছেলেদের তুলনায় এ বছর মেয়ে শিক্ষার্থী বেশি।’

পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা না হওয়ায় পরীক্ষার্থী কম দেখাচ্ছে-এমন ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছর মানোন্নয়নের জন্য অনেকে পরীক্ষা দেয়। কিন্তু গতবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে, শুধু আবশ্যিক বিষয়ে। সে কারণে পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্র্থী নেই বললেই চলে। গতবার যদি পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা হতো তাহলে যারা অকৃতকার্য হতো তারা এবারও পরীক্ষায় অংশ নিত। সে কারণে এবার পরীক্ষার্র্থী কম মনে হচ্ছে।’

গত বছর প্রায় সবাই উত্তীর্ণ হওয়ায় ‘অকৃতকার্য’ কোন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘প্রতিবছর এমনও হয়, কেউ কেউ রেজিস্ট্রেশন করেও পরীক্ষা দেয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। সবাই পাস করেছে।’

এ বছর পরীক্ষার্র্থী কমলেও পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে। গতবছর মোট তিন হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর তিন হাজার ৭৯০টিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ হিসাবে ১১১টি কেন্দ্র বেড়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, এ বছর মোট অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ১০ লাখ ৯ হাজার ৫১১ জন এবং ছাত্রী ১০ লাখ ১২ হাজার ৩৫৭ জন। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে অংশ নিচ্ছে ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭১১ জন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিলে দুই লাখ ৬৮ হাজার এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। আর বিদেশের আটটি কেন্দ্রে অংশ নিচ্ছে মোট ৩৬৭ জন পরীক্ষার্থী।

গতবছরের তুলনায় এবার ৫৫৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এ বছর মোট ২৯ হাজার ৫৯১টি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবে।

৩ সপ্তাহ বন্ধ থাকবে

সব কোচিং সেন্টার

পরীক্ষার জন্য আগামী ১৫ জুন থেকে তিন সপ্তাহ দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোকে নজরদারির আওতায় আনা হবে। এমনিতে পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকে। যারা গোপনে খোলা রাখেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কোচিং সেন্টার স্থায়ীভাবে বন্ধের উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘কোচিং শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতিকর তা আমরা বলছি না। সব শিক্ষার্থীর মেধা এক থাকে না। অনেক শিক্ষার্থীর ক্লাসের বাইরে সহযোগিতা প্রয়োজন। শ্রেণীকক্ষে যাদের সব চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না তাদের জন্য কোচিং প্রয়োজন রয়েছে।

কোন কোন শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে মনোযোগ না দিয়ে কোচিং নিয়ে ব্যস্ত থাকেন জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ‘কোচিং না করলে নম্বর কমিয়ে দেন তাও অনৈতিক। তবে কোচিংয়ের ধরন পাল্টানো হবে। কোন শিক্ষক যদি শ্রেণীকক্ষের বাইরে ভালো শেখান তা কি বন্ধ করা সম্ভব? তবে কোন শিক্ষক যাতে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে বাধ্য না করেন সেই পদক্ষেপ নেয়া হবে।

২৫ তারিখের পরীক্ষা ২৪ জুন

আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে। এ কারণে ওই দিনের পরীক্ষা একদিন এগিয়ে ২৪ জুন নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

প্রকাশিত সময়সূচি বা রুটিন অনুযায়ী, ২৫ জুন এসএসসির ইংরেজি (আবশ্যিক) দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

নতুন শিক্ষাক্রম অ্যাপভিত্তিক

‘নতুন শিক্ষাক্রম অ্যাপভিত্তিক’ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন মূল্যায়ন নম্বর দিতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের প্ল্যান রয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।’

অবৈধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ

দেশব্যাপী গড়ে উঠা অননুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, তবে হুট করেই এসব বন্ধ করে দেয়া যায় না। পরিকল্পনা করে বন্ধের একটি রূপরেখা তৈরি করার চেষ্টা চলছে।

অননুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সরকার সমানভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনুমোদনহীন বেশিরভাগই প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাখা হবে না। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে আমরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করব। আর নিম্ন মাধ্যমিক থেকে উচ্চ পর্যায়ের অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

অবৈধ কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোকে নীতিমালায় আনা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষা আইনে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। দেশীয় কারিকুলামে সহজে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায় না। এ কারণে কেউ কেউ ইংরেজি কারিকুলাম বা অন্য উপায়ে যত্রতত্র এসব প্রতিষ্ঠান খুলছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর সিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এবং অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।