‘খেয়াল খুশিমতো ব্যথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি হয়’

খেয়াল খুশিমতো ব্যাথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। ব্যাথার ওষুধে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই নির্দিষ্ট মাত্রার ওষুধ ছাড়াও ব্যাথা নিরাময় রেডিয়েশন, হিট থেরাপি দেয়া যেতে পারে বলে ব্যাথা বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। এরপরও সুস্থ না হলে অপারেশনের মাধ্যমে এ ব্যাথা দূর করা সম্ভব। এছাড়া কোমর ব্যাথা নিরাময়ে শরীর চর্চা, নির্দিষ্ট মাত্রার ওষুধ প্রয়োগ এবং সর্বশেষ অপারেশন করে লো-ব্যাক পেইন প্রতিকার করা যায়। তবে নিয়ম-কানুন মেনে ব্যাথা নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। দরকার হলে ফিজিক্যাল মেডিসিন, রিউমাটোলজি ও নিউরোসার্জারির মতো বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে।

গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লো-ব্যাক পেইন, শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লকের মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেমিনারের অধীনে ফিজিক্যাল মেডিসিন, রিউমাটোলজি বিভাগ ও নিউরোসার্জারি বিভাগ যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সেমিনারে ভিসি তার বক্তব্যে বলেন, অনেকেই হাঁটতে গেলে চলতে গেলে ব্যাথা হয়। কারো পিঠে ব্যাথা, কোমরে ব্যাথা হয়। কেউ নিচু হয়ে কিছু তুলতে গেলে এমন ব্যাথা হয় যে তাকে সারাদিন শুয়ে থাকতে হয়। ব্যাথার কারণে অনেকেই মাসখানেক শক্ত বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। চেয়ারে বসে কাজ করতে গেলে অনেকেই পিঠে ব্যাথা অনুভব করেন।

ব্যাথা নিরাময়ে নিচু হয়ে ভারী কিছু না তোলে, ওজন যেন বৃদ্বি না পায় সে দিকে খেয়াল রাখা ও শক্ত বিছানায় শোয়ার অভ্যাস করা। এসব মানলে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি মিলবে। ব্যাথা নিরাময়ের জন্য উল্টা-পাল্টা ওষুধ খাওয়া যাবে না।

সেমিনারে আলোচনায় বক্তারা বলেন, কোমরের ব্যাথা সাধারণ ব্যাথা। কোমর ব্যাথার শতকরা ৯০ ভাগ রোগীই যদি রেস্টে দেয়া যায়, ফিজিক্যাল এক্টিভিশন করলে ভালো হয়ে যায়। অধিকাংশ কোমর ব্যাথা নিয়ম-কানুন মানার মাধ্যমে প্রতিকার করা সম্ভব। এর বাইরে মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট ও ফিজিক্যাল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেও অধিকাংশ কোমর ব্যাথার প্রতিকার করা সম্ভব।

ব্যাথা নিরাময়ে স্টরয়েড প্রয়োগ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। স্টরয়েড শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। উন্নত বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ক্লুরোসকপি ও আল্ট্রাসাউড গাইডেড ইন্টারভেনশন করা হয়। এর ফলে অপারেশন এড়ানো যায়। রোগীরাও আর্থিক দিক থেকে লাভবান হয়।

সেমিনারে কিনোট স্পিকার হিসেবে নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বেশিরভাগ কোমরের ব্যাথা সাধারণ ব্যাথা। কোমর ব্যাথার শতকরা ৯০ ভাগ রোগীই যদি রেস্টে দেয়া যায়, ফিজিক্যাল এক্টিভিশন করলে ভালো হয়ে যায়। কোমর ব্যাথার সঙ্গে পায়ের ব্যাথা, পায়ের শক্তি কমে যাবে, প্রসাব বন্ধ হয়ে যাবে, তখন এটিকে সাধারণত বলা হয় ‘রেড ব্লাক সাইন’। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সেমিনালে প্যানেল এক্সপার্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভিসি প্রফেসর একেএম মোশাররফ হোসেন, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. আবু সালেক ও নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী প্রমুখ।

সোমবার, ১৩ জুন ২০২২ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪৩

‘খেয়াল খুশিমতো ব্যথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি হয়’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

খেয়াল খুশিমতো ব্যাথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। ব্যাথার ওষুধে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। তাই নির্দিষ্ট মাত্রার ওষুধ ছাড়াও ব্যাথা নিরাময় রেডিয়েশন, হিট থেরাপি দেয়া যেতে পারে বলে ব্যাথা বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন। এরপরও সুস্থ না হলে অপারেশনের মাধ্যমে এ ব্যাথা দূর করা সম্ভব। এছাড়া কোমর ব্যাথা নিরাময়ে শরীর চর্চা, নির্দিষ্ট মাত্রার ওষুধ প্রয়োগ এবং সর্বশেষ অপারেশন করে লো-ব্যাক পেইন প্রতিকার করা যায়। তবে নিয়ম-কানুন মেনে ব্যাথা নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। দরকার হলে ফিজিক্যাল মেডিসিন, রিউমাটোলজি ও নিউরোসার্জারির মতো বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে।

গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে লো-ব্যাক পেইন, শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লকের মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেমিনারের অধীনে ফিজিক্যাল মেডিসিন, রিউমাটোলজি বিভাগ ও নিউরোসার্জারি বিভাগ যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি প্রফেসর ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সেমিনারে ভিসি তার বক্তব্যে বলেন, অনেকেই হাঁটতে গেলে চলতে গেলে ব্যাথা হয়। কারো পিঠে ব্যাথা, কোমরে ব্যাথা হয়। কেউ নিচু হয়ে কিছু তুলতে গেলে এমন ব্যাথা হয় যে তাকে সারাদিন শুয়ে থাকতে হয়। ব্যাথার কারণে অনেকেই মাসখানেক শক্ত বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়। চেয়ারে বসে কাজ করতে গেলে অনেকেই পিঠে ব্যাথা অনুভব করেন।

ব্যাথা নিরাময়ে নিচু হয়ে ভারী কিছু না তোলে, ওজন যেন বৃদ্বি না পায় সে দিকে খেয়াল রাখা ও শক্ত বিছানায় শোয়ার অভ্যাস করা। এসব মানলে কোমর ব্যাথা থেকে মুক্তি মিলবে। ব্যাথা নিরাময়ের জন্য উল্টা-পাল্টা ওষুধ খাওয়া যাবে না।

সেমিনারে আলোচনায় বক্তারা বলেন, কোমরের ব্যাথা সাধারণ ব্যাথা। কোমর ব্যাথার শতকরা ৯০ ভাগ রোগীই যদি রেস্টে দেয়া যায়, ফিজিক্যাল এক্টিভিশন করলে ভালো হয়ে যায়। অধিকাংশ কোমর ব্যাথা নিয়ম-কানুন মানার মাধ্যমে প্রতিকার করা সম্ভব। এর বাইরে মেডিকেল ম্যানেজমেন্ট ও ফিজিক্যাল ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেও অধিকাংশ কোমর ব্যাথার প্রতিকার করা সম্ভব।

ব্যাথা নিরাময়ে স্টরয়েড প্রয়োগ করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। স্টরয়েড শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। উন্নত বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও ক্লুরোসকপি ও আল্ট্রাসাউড গাইডেড ইন্টারভেনশন করা হয়। এর ফলে অপারেশন এড়ানো যায়। রোগীরাও আর্থিক দিক থেকে লাভবান হয়।

সেমিনারে কিনোট স্পিকার হিসেবে নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন বলেন, বেশিরভাগ কোমরের ব্যাথা সাধারণ ব্যাথা। কোমর ব্যাথার শতকরা ৯০ ভাগ রোগীই যদি রেস্টে দেয়া যায়, ফিজিক্যাল এক্টিভিশন করলে ভালো হয়ে যায়। কোমর ব্যাথার সঙ্গে পায়ের ব্যাথা, পায়ের শক্তি কমে যাবে, প্রসাব বন্ধ হয়ে যাবে, তখন এটিকে সাধারণত বলা হয় ‘রেড ব্লাক সাইন’। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সেমিনালে প্যানেল এক্সপার্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভিসি প্রফেসর একেএম মোশাররফ হোসেন, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. আবু সালেক ও নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী প্রমুখ।