পুলিশের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার ৩৬ জনকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও
সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে আদমজীর বিহারিদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। বিহারি ক্যাম্পের কয়েকশ’ নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও শটগানের গুলি করে তাদের সড়ক থেকে ছত্রভঙ্গ করে সরিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৫-২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে আদমজী এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে নরায়ণগঞ্জ-আদমজী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে।
জানা যায়, গত শুক্রবার আদমজী শাহী জামে মসজিদে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে রোববার রাত ১টা থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত বিহারি ক্যাম্পে অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযানে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার এবং অনেক নারী-পুরুষকে লাঞ্ছিত এবং ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের অভিযোগ আনে বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দারা। এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পের বাসিন্দারা থানা কার্যালয় ঘেরাও করে। এতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাংরোড সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আদমজী ইপিজেডগামী শ্রমিকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সকাল ৭টা থেকে থানা কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নেয় বিহারিরা।
এর পাশাপাশি আদমজী ইপিজেডের তিনটি প্রবেশ পথেও ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। সকাল ৮টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে থানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে বিহারিরা। তারা নারায়ণগঞ্জ-আদমজী ইপিজেড সড়কের ওপর কাঠের টেবিল, চকি ফেলে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় অভিযানে নিরপরাধ কেউ আটক হয়ে থাকলে আলোচনার মাধ্যমে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।
কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সবাইকে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানায়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কের এক পর্যায়ে অ্যাকশনে যায় পুলিশ ও র্যাব উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিহারিরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিহারি জানায়, পুলিশের সোর্স ভুট্ট ও তাসলিম পুলিশের মামলায় নাম দিয়েছে। এর মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন লোকেরও নাম রয়েছে। বিহারি ক্যাম্পের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন জানান, গত শুক্রবার মসজিদের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলার আসামিদের ধরতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্পে অভিযান চালায়।
এ সময় পুলিশ অনেক নারী-পুরুষকে মারধর করেছে। আবার ঘটনার সময় মসজিদে যায়নি এবং হামলায় ছিল না পুলিশ তাদেরও আটক করেছে। এই ঘটনায় ক্যাম্পের বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শওকত জামিল জানান, রাতে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। উল্লেখ্য গত শুক্রবার পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মির্জা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২৫ জনকে আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৪ জিলকদ ১৪৪৩
পুলিশের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার ৩৬ জনকে ছাড়াতে থানা ঘেরাও
প্রতিনিধি, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে আদমজীর বিহারিদের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। বিহারি ক্যাম্পের কয়েকশ’ নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও শটগানের গুলি করে তাদের সড়ক থেকে ছত্রভঙ্গ করে সরিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৫-২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে আদমজী এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে নরায়ণগঞ্জ-আদমজী সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে।
জানা যায়, গত শুক্রবার আদমজী শাহী জামে মসজিদে পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করতে রোববার রাত ১টা থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত বিহারি ক্যাম্পে অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযানে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার এবং অনেক নারী-পুরুষকে লাঞ্ছিত এবং ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের অভিযোগ আনে বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দারা। এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্যাম্পের বাসিন্দারা থানা কার্যালয় ঘেরাও করে। এতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাংরোড সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আদমজী ইপিজেডগামী শ্রমিকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সকাল ৭টা থেকে থানা কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নেয় বিহারিরা।
এর পাশাপাশি আদমজী ইপিজেডের তিনটি প্রবেশ পথেও ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। সকাল ৮টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে থানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে বিহারিরা। তারা নারায়ণগঞ্জ-আদমজী ইপিজেড সড়কের ওপর কাঠের টেবিল, চকি ফেলে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় অভিযানে নিরপরাধ কেউ আটক হয়ে থাকলে আলোচনার মাধ্যমে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।
কিন্তু বিক্ষোভকারীরা সবাইকে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানায়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কের এক পর্যায়ে অ্যাকশনে যায় পুলিশ ও র্যাব উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিহারিরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ, টিয়ার সেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বিহারি জানায়, পুলিশের সোর্স ভুট্ট ও তাসলিম পুলিশের মামলায় নাম দিয়েছে। এর মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন লোকেরও নাম রয়েছে। বিহারি ক্যাম্পের চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন জানান, গত শুক্রবার মসজিদের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলার আসামিদের ধরতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ক্যাম্পে অভিযান চালায়।
এ সময় পুলিশ অনেক নারী-পুরুষকে মারধর করেছে। আবার ঘটনার সময় মসজিদে যায়নি এবং হামলায় ছিল না পুলিশ তাদেরও আটক করেছে। এই ঘটনায় ক্যাম্পের বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শওকত জামিল জানান, রাতে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। উল্লেখ্য গত শুক্রবার পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মির্জা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২৫ জনকে আসামি করে এ মামলাটি দায়ের করেন।