ফের বাড়ছে করোনা

ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। একই সঙ্গে বাড়ছে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার। পাশ^বর্তী দেশ ভারতেও করোনা সংক্রমণ পুনরায় বাড়তে শুরু করেছে। চলতি মাসের প্রথমদিকে দেশেও দৈনিক শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা তিন অঙ্কের ঘরে ছিল, শনাক্তের হারও এক শতাংশের নিচে ছিল।

গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিনশ’ ছাড়িয়ে গেছে। এই সময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল পৌনে ছয় শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার চার শতাংশেরও কম ছিল।

দেশে করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও বাড়ছে-জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আশপাশের দেশগুলোতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। তিনি সবাইকে করোনা প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল সচিবালয়ে দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, শীঘ্রই নিয়ে নিন। কারণ, করোনা কিছুটা হলেও বাড়তি আমাদের দেশে।’

আশপাশের দেশগুলোতেও সংক্রমণ বাড়ছে-উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বুস্টার ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তাই আমরা আহ্বান করবো, যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, অতি শীঘ্রই নিয়ে নিন।’

গত কয়েক মাস ধরেই দেশে করোনা শনাক্তের হার এক শতাংশের নিচে ছিল। দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও দুই অঙ্কে নেমে এসেছিল। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে এটি বাড়ছে। একদিনের ব্যবধানে শনাক্তের হার দুই শতাংশ বেড়ে পৌনে ছয় শতাংশে পৌঁছেছে।

জনস্বাস্থবিদরা বিভিন্ন সময় বলে আসছেন, করোনা শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে থাকলে সেটাকে ‘নিরাপদ’ সীমা বলা যায়। আর পাঁচ শতাংশের ওপরে থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়। এর ভিত্তিতেই করোনা প্রতিরোধে বিধি-নিষেধ কতটা কী দেয়া দরকার তা ঠিক করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৫৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় ৩৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। এদিন করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে কারোর মৃত্যু হয়নি। ফলে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ১৩১ জনই রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ একদিনে সারাদেশের ল্যাবরেটরিতে ছয় হাজার ২০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার পাঁচ দশমিক ৭৬ শতাংশ। কোভিড-১৯ মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার দাঁড়ালো ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর মধ্যে একদিনে সেরে উঠেছেন ১১৪ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ পাঁচ হাজার ৬১৮ জন। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর দশ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

ভারতে একদিনে শনাক্ত বাড়লে ৪০ শতাংশ

ভারতেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সাড়ে তিন মাসের মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে সর্বোচ্চ ১২ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও ফের দুই অঙ্কের ঘরে উঠেছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ একদিনে কোভিড শনাক্তের সংখ্যা আট হাজার থেকে বেড়ে ১২ হাজার ২১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ফেব্রুয়ারির পর ভারতে এই প্রথম ভারতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজারের গন্ডি ছাড়ালো।

করোনা মহামারীর শুরু থেকে এ নিয়ে দেশটিতে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৩২ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩০ জনে।

শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২ , ৩ আষাড় ১৪২৮ ১৭ জিলকদ ১৪৪৩

ফের বাড়ছে করোনা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

মাস্ক পড়া অতি জরুরি, অনেকে ছেড়ে দিয়েছেন অনেকে পরা শুরু করেছেন -সংবাদ

ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। একই সঙ্গে বাড়ছে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার। পাশ^বর্তী দেশ ভারতেও করোনা সংক্রমণ পুনরায় বাড়তে শুরু করেছে। চলতি মাসের প্রথমদিকে দেশেও দৈনিক শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা তিন অঙ্কের ঘরে ছিল, শনাক্তের হারও এক শতাংশের নিচে ছিল।

গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিনশ’ ছাড়িয়ে গেছে। এই সময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ছিল পৌনে ছয় শতাংশ। এর আগের দিন শনাক্তের হার চার শতাংশেরও কম ছিল।

দেশে করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও বাড়ছে-জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আশপাশের দেশগুলোতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। তিনি সবাইকে করোনা প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল সচিবালয়ে দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, শীঘ্রই নিয়ে নিন। কারণ, করোনা কিছুটা হলেও বাড়তি আমাদের দেশে।’

আশপাশের দেশগুলোতেও সংক্রমণ বাড়ছে-উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বুস্টার ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তাই আমরা আহ্বান করবো, যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, অতি শীঘ্রই নিয়ে নিন।’

গত কয়েক মাস ধরেই দেশে করোনা শনাক্তের হার এক শতাংশের নিচে ছিল। দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও দুই অঙ্কে নেমে এসেছিল। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে এটি বাড়ছে। একদিনের ব্যবধানে শনাক্তের হার দুই শতাংশ বেড়ে পৌনে ছয় শতাংশে পৌঁছেছে।

জনস্বাস্থবিদরা বিভিন্ন সময় বলে আসছেন, করোনা শনাক্তের হার পাঁচ শতাংশের নিচে থাকলে সেটাকে ‘নিরাপদ’ সীমা বলা যায়। আর পাঁচ শতাংশের ওপরে থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়। এর ভিত্তিতেই করোনা প্রতিরোধে বিধি-নিষেধ কতটা কী দেয়া দরকার তা ঠিক করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩৫৭ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় ৩৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এ নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত মোট ১৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৯৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। এদিন করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে কারোর মৃত্যু হয়নি। ফলে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ১৩১ জনই রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সর্বশেষ একদিনে সারাদেশের ল্যাবরেটরিতে ছয় হাজার ২০০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার পাঁচ দশমিক ৭৬ শতাংশ। কোভিড-১৯ মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার দাঁড়ালো ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর মধ্যে একদিনে সেরে উঠেছেন ১১৪ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ পাঁচ হাজার ৬১৮ জন। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর দশ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়।

ভারতে একদিনে শনাক্ত বাড়লে ৪০ শতাংশ

ভারতেও লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সাড়ে তিন মাসের মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে সর্বোচ্চ ১২ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। করোনায় মৃত্যুর সংখ্যাও ফের দুই অঙ্কের ঘরে উঠেছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ একদিনে কোভিড শনাক্তের সংখ্যা আট হাজার থেকে বেড়ে ১২ হাজার ২১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ফেব্রুয়ারির পর ভারতে এই প্রথম ভারতে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজারের গন্ডি ছাড়ালো।

করোনা মহামারীর শুরু থেকে এ নিয়ে দেশটিতে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৩২ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩০ জনে।