দুর্ধর্ষ আসামি রাসেল, জেল থেকে জামিনে বের হয়ে বন্ধুকে খুন

কারণ স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে বন্ধুকে বিয়ে করে

সম্প্রতি ডাকাতির মামলায় কারাগারে গিয়েছিল ১৪ মামলার দুর্ধর্ষ আসামি রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেল (৩১)। কারাগারে মাঝেমধ্যেই দেখতে যেত তার স্ত্রী লাবণ্য সিদ্দিকা সাথী। এতে সহায়তা করত রাসেলের বন্ধু রাকিব হোসেন। একপর্যায়ে সাথীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে বন্ধু রাকিবের। পরে রাসেলকে তালাক দিয়ে রাকিবকে বিয়েও করে সাথী। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত রাসেল কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে রাকিবকে খুন করে পালিয়ে যায়। গতকাল ভোরে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগে, গত ১ জুন দুপুর ১২টার দিকে নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের ৩নং ওভার ব্রিজ এলাকায় এলাপাতারি কুপিয়ে খুন করা হয় রাকিব হোসেনকে। গতকাল রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর বলেন, প্রায় ৭ বছর আগে নিজেদের পছন্দে নাটোর সদরের বৌদ্ধনাথপুর এলাকার লাবণ্য সিদ্দিকা সাথী নামে এক তরুণীকে বিয়ে করে রাসেল। তাদের সংসারে পাঁচ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। চলতি বছরের ২৩ মার্চ একটি ডাকাতি মামলায় সে গ্রেপ্তার হয়। তাকে কারাগারে যেতে হয়। রাসেলকে কারাগারে দেখতে যেতে রাকিবের সহযোগিতা নিত সাথী। এতে তাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে রাসেলকে ডিভোর্স দিয়ে রাকিবকে বিয়ে করে নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু করে সাথী। রাসেল কারাগারে বসে বিয়ের খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়। পরম বন্ধু থেকে তারা চরম শত্রুতে পরিণত হয়।

রাকিবের প্রতি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ছক কষতে থাকে রাসেল। গত ৩১ মে সে জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় এসে খুঁজতে থাকে রাকিবকে। পরে গত ১ জুন বেলা আনুমানিক ১২টার দিকে কৌশলে রাকিবকে ডেকে নিয়ে আসে নাটোর রেলওয়ে প্লাটফর্মের ৩নং ওভারব্রিজের উপর। সেখানে রাকিব তার স্ত্রীর সাবেক স্বামী রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেলকে দেখা মাত্রই দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে তার সঙ্গীয় লোকদের সহায়তায় হত্যার উদ্দেশে তার পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় উপস্থিত লোকজন তাকে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে এ ঘটনায় রাকিব হোসেনের বড় ভাই মো. শাকিল হোসেন (২৭) মো. রাসেল ওরফে কাটা রাসেলকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। রাসেলের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, চুরি, নারী নির্যাতন, ও অন্যান্য ধারার আইনে মোট ১৪টি মামলা রয়েছে, যার ১২টি মামলা আদালতে বিচারাধীন বলে জানিয়েছে সিআইডি।

আরও খবর
নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে সাড়ে ৮ লাখ শিক্ষককে
অটিজম ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম ঠেকাতে জিনগত ত্রুটি নির্ণয়ে পরীক্ষা চলছে
ডাকাত দল মাস্টার বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৩০ জেলায়
সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের একক প্রচেষ্টায় স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়
নির্বাচনের সময় ঢাকা থেকে মন্ত্রী-এমপিদের চলে যেতে হবে, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা, পুলিশের এসআই গ্রেপ্তার
আপনি তো ফরিদপুরে ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মূল হোতা
জুরাইনের ঘটনায় যেই অপরাধ করুক, বিচার হবে আপিল বিভাগ
রাজধানীতে পৃথক স্থান থেকে নারীসহ ৩ জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝি হত্যার মূল হোতাসহ ২ জন গ্রেপ্তার

বুধবার, ১৫ জুন ২০২২ , ১ আষাড় ১৪২৮ ১৫ জিলকদ ১৪৪৩

দুর্ধর্ষ আসামি রাসেল, জেল থেকে জামিনে বের হয়ে বন্ধুকে খুন

কারণ স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে বন্ধুকে বিয়ে করে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

সম্প্রতি ডাকাতির মামলায় কারাগারে গিয়েছিল ১৪ মামলার দুর্ধর্ষ আসামি রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেল (৩১)। কারাগারে মাঝেমধ্যেই দেখতে যেত তার স্ত্রী লাবণ্য সিদ্দিকা সাথী। এতে সহায়তা করত রাসেলের বন্ধু রাকিব হোসেন। একপর্যায়ে সাথীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে বন্ধু রাকিবের। পরে রাসেলকে তালাক দিয়ে রাকিবকে বিয়েও করে সাথী। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত রাসেল কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে রাকিবকে খুন করে পালিয়ে যায়। গতকাল ভোরে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাসেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগে, গত ১ জুন দুপুর ১২টার দিকে নাটোর রেলওয়ে স্টেশনের ৩নং ওভার ব্রিজ এলাকায় এলাপাতারি কুপিয়ে খুন করা হয় রাকিব হোসেনকে। গতকাল রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর বলেন, প্রায় ৭ বছর আগে নিজেদের পছন্দে নাটোর সদরের বৌদ্ধনাথপুর এলাকার লাবণ্য সিদ্দিকা সাথী নামে এক তরুণীকে বিয়ে করে রাসেল। তাদের সংসারে পাঁচ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। চলতি বছরের ২৩ মার্চ একটি ডাকাতি মামলায় সে গ্রেপ্তার হয়। তাকে কারাগারে যেতে হয়। রাসেলকে কারাগারে দেখতে যেতে রাকিবের সহযোগিতা নিত সাথী। এতে তাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে রাসেলকে ডিভোর্স দিয়ে রাকিবকে বিয়ে করে নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু করে সাথী। রাসেল কারাগারে বসে বিয়ের খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়। পরম বন্ধু থেকে তারা চরম শত্রুতে পরিণত হয়।

রাকিবের প্রতি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ছক কষতে থাকে রাসেল। গত ৩১ মে সে জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় এসে খুঁজতে থাকে রাকিবকে। পরে গত ১ জুন বেলা আনুমানিক ১২টার দিকে কৌশলে রাকিবকে ডেকে নিয়ে আসে নাটোর রেলওয়ে প্লাটফর্মের ৩নং ওভারব্রিজের উপর। সেখানে রাকিব তার স্ত্রীর সাবেক স্বামী রাসেল হোসেন ওরফে কাটা রাসেলকে দেখা মাত্রই দৌড়ে পালানোর চেষ্টাকালে তার সঙ্গীয় লোকদের সহায়তায় হত্যার উদ্দেশে তার পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় উপস্থিত লোকজন তাকে নাটোর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে এ ঘটনায় রাকিব হোসেনের বড় ভাই মো. শাকিল হোসেন (২৭) মো. রাসেল ওরফে কাটা রাসেলকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। রাসেলের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, চুরি, নারী নির্যাতন, ও অন্যান্য ধারার আইনে মোট ১৪টি মামলা রয়েছে, যার ১২টি মামলা আদালতে বিচারাধীন বলে জানিয়েছে সিআইডি।