পাইলিং কাজে ব্যবহৃত হয়েছে সবচেয়ে বড় হ্যামার

পাথর লেগেছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ ঘনমিটার

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আর মাত্র ৯ দিন বাকি। ইতোমধ্যে সেতুর সব ধরনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৮ টন লোহা বা স্টিল প্লেট। এ প্রকল্পে শুধু ইট লেগেছে এক কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৪টি। পাথর লেগেছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ ঘনমিটার। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যামারটি। পদ্মা সেতু পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহার হয়েছে ৩ হাজার কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি হাইড্রোলিক হ্যামার। এই হ্যামারটি নেদারল্যান্ডস থেকে আনা হয়েছিল বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে ২৯৪টি পাইল রয়েছে। এসব পাইলের গড় গভীরতা ১২২ মিটার; যা ৪০ তলা ভবনের সমান। নদীর তলদেশের মাটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় ২২টি পিয়ারেরর ৭১টি পাইলে স্কিন গ্রাউট করতে হয়েছে। পাইলের ডায়ামিটারের আয়তন তিন মিটার। পদ্মা সেতুর পাইলিং কাজে গতি বাড়াতে ২০১৭ সালের জুন মাসে এই হ্যামারটি আনা হয় প্রকল্প এলাকায়। পদ্মা সেতুর কাজের জন্য মোট চারটি হাইড্রোলিক হ্যামার (হাতুরি) ব্যবহার করা হয়। অন্য তিনটি হ্যামার ছিল এক হাজার, ২ হাজার ও ২ হাজার ৪০০ কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন। এর মধ্যে এক হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামারটি শুধু প্লাটফর্ম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে। বাকি দুটি হ্যামার দিয়ে মূল পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দুই পারে একসঙ্গে পাইলিং করতে সমস্যা দেখা দেয়। তাই ২০১৭ সালে জুন মাসে ৩ হাজার কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন হ্যামারটি আনা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

এ বিষয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, ‘নেদারল্যান্ডস থেকে হ্যামারটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার ছিল। ২০১৭ সালে গত ২৭ এপ্রিল নেদারল্যান্ডসে পোর্ট অব রটারড্যাম থেকে রওনা দিয়ে ৩৯ দিন শেষে মাওয়ায় আনা হয়েছিল হ্যামারটি। পদ্মা সেতুর নির্মাণস্থলে জাহাজে করে ডেনমার্ক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামারটি।’ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, মাটির নিচ থেকে পানির কিছুটা উপর স্তর পর্যন্ত পাইলের অবস্থান। কয়েকটি পাইলের উপর একটি করে পাইল ক্যাপ বসানো হয়েছে। ওই ক্যাপের উপর সেতুর পিয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুতে মোট পিয়ার রয়েছে ৪২টি। পিয়ারের উপর এমন উচ্চতায় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, ১৮ দশমিক ৩ মিটার উচ্চতার জাহাজ অনায়াসে সেতুর নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, মূল সেতু, নদীশাসন ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ টন। স্টিল প্লেট ও ডিফরমড বার ব্যবহার করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৮ টন। সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৯ টন। সাধারণত সিমেন্ট ব্যাগ হিসেবে পরিবহন করা হয়। এ সেতুতে অনেক পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার হওয়ায় তা টনে হিসাব করা হয়েছে।

বিশেষ ধরনের মাইক্রোফাইন সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে দুই হাজার ১১৪ টন। প্রকল্পে ইট লেগেছে এক কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৪ পিস। নদীশাসনে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এক কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার ৫২১টি। আর কংক্রিট ব্লক ফেলা হয়েছে ৮০ লাখ পিস।

সেতু বিভাগের সূত্র জানায়, প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত স্টিলের সব কাঠামো চীন থেকে আনা হয়েছে। রেলের গার্ডার (স্ট্রিনজার) এসেছে লুক্সেমবার্গ থেকে। প্রকল্পে যত রড ব্যবহৃত হয়েছে, এর সবই বাংলাদেশি। এ ছাড়া সিমেন্টও সব বাংলাদেশ থেকেই ব্যবহার করা হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া থেকে কিছু অতি মিহি সিমেন্টও ব্যবহৃত হয়েছে। সংযোগ সড়কসহ কিছু স্থাপনা নির্মাণে মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনি থেকে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। এর বাইরে বেশির ভাগ পাথর ব্যবহৃত হয়েছে ভারত, দুবাই, ওমান ও ভিয়েতনামের।

পৃথিবীতে যত বড় ড্রেজার ব্যবহৃত হচ্ছে, এর অন্তত তিনটি পদ্মা সেতুর কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলো নেদারল্যান্ডস থেকে আনা হয়। পাইল বসানোর জন্য হাইড্রোলিক হাতুড়ি (হ্যামার) এসেছে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস থেকে। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে আনা যন্ত্রপাতিও ব্যবহৃত হয়েছে। আর বাকি সব যন্ত্রপাতি চীনের। বিভিন্ন সময় ১৭টি বড় বড় ক্রেন ও ভারী যন্ত্রপাতি একসঙ্গে কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেনটি ছিল ৩ হাজার ৬০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন। এটি দিয়েই ৩ হাজার ২০০ টন ওজনের ইস্পাতের স্প্যান বসানো হয়েছে।

প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে (খুঁটিতে) সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো) বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয় পুরো সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি।

এ বিষয়ে সম্প্রতি মাওয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে এমন কিছু উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে যা বিশ্বের অন্য কোন সেতুতে ব্যবহার করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দিক দিয়ে পদ্মা সেতু বিশ্বের রেকর্ড করেছে। ভূমিকম্প বেয়ারিং টেস্টিং করার জন্য চীন থেকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে এবং আসতে শুধু প্লেন ভাড়াই খরচ হয়েছে দুই কোটি টাকা। এ সেতু নির্মাণে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্যামার ব্যবহার করা হয়েছে। সেতুর পাইল ১২২ মিটার লম্বা ও এর ডায়ামিটারের আয়তন তিন মিটার। বিশ্বের কোন সেতুতে এ ধরনের পাইল ব্যবহার করা হয়নি।’

বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২ , ২ আষাড় ১৪২৮ ১৬ জিলকদ ১৪৪৩

আর ৯ দিন

পাইলিং কাজে ব্যবহৃত হয়েছে সবচেয়ে বড় হ্যামার

পাথর লেগেছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ ঘনমিটার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আর মাত্র ৯ দিন বাকি। ইতোমধ্যে সেতুর সব ধরনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যবহার করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৮ টন লোহা বা স্টিল প্লেট। এ প্রকল্পে শুধু ইট লেগেছে এক কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৪টি। পাথর লেগেছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ ঘনমিটার। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় হ্যামারটি। পদ্মা সেতু পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহার হয়েছে ৩ হাজার কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন একটি হাইড্রোলিক হ্যামার। এই হ্যামারটি নেদারল্যান্ডস থেকে আনা হয়েছিল বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুতে ২৯৪টি পাইল রয়েছে। এসব পাইলের গড় গভীরতা ১২২ মিটার; যা ৪০ তলা ভবনের সমান। নদীর তলদেশের মাটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় ২২টি পিয়ারেরর ৭১টি পাইলে স্কিন গ্রাউট করতে হয়েছে। পাইলের ডায়ামিটারের আয়তন তিন মিটার। পদ্মা সেতুর পাইলিং কাজে গতি বাড়াতে ২০১৭ সালের জুন মাসে এই হ্যামারটি আনা হয় প্রকল্প এলাকায়। পদ্মা সেতুর কাজের জন্য মোট চারটি হাইড্রোলিক হ্যামার (হাতুরি) ব্যবহার করা হয়। অন্য তিনটি হ্যামার ছিল এক হাজার, ২ হাজার ও ২ হাজার ৪০০ কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন। এর মধ্যে এক হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামারটি শুধু প্লাটফর্ম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে। বাকি দুটি হ্যামার দিয়ে মূল পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দুই পারে একসঙ্গে পাইলিং করতে সমস্যা দেখা দেয়। তাই ২০১৭ সালে জুন মাসে ৩ হাজার কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন হ্যামারটি আনা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

এ বিষয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, ‘নেদারল্যান্ডস থেকে হ্যামারটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার ছিল। ২০১৭ সালে গত ২৭ এপ্রিল নেদারল্যান্ডসে পোর্ট অব রটারড্যাম থেকে রওনা দিয়ে ৩৯ দিন শেষে মাওয়ায় আনা হয়েছিল হ্যামারটি। পদ্মা সেতুর নির্মাণস্থলে জাহাজে করে ডেনমার্ক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামারটি।’ সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, মাটির নিচ থেকে পানির কিছুটা উপর স্তর পর্যন্ত পাইলের অবস্থান। কয়েকটি পাইলের উপর একটি করে পাইল ক্যাপ বসানো হয়েছে। ওই ক্যাপের উপর সেতুর পিয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুতে মোট পিয়ার রয়েছে ৪২টি। পিয়ারের উপর এমন উচ্চতায় সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, ১৮ দশমিক ৩ মিটার উচ্চতার জাহাজ অনায়াসে সেতুর নিচ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, মূল সেতু, নদীশাসন ও সংযোগ সড়ক নির্মাণে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে ৩২ লাখ ৩৭ হাজার ১৩০ টন। স্টিল প্লেট ও ডিফরমড বার ব্যবহার করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ১৬৮ টন। সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮১৯ টন। সাধারণত সিমেন্ট ব্যাগ হিসেবে পরিবহন করা হয়। এ সেতুতে অনেক পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার হওয়ায় তা টনে হিসাব করা হয়েছে।

বিশেষ ধরনের মাইক্রোফাইন সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে দুই হাজার ১১৪ টন। প্রকল্পে ইট লেগেছে এক কোটি ২০ লাখ ৯৭ হাজার ৯১৪ পিস। নদীশাসনে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে এক কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার ৫২১টি। আর কংক্রিট ব্লক ফেলা হয়েছে ৮০ লাখ পিস।

সেতু বিভাগের সূত্র জানায়, প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত স্টিলের সব কাঠামো চীন থেকে আনা হয়েছে। রেলের গার্ডার (স্ট্রিনজার) এসেছে লুক্সেমবার্গ থেকে। প্রকল্পে যত রড ব্যবহৃত হয়েছে, এর সবই বাংলাদেশি। এ ছাড়া সিমেন্টও সব বাংলাদেশ থেকেই ব্যবহার করা হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া থেকে কিছু অতি মিহি সিমেন্টও ব্যবহৃত হয়েছে। সংযোগ সড়কসহ কিছু স্থাপনা নির্মাণে মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনি থেকে পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। এর বাইরে বেশির ভাগ পাথর ব্যবহৃত হয়েছে ভারত, দুবাই, ওমান ও ভিয়েতনামের।

পৃথিবীতে যত বড় ড্রেজার ব্যবহৃত হচ্ছে, এর অন্তত তিনটি পদ্মা সেতুর কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলো নেদারল্যান্ডস থেকে আনা হয়। পাইল বসানোর জন্য হাইড্রোলিক হাতুড়ি (হ্যামার) এসেছে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস থেকে। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকে আনা যন্ত্রপাতিও ব্যবহৃত হয়েছে। আর বাকি সব যন্ত্রপাতি চীনের। বিভিন্ন সময় ১৭টি বড় বড় ক্রেন ও ভারী যন্ত্রপাতি একসঙ্গে কাজ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেনটি ছিল ৩ হাজার ৬০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন। এটি দিয়েই ৩ হাজার ২০০ টন ওজনের ইস্পাতের স্প্যান বসানো হয়েছে।

প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিয়ারে (খুঁটিতে) সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান (ইস্পাতের কাঠামো) বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে দৃশ্যমান হয় পুরো সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পটি।

এ বিষয়ে সম্প্রতি মাওয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, পদ্মা সেতু নির্মাণে এমন কিছু উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে যা বিশ্বের অন্য কোন সেতুতে ব্যবহার করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন দিক দিয়ে পদ্মা সেতু বিশ্বের রেকর্ড করেছে। ভূমিকম্প বেয়ারিং টেস্টিং করার জন্য চীন থেকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে এবং আসতে শুধু প্লেন ভাড়াই খরচ হয়েছে দুই কোটি টাকা। এ সেতু নির্মাণে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হ্যামার ব্যবহার করা হয়েছে। সেতুর পাইল ১২২ মিটার লম্বা ও এর ডায়ামিটারের আয়তন তিন মিটার। বিশ্বের কোন সেতুতে এ ধরনের পাইল ব্যবহার করা হয়নি।’