শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা জরুরি

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে সারাবিশ্বে ১৬০ মিলিয়ন শিশু শিশুশ্রম এর সঙ্গে জড়িত। যার মধ্যে ৬৩ মিলিয়ন মেয়ে শিশু ও ৯৭ মিলিয়ন ছেলে শিশু রয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে বিশ্বব্যাপী প্রতি দশজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু শিশুশ্রম এর সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে প্রায় ৭৯ মিলিয়ন শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষা ২০১৩’র ( চূড়ান্ত ২০২১) তথ্য মতে, দেশে শিশু শ্রমিক রয়েছে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। কর্মরত শিশুদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজত আছে ১২ লাখ ৮০ হাজার জন। আর ২ লাখ ৬০ হাজার জন শিশু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়েজিত, যা তাদের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

উপরোক্ত পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে সারাবিশ্বে শিশুশ্রম এর পরিমাণ আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি। করোনার অভিঘাতে এর সংখ্যা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। কেননা করোনাকালীন সময় অর্থনৈতিক মন্দার দরুণ অনেক শিশুকে কাজে নেমে পড়তে হয়েছে পরিবারের হাল ধরার জন্য। তারা স্কুল থেকে ছিটকে পড়েছে, বাধাগ্রস্ত হয়েছে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ। ফলে বিশ্ববাসী একটি অশিক্ষিত ও অদক্ষ প্রজন্ম পেতে যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে, যা মোটেও বিশ্ববাসীর জন্য সুখকর নয়।

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজকে যে শিশুটি তার শৈশবকালীন ও কৈশোরকালীন অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে মূল ধারার উন্নয়ন থেকে ছিটকে পড়ছে, সে কখনোই আর ফিরে আসেত পারবে কি না-সেটা গবেষণার বিষয়।

শিশুশ্রম একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। তাই আসুন শিশুশ্রম বন্ধে আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে সোচ্চার হই, গড়ে তুলি জনমত। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই বিশ্বকে, এই দেশকে শিশুর বাসযোগ্য স্থানে পরিণত করি যেখানে থাকবে না কোন শিশুশ্রম। ফুলের মতো পবিত্র শিশুগুলো বেড়ে উঠবে তার আপন মহিমায়, আলোকিত করবে সারা বিশ্বকে। নেতৃত্ব দেবে আগামীর পৃথিবীকে। আজ থেকে আমাদের পথচলা শুরু হোক শিশুশ্রম মুক্ত পৃথিবীর প্রত্যাশায়। আর আমাদের সেøাগান হোক ‘শিশুশ্রম বন্ধ করি, সমৃদ্ধশালী পৃথিবী গড়ি’।

বিল্লাল হোসেন

আরও খবর
হল চাই

মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০২২ , ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ১৪ জিলকদ ১৪৪৩

শিশুশ্রম প্রতিরোধ করা জরুরি

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে সারাবিশ্বে ১৬০ মিলিয়ন শিশু শিশুশ্রম এর সঙ্গে জড়িত। যার মধ্যে ৬৩ মিলিয়ন মেয়ে শিশু ও ৯৭ মিলিয়ন ছেলে শিশু রয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে বিশ্বব্যাপী প্রতি দশজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু শিশুশ্রম এর সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে প্রায় ৭৯ মিলিয়ন শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জাতীয় শিশুশ্রম সমীক্ষা ২০১৩’র ( চূড়ান্ত ২০২১) তথ্য মতে, দেশে শিশু শ্রমিক রয়েছে ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। কর্মরত শিশুদের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজত আছে ১২ লাখ ৮০ হাজার জন। আর ২ লাখ ৬০ হাজার জন শিশু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়েজিত, যা তাদের জীবন ও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

উপরোক্ত পরিসংখ্যান থেকে এটা স্পষ্ট যে সারাবিশ্বে শিশুশ্রম এর পরিমাণ আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি। করোনার অভিঘাতে এর সংখ্যা অনেকাংশে বেড়ে গেছে। কেননা করোনাকালীন সময় অর্থনৈতিক মন্দার দরুণ অনেক শিশুকে কাজে নেমে পড়তে হয়েছে পরিবারের হাল ধরার জন্য। তারা স্কুল থেকে ছিটকে পড়েছে, বাধাগ্রস্ত হয়েছে তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ। ফলে বিশ্ববাসী একটি অশিক্ষিত ও অদক্ষ প্রজন্ম পেতে যাচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে, যা মোটেও বিশ্ববাসীর জন্য সুখকর নয়।

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আজকে যে শিশুটি তার শৈশবকালীন ও কৈশোরকালীন অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে মূল ধারার উন্নয়ন থেকে ছিটকে পড়ছে, সে কখনোই আর ফিরে আসেত পারবে কি না-সেটা গবেষণার বিষয়।

শিশুশ্রম একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। তাই আসুন শিশুশ্রম বন্ধে আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে সোচ্চার হই, গড়ে তুলি জনমত। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই বিশ্বকে, এই দেশকে শিশুর বাসযোগ্য স্থানে পরিণত করি যেখানে থাকবে না কোন শিশুশ্রম। ফুলের মতো পবিত্র শিশুগুলো বেড়ে উঠবে তার আপন মহিমায়, আলোকিত করবে সারা বিশ্বকে। নেতৃত্ব দেবে আগামীর পৃথিবীকে। আজ থেকে আমাদের পথচলা শুরু হোক শিশুশ্রম মুক্ত পৃথিবীর প্রত্যাশায়। আর আমাদের সেøাগান হোক ‘শিশুশ্রম বন্ধ করি, সমৃদ্ধশালী পৃথিবী গড়ি’।

বিল্লাল হোসেন