চলতি বছর ১১৮ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার

বিশ্বজুড়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের সুরক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করা সংগঠনটির হিসাব অনুযায়ী, দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ১১৮ জন সাংবাদিক আহত ও লাঞ্ছিত হয়েছেন। এছাড়া জুন মাসেই তিন গণমাধ্যমকর্মী খুন হয়েছেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনসহ সাংবাদিক খুন ও নির্যাতনের ঘটনায় বিচার দাবি করেছে সংস্থাটি।

গতকাল সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের অধিকার লঙ্ঘন ও হত্যাসহ নির্যাতনের ধারা অব্যাহত। এই প্রবণতা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পরিস্থিতির ক্রমাবনত নাজুক অবস্থা ও বিচারহীনতার পরিস্থিতি নির্দেশ করে। চলতি জুন মাসে রাজধানী, পটুয়াখালী ও কুমিল্লায় তিন গণমাধ্যমকর্মী খুনের ঘটনায় শঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে আর্টিকেল নাইনটিন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।

এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দেশজুড়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা ও নির্যাতন এবং সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমাদান ৮৯তম বারের মতো পেছানোর নিন্দা জানিয়েছে।

আর্টিকেল নাইনটিন বলেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর ৬২টি শারীরিক হামলা হয়েছে। এ সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ১০টি মামলায় ৩ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘আর্টিকেল নাইনটিন শুরু থেকেই মতপ্রকাশের অধিকার ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি বলে চিহ্নিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নিবর্তনমূলক ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছে। আইনটির অপপ্রয়োগ হয়েছে স্বীকার করে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের একাধিক মন্ত্রী এ আইনে সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার না করার পাশাপাশি আইনটির সংস্কারের আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে।’ আইনটি সুষ্ঠু প্রয়োগের চেয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি করাসহ অপপ্রয়োগই বেশি হচ্ছে। আইনটির প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

২০২১ সালে ৭১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৩৫টি মামলায় ১৬ জন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হন। সচেতন নাগরিক, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর এসব ঘটনার প্রভাবে দেশে একটি ভয়ের পরিবেশ ও সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আরও খবর
বিএনপিসহ ‘সব দলের অংশগ্রহণ’ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না সাবেক সিইসি-ইসিদের মন্তব্য
সফলভাবে বাজেট বাস্তবায়নের ফলেই দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে : সরকারি দল
সংবাদপত্রের অনলাইন ও সংবাদ পোর্টালে টক শো প্রচার করতে পারে না : তথ্যমন্ত্রী
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বীর সৈনিক কছির উদ্দিন, শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই
‘খেয়াল খুশিমতো ব্যথার ওষুধ খেলে কিডনিসহ অঙ্গ-প্রতঙ্গের ক্ষতি হয়’
তারেককে খালাস দিয়ে রায় দেয়া সাবেক এক বিচারকের বিরুদ্ধে মামলা
যৌন হয়রানি-নিপীড়ন রোধে পৃথক আইন প্রণয়নের দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে হেনস্তা, ৯৯৯- এ কল, বখাটে গ্রেপ্তার
টিকেট কিনে বাসে উঠে ডাকাতি করত তারা

সোমবার, ১৩ জুন ২০২২ , ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১২ জিলকদ ১৪৪৩

চলতি বছর ১১৮ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বিশ্বজুড়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের সুরক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন বাংলাদেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করা সংগঠনটির হিসাব অনুযায়ী, দেশে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ১১৮ জন সাংবাদিক আহত ও লাঞ্ছিত হয়েছেন। এছাড়া জুন মাসেই তিন গণমাধ্যমকর্মী খুন হয়েছেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনসহ সাংবাদিক খুন ও নির্যাতনের ঘটনায় বিচার দাবি করেছে সংস্থাটি।

গতকাল সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের অধিকার লঙ্ঘন ও হত্যাসহ নির্যাতনের ধারা অব্যাহত। এই প্রবণতা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা পরিস্থিতির ক্রমাবনত নাজুক অবস্থা ও বিচারহীনতার পরিস্থিতি নির্দেশ করে। চলতি জুন মাসে রাজধানী, পটুয়াখালী ও কুমিল্লায় তিন গণমাধ্যমকর্মী খুনের ঘটনায় শঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করে আর্টিকেল নাইনটিন সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।

এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দেশজুড়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও মামলা ও নির্যাতন এবং সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমাদান ৮৯তম বারের মতো পেছানোর নিন্দা জানিয়েছে।

আর্টিকেল নাইনটিন বলেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর ৬২টি শারীরিক হামলা হয়েছে। এ সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ১০টি মামলায় ৩ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, ‘আর্টিকেল নাইনটিন শুরু থেকেই মতপ্রকাশের অধিকার ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি বলে চিহ্নিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নিবর্তনমূলক ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছে। আইনটির অপপ্রয়োগ হয়েছে স্বীকার করে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের একাধিক মন্ত্রী এ আইনে সাংবাদিকদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার না করার পাশাপাশি আইনটির সংস্কারের আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে।’ আইনটি সুষ্ঠু প্রয়োগের চেয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি করাসহ অপপ্রয়োগই বেশি হচ্ছে। আইনটির প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

২০২১ সালে ৭১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৩৫টি মামলায় ১৬ জন সাংবাদিক গ্রেপ্তার হন। সচেতন নাগরিক, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর এসব ঘটনার প্রভাবে দেশে একটি ভয়ের পরিবেশ ও সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।