টিকেট কিনে বাসে উঠে ডাকাতি করত তারা

চক্রের ১০ সদস্য গ্রেপ্তার, স্বীকারোক্তি

আশুলিয়ার হানিফ পরিবহন ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতে স্টার লাইন পরিবহনের বাসে ডাকাতির ঘটনায় গত শনিবার রাতে ১০ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল কুর্মিটোলা র‌্যাব হেডকোয়ার্টারের মিডিয়া শাখা থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ডাকাতদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, র‌্যাব হেডকোয়ার্টারের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর একটি টিম গত শনিবার রাতে আশুলিয়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত সর্দার হিরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখ, তার সহযোগী হাসান মোল্লা, আরিফ প্রমণিক, নূর ইসলাম, রাজু শেখ, রেজাউল সরকার, মো. রতন, শরিফুল ইসলাম, মো. হানিফ ও নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৮টি দেশি অস্ত্র, শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের টিকেট ও ৩টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা ঢাকা ও রাজশাহীগামী একটি বাসে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতরা স্বীকার করে বলেছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এই দলের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সর্দার হীরা ও তার অন্যতম সহযোগী হাসান মোল্লা ডাকাতির পরিকল্পনা করে।

ডাকাতদলটি দীর্ঘদিন যাত্রীবাহী বাসে উঠে ডাকাতি করত। গেল দুই বছরে প্রায় ১০ থেকে ১৫টি বাসে ডাকাতি করেছে। ইতোমধ্যে চক্রটি ঢাকা সিলেট মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন, মামুন ট্রাভেলস, ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কে ন্যাশনাল ট্রাভেলস ও একতা ট্রাভেলসে ডাকাতি করছে বলে জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিলেট মহাসড়কে সৌদিয়া বাসে ডাকাতির সময় তারা বাস চালকের হাতে হেলপারের পেটে ছুরিকাঘাত করেছে। এই চক্রটি ঢাকা খুলনা মহাসড়কে ফাল্গুনি ট্রাভেলস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও কনক পরিবহন, রইস পরিবহন, ঢাকা পাবনা মহাসড়কে পাবনা এক্সপ্রেস, সরকার ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন পরিনবহনে ডাকাতি করেছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে। তারা তিন বছর আগে ঢাকা দিনাজপুরগামী একটি বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটায় বলে জানিয়েছে।

সর্বশেষ ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করেছে। তারা সাধারণত ডাকাতির সময় আন্তঃজেলা বাসকে টার্গেট করে ডাকাতি করত। এই চক্র যাত্রীবেসে কাউন্টার থেকে টিকেট কিনে বাসে উঠে। অন্য সদস্যরা পরবর্তী কাউন্টার থেকে টার্গেটকৃত বাসে উঠে। যারা দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ব্যতীত যাত্রী উঠায় তারা এসব বাসকে প্রধান্য দিয়ে ডাকাতি করে থাকে।

চক্রটি মহাসড়কের নিরিবিলি স্থান ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। ডাকাতি করার পর তারা আবার আশুলিয়া এলাকায় ফিরে যায়। তারা বাড়িঘরেও ডাকাতি করত বলে জানা গেছে।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা এর আগে ২ বছর থেকে ৬ বছর পর্যন্ত জেল খেটেছে। জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার ডাকাতি করত। তাদের ডাকাতির নানা তথ্য র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা কেউ ৮ থেকে ১০ বছর আবার কেউ ১৬ থেকে ১৭ বছর ধরে মহাসড়কে ডাকাতি করত বলে স্বীকার করেছে।

আরও খবর
বিএনপিসহ ‘সব দলের অংশগ্রহণ’ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না সাবেক সিইসি-ইসিদের মন্তব্য
সফলভাবে বাজেট বাস্তবায়নের ফলেই দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : সরকারি দল
সংবাদপত্রের অনলাইন ও সংবাদ পোর্টালে টক শো প্রচার করতে পারে না : তথ্যমন্ত্রী
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীর সৈনিক কছির উদ্দিন, শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই
‘খেয়াল খুশিমতো ব্যথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি হয়’
তারেককে খালাস দিয়ে রায় দেয়া সাবেক এক বিচারকের বিরুদ্ধে মামলা
যৌন হয়রানি-নিপীড়ন রোধে পৃথক আইন প্রণয়নের দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হেনস্তা, ৯৯৯- এ কল, বখাটে গ্রেপ্তার
চলতি বছর ১১৮ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার

সোমবার, ১৩ জুন ২০২২ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪৩

টিকেট কিনে বাসে উঠে ডাকাতি করত তারা

চক্রের ১০ সদস্য গ্রেপ্তার, স্বীকারোক্তি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আশুলিয়ার হানিফ পরিবহন ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতে স্টার লাইন পরিবহনের বাসে ডাকাতির ঘটনায় গত শনিবার রাতে ১০ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল কুর্মিটোলা র‌্যাব হেডকোয়ার্টারের মিডিয়া শাখা থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ডাকাতদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, র‌্যাব হেডকোয়ার্টারের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ এর একটি টিম গত শনিবার রাতে আশুলিয়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডাকাত সর্দার হিরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখ, তার সহযোগী হাসান মোল্লা, আরিফ প্রমণিক, নূর ইসলাম, রাজু শেখ, রেজাউল সরকার, মো. রতন, শরিফুল ইসলাম, মো. হানিফ ও নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।

তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৮টি দেশি অস্ত্র, শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের টিকেট ও ৩টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা ঢাকা ও রাজশাহীগামী একটি বাসে ডাকাতির পরিকল্পনা করছিল।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতরা স্বীকার করে বলেছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। এই দলের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সর্দার হীরা ও তার অন্যতম সহযোগী হাসান মোল্লা ডাকাতির পরিকল্পনা করে।

ডাকাতদলটি দীর্ঘদিন যাত্রীবাহী বাসে উঠে ডাকাতি করত। গেল দুই বছরে প্রায় ১০ থেকে ১৫টি বাসে ডাকাতি করেছে। ইতোমধ্যে চক্রটি ঢাকা সিলেট মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন, মামুন ট্রাভেলস, ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কে ন্যাশনাল ট্রাভেলস ও একতা ট্রাভেলসে ডাকাতি করছে বলে জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম সিলেট মহাসড়কে সৌদিয়া বাসে ডাকাতির সময় তারা বাস চালকের হাতে হেলপারের পেটে ছুরিকাঘাত করেছে। এই চক্রটি ঢাকা খুলনা মহাসড়কে ফাল্গুনি ট্রাভেলস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও কনক পরিবহন, রইস পরিবহন, ঢাকা পাবনা মহাসড়কে পাবনা এক্সপ্রেস, সরকার ট্রাভেলসসহ বিভিন্ন পরিনবহনে ডাকাতি করেছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে। তারা তিন বছর আগে ঢাকা দিনাজপুরগামী একটি বাসে ডাকাতির সময় ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটায় বলে জানিয়েছে।

সর্বশেষ ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করেছে। তারা সাধারণত ডাকাতির সময় আন্তঃজেলা বাসকে টার্গেট করে ডাকাতি করত। এই চক্র যাত্রীবেসে কাউন্টার থেকে টিকেট কিনে বাসে উঠে। অন্য সদস্যরা পরবর্তী কাউন্টার থেকে টার্গেটকৃত বাসে উঠে। যারা দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ব্যতীত যাত্রী উঠায় তারা এসব বাসকে প্রধান্য দিয়ে ডাকাতি করে থাকে।

চক্রটি মহাসড়কের নিরিবিলি স্থান ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। ডাকাতি করার পর তারা আবার আশুলিয়া এলাকায় ফিরে যায়। তারা বাড়িঘরেও ডাকাতি করত বলে জানা গেছে।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাতরা এর আগে ২ বছর থেকে ৬ বছর পর্যন্ত জেল খেটেছে। জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার ডাকাতি করত। তাদের ডাকাতির নানা তথ্য র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা কেউ ৮ থেকে ১০ বছর আবার কেউ ১৬ থেকে ১৭ বছর ধরে মহাসড়কে ডাকাতি করত বলে স্বীকার করেছে।