রাজধানীতে পৃথক স্থান থেকে নারীসহ ৩ জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

রাজধানীর কদমতলী, কামরাঙ্গীরচর ও রামপুরা থেকে এক নারীসহ তিনজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে পৃথক ঘটনায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনজনই আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। মৃত তিনজন হলেন কদমতলীর ট্রাক হেলপার মাসুদ (৪৫), কামরাঙ্গীরচরের গৃহবধূ ফাহিমা আক্তার বৃষ্টি (২২) ও রামপুরার দিনমজুর মোস্তাক আহমেদ (৩৮)।

মৃত হেলপার মাসুদের ভায়রা সুমন জানান, মাসুদের বাড়ি বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জে। স্ত্রী নাসিমা আক্তার ও এক ছেলেকে নিয়ে কদমতলী জিয়া সরণি খানকা রোড ইসমাইল মোল্লার বাড়িতে থাকতেন। মাসুদ মাদকাসক্ত ছিল। কোন কাজই ঠিকমতো করত না। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। গতকাল সকালেও স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় এবং স্ত্রী নাসিমাকে মারধর করে নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মরদেহ নিতে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে আসেন তার ভাইসহ অন্য আত্মীয়-স্বজন। এ নিয়ে তাদের কোন অভিযোগ নেই বলে জানান। কদমতলী থানার এসআই মহসীন আলী বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কামরাঙ্গীরচরে মৃত বৃষ্টির ফুফাতো ভাই আবদুস সালাম জনি জানান, ৪ বছর আগে স্কুলশিক্ষক রাজু আহমেদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয় বৃষ্টির। ৫ মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে তাদের। পশ্চিম মোমিনবাগ ৭ নম্বর গলির হাজী কামালের বাড়িতে তারা থাকতেন। পারিবারিক বিভিন্ন কারণে রাগ করে মাস খানেক আগে বাবার বাড়িতে চলে যায় বৃষ্টি। এরপর তার স্বামী আবার তাকে বুঝিয়ে বাসায় নিয়ে যান। গত সোমবার রাতে স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয়ে আবারও ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে স্বামী-সন্তান ঘুমিয়ে পড়লে রাত প্রায় ৩টার দিকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। মধ্যরাতে স্বামীর ঘুম ভাঙলে বৃষ্টিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় বলে তাদের কাছে দাবি করেছেন স্বামী। ঝুলন্ত অবস্থা থেকে তাকে নিচে নামিয়ে পরে স্বজনদের খবর দেয় রাজু। তবে কি নিয়ে পারিবারিক কলহ সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি সালাম। এ ঘটনায় মৃতের বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে বৃষ্টির স্বামী রাজু ও শাশুড়ি রেজিয়া বেগমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন। তবে বৃষ্টি ঠিক কি কারণে আত্মহত্যা করেছে, সেটি বাবুল মিয়াও নিশ্চিত নন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কি কারণে আত্মহত্যা করেছে, তা আমি জানি না। কিন্তু আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে থাকলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে তারপর কল করলো কেন। আগেই আমাদের জানাত। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই নুসরাত জাহান নুপুর বলেন, পারিবারিক কলহে আত্মহত্যা করেছে শুনেছি। তবে সঠিক কারণ জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে বেলা ১১টার দিকে রামপুরা তালতলা মেম্বারের গলির ২৮৮/বি নম্বর টিনশেড বাসা থেকে দিনমজুর মোস্তাক আহমেদের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলায়। বাবার নাম সিদ্দিক মোল্লা। রামপুরা থানার এসআই কামরুল হক জিহান জানান, মৃত মোস্তাক দীর্ঘদিন ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। বাড়িতে তিনি এবং পাশের বাড়িতে তার মা ও বোন থাকেন। তিন বছর আগে বিয়ে করলেও তার অসুস্থতার কারণে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। গত সোমবার রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

আরও খবর
নতুন শিক্ষাক্রমের ওপর প্রশিক্ষণ দেয়া হবে সাড়ে ৮ লাখ শিক্ষককে
অটিজম ও বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম ঠেকাতে জিনগত ত্রুটি নির্ণয়ে পরীক্ষা চলছে
ডাকাত দল মাস্টার বাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৩০ জেলায়
সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের একক প্রচেষ্টায় স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়
নির্বাচনের সময় ঢাকা থেকে মন্ত্রী-এমপিদের চলে যেতে হবে, প্রশ্ন তথ্যমন্ত্রীর
স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা, পুলিশের এসআই গ্রেপ্তার
আপনি তো ফরিদপুরে ২ হাজার কোটি টাকা পাচারের মূল হোতা
জুরাইনের ঘটনায় যেই অপরাধ করুক, বিচার হবে আপিল বিভাগ
দুর্ধর্ষ আসামি রাসেল, জেল থেকে জামিনে বের হয়ে বন্ধুকে খুন
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হেড মাঝি হত্যার মূল হোতাসহ ২ জন গ্রেপ্তার

বুধবার, ১৫ জুন ২০২২ , ১ আষাড় ১৪২৮ ১৫ জিলকদ ১৪৪৩

রাজধানীতে পৃথক স্থান থেকে নারীসহ ৩ জনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর কদমতলী, কামরাঙ্গীরচর ও রামপুরা থেকে এক নারীসহ তিনজনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার সকালে পৃথক ঘটনায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, পারিবারিক অশান্তির কারণে তিনজনই আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। মৃত তিনজন হলেন কদমতলীর ট্রাক হেলপার মাসুদ (৪৫), কামরাঙ্গীরচরের গৃহবধূ ফাহিমা আক্তার বৃষ্টি (২২) ও রামপুরার দিনমজুর মোস্তাক আহমেদ (৩৮)।

মৃত হেলপার মাসুদের ভায়রা সুমন জানান, মাসুদের বাড়ি বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জে। স্ত্রী নাসিমা আক্তার ও এক ছেলেকে নিয়ে কদমতলী জিয়া সরণি খানকা রোড ইসমাইল মোল্লার বাড়িতে থাকতেন। মাসুদ মাদকাসক্ত ছিল। কোন কাজই ঠিকমতো করত না। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। গতকাল সকালেও স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হয় এবং স্ত্রী নাসিমাকে মারধর করে নিজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। মরদেহ নিতে ঢামেক হাসপাতাল মর্গে আসেন তার ভাইসহ অন্য আত্মীয়-স্বজন। এ নিয়ে তাদের কোন অভিযোগ নেই বলে জানান। কদমতলী থানার এসআই মহসীন আলী বলেন, পারিবারিক কলহের কারণে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কামরাঙ্গীরচরে মৃত বৃষ্টির ফুফাতো ভাই আবদুস সালাম জনি জানান, ৪ বছর আগে স্কুলশিক্ষক রাজু আহমেদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয় বৃষ্টির। ৫ মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে তাদের। পশ্চিম মোমিনবাগ ৭ নম্বর গলির হাজী কামালের বাড়িতে তারা থাকতেন। পারিবারিক বিভিন্ন কারণে রাগ করে মাস খানেক আগে বাবার বাড়িতে চলে যায় বৃষ্টি। এরপর তার স্বামী আবার তাকে বুঝিয়ে বাসায় নিয়ে যান। গত সোমবার রাতে স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক বিষয়ে আবারও ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে স্বামী-সন্তান ঘুমিয়ে পড়লে রাত প্রায় ৩টার দিকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় সে। মধ্যরাতে স্বামীর ঘুম ভাঙলে বৃষ্টিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় বলে তাদের কাছে দাবি করেছেন স্বামী। ঝুলন্ত অবস্থা থেকে তাকে নিচে নামিয়ে পরে স্বজনদের খবর দেয় রাজু। তবে কি নিয়ে পারিবারিক কলহ সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি সালাম। এ ঘটনায় মৃতের বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে বৃষ্টির স্বামী রাজু ও শাশুড়ি রেজিয়া বেগমের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেছেন। তবে বৃষ্টি ঠিক কি কারণে আত্মহত্যা করেছে, সেটি বাবুল মিয়াও নিশ্চিত নন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কি কারণে আত্মহত্যা করেছে, তা আমি জানি না। কিন্তু আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে থাকলে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে তারপর কল করলো কেন। আগেই আমাদের জানাত। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই নুসরাত জাহান নুপুর বলেন, পারিবারিক কলহে আত্মহত্যা করেছে শুনেছি। তবে সঠিক কারণ জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে বেলা ১১টার দিকে রামপুরা তালতলা মেম্বারের গলির ২৮৮/বি নম্বর টিনশেড বাসা থেকে দিনমজুর মোস্তাক আহমেদের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলায়। বাবার নাম সিদ্দিক মোল্লা। রামপুরা থানার এসআই কামরুল হক জিহান জানান, মৃত মোস্তাক দীর্ঘদিন ধরে জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। বাড়িতে তিনি এবং পাশের বাড়িতে তার মা ও বোন থাকেন। তিন বছর আগে বিয়ে করলেও তার অসুস্থতার কারণে স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। গত সোমবার রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।