বজ্রপাতে এক জেলায় ৫ জনসহ ৭ জনের মৃত্যু

ময়মনসিংহে একদিনে পৃথক বজ্রপাতে তিন শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলার সদর উপজেলা ও নান্দাইল উপজেলায় এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টির সঙ্গে ঘন ঘন বজ্রপাত ঘটায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জেলার সদর উপজেলার দড়ি কুষ্টিয়া গ্রামের কৃষক বাক্কার হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেন এবং নান্দাইল উপজেলার গাঙ্গাইল ইউনিয়নের কংকরহাটি গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে সাঈদ মিয়া (১২), হাদিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১১) ও বিল্লাল হোসেনের ছেলে শাওন (৮) বজ্রপাতে মৃত্যুর শিকার হন। নান্দাইলের তিন শিশুই মাদ্রাসা ছাত্র ছিল।

সদর উপজেলার দড়িকুষ্টিয়া গ্রামের দুই কৃষক গতকাল দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে ব্রহ্মপুত্র নদের একটি নালায় মাছ ধরতে যায়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ কোতয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বজ্রপাতে দুই কৃষক নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে নান্দাইলের গাঙ্গাইল ইউনিয়নের কংকরহাটি গ্রামের ইউপি সদস্য মো. গোলাপ হোসেন জানান, দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে ওই তিন শিশু এক সঙ্গে মাছ ধরতে যায়। দুইটার দিকে হঠাৎ বজ্রপাতে তিন শিশু গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দুইজনকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একজন কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে গত কয়েক দিন ধরেই ময়মনসিংহ অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে ঘনঘন বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। এখন আকাশে মেঘ দেখলেই মানুষ বজ্রপাতের আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।

জেলা বার্তা পরিবেশক , রাজশাহী

রাজশাহীতে পৃথক ঘটনায় বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বজ্রপাতে নাদিরা আক্তার (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের পূর্ব বামনাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নাদিরা গোদাগাড়ীর পূর্ব বামনাইল গ্রামের পাতাল আলী মেয়ে। তিনি বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। স্থানীয়রা জানায়, নিহত নাদিরা বাড়িতে গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। তার গরু প্রতিদিন মাঠে বেঁধে দিয়ে আসে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছ হয়। এই সময় তিনি মাঠে গরু আনতে যান। মাঠ থেকে ফেরার পথে হঠাৎ বজ্রপাত হলে সেখানেই তিনি মারা যান।

এদিকে রাজশাহীর মোহনপুরে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টার দিকে উপজেলার আমগাছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর উপজেলার আমগাছি গ্রামের মো. কাউছার আলীর ছেলে রাব্বি হোসেন (১২)।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশের একটি খোলা জায়গায় কয়েকজন কিশোর ফুটবল খেলছিল। বেলা ১২টার দিকে বিকট শব্দে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই কিশোরকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখে অন্যরা চিৎকার করতে থাকে। পরে বাড়ি থেকে লোকজন মাঠে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। রাব্বি হোসেনকে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মোহনপুর থানার ওসি মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। এটি ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর ঘটনা।

প্রতিনিধি বগুড়া : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কোমারভোগ গ্রামে বজ্রপাতে জহুরুল ইসলাম (২১) নামের এক যুবক মারা গেছে। সে ওই গ্রামের মসলিম উদ্দিনের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বৃষ্টির সময় জহুরুল কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে তাদের মরিচ খেত পরিচর্যার জন্য যাচ্ছিল। এ সময় বজ্রপাত ঘটলে তার সারা শরীর ঝলসে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আদমদীঘি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শনিবার, ১৮ জুন ২০২২ , ৪ আষাড় ১৪২৮ ১৮ জিলকদ ১৪৪৩

বজ্রপাতে এক জেলায় ৫ জনসহ ৭ জনের মৃত্যু

জেলা বার্তা পরিবেশক, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহে একদিনে পৃথক বজ্রপাতে তিন শিশুসহ ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে জেলার সদর উপজেলা ও নান্দাইল উপজেলায় এই বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টির সঙ্গে ঘন ঘন বজ্রপাত ঘটায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জেলার সদর উপজেলার দড়ি কুষ্টিয়া গ্রামের কৃষক বাক্কার হোসেন ও জাহাঙ্গীর হোসেন এবং নান্দাইল উপজেলার গাঙ্গাইল ইউনিয়নের কংকরহাটি গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে সাঈদ মিয়া (১২), হাদিস মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১১) ও বিল্লাল হোসেনের ছেলে শাওন (৮) বজ্রপাতে মৃত্যুর শিকার হন। নান্দাইলের তিন শিশুই মাদ্রাসা ছাত্র ছিল।

সদর উপজেলার দড়িকুষ্টিয়া গ্রামের দুই কৃষক গতকাল দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে ব্রহ্মপুত্র নদের একটি নালায় মাছ ধরতে যায়। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। ময়মনসিংহ কোতয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ বজ্রপাতে দুই কৃষক নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে নান্দাইলের গাঙ্গাইল ইউনিয়নের কংকরহাটি গ্রামের ইউপি সদস্য মো. গোলাপ হোসেন জানান, দুপুরে বৃষ্টিতে ভিজে ওই তিন শিশু এক সঙ্গে মাছ ধরতে যায়। দুইটার দিকে হঠাৎ বজ্রপাতে তিন শিশু গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দুইজনকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও একজন কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে গত কয়েক দিন ধরেই ময়মনসিংহ অঞ্চলে বৃষ্টির সঙ্গে ঘনঘন বজ্রপাতের ঘটনা ঘটছে। এখন আকাশে মেঘ দেখলেই মানুষ বজ্রপাতের আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।

জেলা বার্তা পরিবেশক , রাজশাহী

রাজশাহীতে পৃথক ঘটনায় বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বজ্রপাতে নাদিরা আক্তার (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের পূর্ব বামনাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নাদিরা গোদাগাড়ীর পূর্ব বামনাইল গ্রামের পাতাল আলী মেয়ে। তিনি বাবার বাড়িতে বসবাস করতেন। স্থানীয়রা জানায়, নিহত নাদিরা বাড়িতে গরু পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে। তার গরু প্রতিদিন মাঠে বেঁধে দিয়ে আসে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছ হয়। এই সময় তিনি মাঠে গরু আনতে যান। মাঠ থেকে ফেরার পথে হঠাৎ বজ্রপাত হলে সেখানেই তিনি মারা যান।

এদিকে রাজশাহীর মোহনপুরে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টার দিকে উপজেলার আমগাছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোর উপজেলার আমগাছি গ্রামের মো. কাউছার আলীর ছেলে রাব্বি হোসেন (১২)।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশের একটি খোলা জায়গায় কয়েকজন কিশোর ফুটবল খেলছিল। বেলা ১২টার দিকে বিকট শব্দে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই কিশোরকে মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখে অন্যরা চিৎকার করতে থাকে। পরে বাড়ি থেকে লোকজন মাঠে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। রাব্বি হোসেনকে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মোহনপুর থানার ওসি মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। এটি ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর ঘটনা।

প্রতিনিধি বগুড়া : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের কোমারভোগ গ্রামে বজ্রপাতে জহুরুল ইসলাম (২১) নামের এক যুবক মারা গেছে। সে ওই গ্রামের মসলিম উদ্দিনের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় বৃষ্টির সময় জহুরুল কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে তাদের মরিচ খেত পরিচর্যার জন্য যাচ্ছিল। এ সময় বজ্রপাত ঘটলে তার সারা শরীর ঝলসে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আদমদীঘি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।