সিলেটে ফের বন্যা, তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে আবারও সিলেটের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় তিন লাখ মানুষ। গত কয়েক দিনের মতো গতকাল ভোর থেকে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পানি ক্রমশ বাড়ছে। এরই মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার তিন শতাধিক গ্রাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।

এর আগে গত ১৫ মে থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী ছিলেন। সেই সময় নগরীতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। সেই দুর্ভোগের রেশ কাটতে না কাটতে নতুন করে বন্যার কবলে পড়েছেন মানুষ। গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর তীরবর্তী নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে ইতোমধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। নগরীর পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত কালিঘাট ও মহাপট্টিতে নদী তীরবর্তী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আবারো পানি ঢুকেছে। এক মাস আগের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেয়ার আগে আরেক দফা বন্যায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কালিঘাটের ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাস টুকু।

সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৯টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময় কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে দশমিক ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সারিঘাটে সারি নদী বিপদসীমার দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে সব ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের ৯০ শতাংশ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এই উপজেলার সদর, পূর্ব ও পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীর গাও, রুস্তমপুর, তোয়াকুল, লেংগুড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান জানান, এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ও পশ্চিম, চতুল, সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে কানাইঘাট পৌর শহরের পূর্ব বাজারে পানি প্রবেশ করায় অনেক দোকানপাট তলিয়ে গেছে। সীমান্তবর্তী আরেক উপজেলা জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে শত শত মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, উপজেলা সদরের রাস্তায় পানি উঠেছে।

বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন ২০২২ , ২ আষাড় ১৪২৮ ১৬ জিলকদ ১৪৪৩

সিলেটে ফের বন্যা, তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

প্রতিনিধি, সিলেট

image

বন্যায় ফের ডুবছে সিলেটের বিভিন্ন গ্রাম -ইদ্রিছ আলী

ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে আবারও সিলেটের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় তিন লাখ মানুষ। গত কয়েক দিনের মতো গতকাল ভোর থেকে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পানি ক্রমশ বাড়ছে। এরই মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার তিন শতাধিক গ্রাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।

এর আগে গত ১৫ মে থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী ছিলেন। সেই সময় নগরীতেও বিপুল সংখ্যক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছিলেন। সেই দুর্ভোগের রেশ কাটতে না কাটতে নতুন করে বন্যার কবলে পড়েছেন মানুষ। গোয়াইনঘাট উপজেলায় বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর তীরবর্তী নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে ইতোমধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। নগরীর পাইকারি বাজার হিসেবে পরিচিত কালিঘাট ও মহাপট্টিতে নদী তীরবর্তী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আবারো পানি ঢুকেছে। এক মাস আগের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি সামাল দেয়ার আগে আরেক দফা বন্যায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কালিঘাটের ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাস টুকু।

সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৯টায় সুরমা নদী কানাইঘাট পয়েন্টে দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময় কুশিয়ারা নদী ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে দশমিক ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সারিঘাটে সারি নদী বিপদসীমার দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে সব ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের ৯০ শতাংশ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এই উপজেলার সদর, পূর্ব ও পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীর গাও, রুস্তমপুর, তোয়াকুল, লেংগুড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান জানান, এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ও পশ্চিম, চতুল, সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে কানাইঘাট পৌর শহরের পূর্ব বাজারে পানি প্রবেশ করায় অনেক দোকানপাট তলিয়ে গেছে। সীমান্তবর্তী আরেক উপজেলা জকিগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলোতে শত শত মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।

সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, উপজেলা সদরের রাস্তায় পানি উঠেছে।