ডাকাত দল মাস্টার বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৩০ জেলায়

কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা মাস্টার নয়। ডাকাতির কলা-কৌশল, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে সফল হওয়ার কারণে তাকে বলা হয় ডাকাতদের মাস্টার। মো. আসলামুল হক আসলাম ওরফে মাস্টার আসলাম গত ১০ বছর ধরে দেশের উত্তর, দক্ষিণ, পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে প্রতিদিনই সড়ক-মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক ডাকাতি করেছে। আসলাম ডাকাতের বাহিনী মাস্টার বাহিনী হিসেবে পরিচিত জেলাগুলোতে।

টাঙ্গাইলের একটি পণ্যবাহী ট্রাকে ডাকাতির মামলার ছায়া তদন্তের সূত্র ধরে ৩০ জেলায় ডাকাতির দলনেতা হিসেবে আসলামুল হক আসলামের খোঁজ পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিম। টিমের দলনেতা অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার শাহাদত হোসেন সুমার নেতৃত্বে দলনেতা আসলামকে ৪ সহযোগীসহ গত ১১ জুন গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে। গ্রেপ্তার আসলামসহ ডাকাত দলের ৪ সদস্য এখন ডিবিতে রিমান্ড হেফাজতে রয়েছে।

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের একাধিক গ্রুপের মধ্যে মাস্টার বাহিনীও একটি গ্রুপ। যার নেতৃত্বে রয়েছে আসলামুল হক আসলাম। আসলামের বিরুদ্ধে রাজধানীর সবুজবাগ থানা এবং পাবনার আতাইকুলা থানায় মামলা রয়েছে। ওই মামলায় ৫ বার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে গেলেও পরে জামিন পেয়ে যায়। এছাড়া কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা, ঢাকার ধামরাই থানাসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। আসলামের সঙ্গে গ্রেপ্তার মকবুল হোসেন প্রকাশ ওরফে বাবুর নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের (সিএমপি) বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে। আরেক সহযোগী মো. রফিক মোল্লা ওরফে রফিক ড্রাইভারের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, কেরানীগঞ্জ, ময়মনসিংহ এবং রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১৭ এবং মো. হাসান হাওলাদারের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে।

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছে, আসলামের নেতৃত্বাধীন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, মির্জাপুর, মানিকগঞ্জ, ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় নিয়মিত ডাকাতি করে আসছে। এসব জেলাগুলোতে আসলামের নিজস্ব সহযোগী রয়েছে। প্রতিটি জেলায় ডাকাতির নেতৃত্বে থাকে আসলাম। গত ১০ বছরে কত ডাকাতি করেছে তার হিসাবে এখনও পাওয়া যায়নি।

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাস্টার বাহিনীর প্রধান আলসামসহ দলের সদস্যরা পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রিবাহী প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাসগুলো বেশি টার্গেট করে। ডাকাতিকালে তারা বাধার সম্মুখীন হলে চালক বা যাত্রীদের হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করে না। মাস্টার বাহিনীর আতঙ্কে ৩০ জেলায় চালকরা চরম আতঙ্কে থাকে। এসব দলের সদস্যরা ডাকাতি করে ধরা পড়লে জেলে বেশিদিন থাকতে হয় না। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তারা আবার ডাকাতিতে নামে। গত ১০ বছর ধরে তারা আন্তঃজেলাগুলোতে বাস-ট্রাক ছাড়াও বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও ডাকাতি করেছে।

যে কৌশলে ডাকাতি

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এরা ডাকাতির সময় লেজার লাইট ব্যবহার করে। নির্দিষ্ট জায়গায় এরা পণ্যবাহী ট্রাক দেখলে লেজার লাইট দিয়ে সিগন্যাল দেয়। অন্ধকারে অনেক সময় চালকরা পুলিশের চেকপোস্ট মনে করে গাড়ি থামালে অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে নিজেদের সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যায়। এরপর চালককে মারধর করে ফেলে দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকসহ মালামাল নিয়ে যায়। ওইসব গাড়ি ব্যবহার করে আবার অন্য জেলায় ডাকাতির কাজে ব্যবহার করে। ডাকাতির মালামাল পার্শ¦বর্তী জেলায় বিক্রি করে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।

যেভাবে মাস্টার বাহিনীর মাস্টার আসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়

ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা জানান, ২ মাস আগে নাটোরে একটি পণ্যবাহী ট্রাক ডাকাতি হয়। ডাকাতির পর থানায় মামলা হলেও পুলিশ কোন ক্লু খুঁজে পাচ্ছিল না। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ যোগাযোগ করেন ডিবির তেজগাঁও জোনাল টিমের সঙ্গে। ওই মামলার সূত্র ধরে ডিবির তেজগাঁও জোনাল টিম তদন্ত করে ওই ডাকাতির সঙ্গে মাস্টার বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়। টানা ২ মাস মাস্টার বাহিনীর প্রধান মো. আসলামুল হক আসলামকে ধরতে তৎপর থাকে ডিবি পুলিশ। ২ মাস নানাভাবে চেষ্টার পর গত ১১ জুন শাহ আলী থানার নবাবের বাড়ী উত্তরপাড়া এলাকা থেকে আসলাম ও তার ৪ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।

এডিসি সুমা জানান, আসলামকে ধরতে ২ মাসে একাধিক অভিযান চালিয়েছে ডিবি। শেষ পর্যন্ত ১১ জুন তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে ২টি পৃথক মামলা হয়। ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে গত রোববার আদালতে হাজির করে ২ দিনের রিমান্ড হেফাজতে আনা হয়। এদের প্রত্যেকের নামে বিভিন্ন জেলায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।

কোন এলাকায় কার সহযোগিতায় ডাকাতি

মাস্টার বাহিনীর একেক সদস্যের দায়িত্বে একেক জেলা। ওইসব সদস্যরা মাস্টার বাহিনীর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাদের সহযোগিতা নিয়ে ডাকাতির নেতৃত্ব দেন আসলাম। এর মধ্যে কয়েকটি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের নাম পেয়েছে ডিবি পুলিশ।

ডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর এবং গোপলগঞ্জ এলাকা ডাকাত রফিকের নিয়ন্ত্রণে। আসলাম রফিকের সহযোগিতা নিয়ে এসব এলাকায় ডাকাতি করে। অন্যদিকে নরসিংদী কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকা মামুনের নিয়ন্ত্রণে। এসব জেলায় ডাকাতির সময় যখন যাকে দলে নেয়া প্রয়োজন তা ঠিক করে দেয় মামুন। টাঙ্গাইল জামালপুর, নাটোর, পাবনা, বগুড়া এলাকা বাবু ও পলাশের নিয়ন্ত্রণে। এসব এলাকায় ডাকাতির সময় যখন যাকে প্রয়োজন তা ঠিক করে দেয় বাবু ও পলাশ। এছাড়া ঢাকার ধামরাই আশুলিয়া, কালিয়কৈরসহ আশপাশের জেলায় ডাকাতি নিয়ন্ত্রণে করে নয়ন ও মাসুম। আর মনিরের দায়িত্বে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহী জেলা।

আরও খবর
নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে সাড়ে ৮ লাখ শিক্ষককে
অটিজম ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম ঠেকাতে জিনগত ত্রুটি নির্ণয়ে পরীক্ষা চলছে
সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের একক প্রচেষ্টায় স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়
নির্বাচনের সময় ঢাকা থেকে মন্ত্রী-এমপিদের চলে যেতে হবে, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা, পুলিশের এসআই গ্রেপ্তার
আপনি তো ফরিদপুরে ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মূল হোতা
জুরাইনের ঘটনায় যেই অপরাধ করুক, বিচার হবে আপিল বিভাগ
দুর্ধর্ষ আসামি রাসেল, জেল থেকে জামিনে বের হয়ে বন্ধুকে খুন
রাজধানীতে পৃথক স্থান থেকে নারীসহ ৩ জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝি হত্যার মূল হোতাসহ ২ জন গ্রেপ্তার

বুধবার, ১৫ জুন ২০২২ , ১ আষাড় ১৪২৮ ১৫ জিলকদ ১৪৪৩

ডাকাত দল মাস্টার বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৩০ জেলায়

সাইফ বাবলু

কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা মাস্টার নয়। ডাকাতির কলা-কৌশল, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে সফল হওয়ার কারণে তাকে বলা হয় ডাকাতদের মাস্টার। মো. আসলামুল হক আসলাম ওরফে মাস্টার আসলাম গত ১০ বছর ধরে দেশের উত্তর, দক্ষিণ, পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে প্রতিদিনই সড়ক-মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক ডাকাতি করেছে। আসলাম ডাকাতের বাহিনী মাস্টার বাহিনী হিসেবে পরিচিত জেলাগুলোতে।

টাঙ্গাইলের একটি পণ্যবাহী ট্রাকে ডাকাতির মামলার ছায়া তদন্তের সূত্র ধরে ৩০ জেলায় ডাকাতির দলনেতা হিসেবে আসলামুল হক আসলামের খোঁজ পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তেজগাঁও জোনাল টিম। টিমের দলনেতা অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার শাহাদত হোসেন সুমার নেতৃত্বে দলনেতা আসলামকে ৪ সহযোগীসহ গত ১১ জুন গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে রাজধানীর শাহ আলী থানা এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে। গ্রেপ্তার আসলামসহ ডাকাত দলের ৪ সদস্য এখন ডিবিতে রিমান্ড হেফাজতে রয়েছে।

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তঃজেলা ডাকাত দলের একাধিক গ্রুপের মধ্যে মাস্টার বাহিনীও একটি গ্রুপ। যার নেতৃত্বে রয়েছে আসলামুল হক আসলাম। আসলামের বিরুদ্ধে রাজধানীর সবুজবাগ থানা এবং পাবনার আতাইকুলা থানায় মামলা রয়েছে। ওই মামলায় ৫ বার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে গেলেও পরে জামিন পেয়ে যায়। এছাড়া কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা, ঢাকার ধামরাই থানাসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে ৫টি মামলার সন্ধান পাওয়া গেছে। আসলামের সঙ্গে গ্রেপ্তার মকবুল হোসেন প্রকাশ ওরফে বাবুর নামে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনের (সিএমপি) বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে। আরেক সহযোগী মো. রফিক মোল্লা ওরফে রফিক ড্রাইভারের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল, নোয়াখালী, কেরানীগঞ্জ, ময়মনসিংহ এবং রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ১৭ এবং মো. হাসান হাওলাদারের বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে।

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছে, আসলামের নেতৃত্বাধীন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, মির্জাপুর, মানিকগঞ্জ, ধামরাই, সাভার, আশুলিয়া, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকায় নিয়মিত ডাকাতি করে আসছে। এসব জেলাগুলোতে আসলামের নিজস্ব সহযোগী রয়েছে। প্রতিটি জেলায় ডাকাতির নেতৃত্বে থাকে আসলাম। গত ১০ বছরে কত ডাকাতি করেছে তার হিসাবে এখনও পাওয়া যায়নি।

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাস্টার বাহিনীর প্রধান আলসামসহ দলের সদস্যরা পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রিবাহী প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাসগুলো বেশি টার্গেট করে। ডাকাতিকালে তারা বাধার সম্মুখীন হলে চালক বা যাত্রীদের হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করে না। মাস্টার বাহিনীর আতঙ্কে ৩০ জেলায় চালকরা চরম আতঙ্কে থাকে। এসব দলের সদস্যরা ডাকাতি করে ধরা পড়লে জেলে বেশিদিন থাকতে হয় না। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে তারা আবার ডাকাতিতে নামে। গত ১০ বছর ধরে তারা আন্তঃজেলাগুলোতে বাস-ট্রাক ছাড়াও বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও ডাকাতি করেছে।

যে কৌশলে ডাকাতি

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এরা ডাকাতির সময় লেজার লাইট ব্যবহার করে। নির্দিষ্ট জায়গায় এরা পণ্যবাহী ট্রাক দেখলে লেজার লাইট দিয়ে সিগন্যাল দেয়। অন্ধকারে অনেক সময় চালকরা পুলিশের চেকপোস্ট মনে করে গাড়ি থামালে অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে নিজেদের সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যায়। এরপর চালককে মারধর করে ফেলে দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাকসহ মালামাল নিয়ে যায়। ওইসব গাড়ি ব্যবহার করে আবার অন্য জেলায় ডাকাতির কাজে ব্যবহার করে। ডাকাতির মালামাল পার্শ¦বর্তী জেলায় বিক্রি করে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।

যেভাবে মাস্টার বাহিনীর মাস্টার আসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়

ডিবির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার শাহাদত হোসেন সুমা জানান, ২ মাস আগে নাটোরে একটি পণ্যবাহী ট্রাক ডাকাতি হয়। ডাকাতির পর থানায় মামলা হলেও পুলিশ কোন ক্লু খুঁজে পাচ্ছিল না। টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ যোগাযোগ করেন ডিবির তেজগাঁও জোনাল টিমের সঙ্গে। ওই মামলার সূত্র ধরে ডিবির তেজগাঁও জোনাল টিম তদন্ত করে ওই ডাকাতির সঙ্গে মাস্টার বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়। টানা ২ মাস মাস্টার বাহিনীর প্রধান মো. আসলামুল হক আসলামকে ধরতে তৎপর থাকে ডিবি পুলিশ। ২ মাস নানাভাবে চেষ্টার পর গত ১১ জুন শাহ আলী থানার নবাবের বাড়ী উত্তরপাড়া এলাকা থেকে আসলাম ও তার ৪ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।

এডিসি সুমা জানান, আসলামকে ধরতে ২ মাসে একাধিক অভিযান চালিয়েছে ডিবি। শেষ পর্যন্ত ১১ জুন তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে ও ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে ২টি পৃথক মামলা হয়। ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে গত রোববার আদালতে হাজির করে ২ দিনের রিমান্ড হেফাজতে আনা হয়। এদের প্রত্যেকের নামে বিভিন্ন জেলায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে।

কোন এলাকায় কার সহযোগিতায় ডাকাতি

মাস্টার বাহিনীর একেক সদস্যের দায়িত্বে একেক জেলা। ওইসব সদস্যরা মাস্টার বাহিনীর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাদের সহযোগিতা নিয়ে ডাকাতির নেতৃত্ব দেন আসলাম। এর মধ্যে কয়েকটি জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের নাম পেয়েছে ডিবি পুলিশ।

ডিবির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর এবং গোপলগঞ্জ এলাকা ডাকাত রফিকের নিয়ন্ত্রণে। আসলাম রফিকের সহযোগিতা নিয়ে এসব এলাকায় ডাকাতি করে। অন্যদিকে নরসিংদী কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নারায়ণগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকা মামুনের নিয়ন্ত্রণে। এসব জেলায় ডাকাতির সময় যখন যাকে দলে নেয়া প্রয়োজন তা ঠিক করে দেয় মামুন। টাঙ্গাইল জামালপুর, নাটোর, পাবনা, বগুড়া এলাকা বাবু ও পলাশের নিয়ন্ত্রণে। এসব এলাকায় ডাকাতির সময় যখন যাকে প্রয়োজন তা ঠিক করে দেয় বাবু ও পলাশ। এছাড়া ঢাকার ধামরাই আশুলিয়া, কালিয়কৈরসহ আশপাশের জেলায় ডাকাতি নিয়ন্ত্রণে করে নয়ন ও মাসুম। আর মনিরের দায়িত্বে রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং রাজশাহী জেলা।