তালা ঝুলানোর অপসংস্কৃতি বন্ধ হোক

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ ঝরে পড়েছে করোনার প্রকোপে। বেসরকারি সংস্থা গণস্বাক্ষরতা অভিযান তাদের ‘এডুকেশন ওয়াচ’ রিপোর্টে বলেছে, করোনার সময় দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শকরা ৬৯.৫ ভাগ শিক্ষার্থী অলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারেনি। টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসেও অংশগ্রহণ করতে পারেনি অনেকে। অংশগ্রহণ না করার এই হার শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে বেশি। তাদের জরিপ বলছে, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া এবং অনুপস্থিতি বাড়বে। করোনার কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব সহনশীল মাত্রায় ছিল না। যার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর।

বেসরকারি সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলছে, করোনায় বাংলাদেশ দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়েছে। আগে এটা ছিলো ২০.৫ শতাংশ। চরম দরিদ্র অবস্থার মধ্যে আছেন ২৮.৫ শতাংশ মানুষ। করোনায় বাল্য বিয়েও বেড়েছে। করোনার মাঝে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকে আত্মহত্যাও করেন।

প্রকৃতি সৃষ্ট দুর্যোগ করোনার কবলে শিক্ষার্থীদের সুন্দর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে মূল্যবান দেড় বছর। সব কিছু পিছনে ফেলে যখন সবাই ঘুরে দাঁড়াতে সংকল্পবদ্ধ তখনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দুয়ারে কড়া নাড়ে তালা লাগানোর সংস্কৃতি। তালা লাগানোর সংস্কৃতি বহুল আলোচিত এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ। যা রীতিমতো সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারও ব্যক্তিগত সমস্যা, ক্লাসরুম নিয়ে সমস্যা, কর্মচারীদের নিজস্ব স্বার্থ, কর্মকর্তাদের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিকসহ যে কোন কিছু হলে তালা ঝুলিয়ে পুরো একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এতে কারও চলমান পরীক্ষা স্থগিত, ক্লাস স্থগিত হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের এই দুঃসময়ে যা কখনোই কাম্য নয়। এই বাজে সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সুন্দর সমাধান খোঁজা এখন সময়ের দাবি।

জুবায়েদ মোস্তফা

আরও খবর

শনিবার, ১৮ জুন ২০২২ , ৪ আষাড় ১৪২৮ ১৮ জিলকদ ১৪৪৩

তালা ঝুলানোর অপসংস্কৃতি বন্ধ হোক

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ ঝরে পড়েছে করোনার প্রকোপে। বেসরকারি সংস্থা গণস্বাক্ষরতা অভিযান তাদের ‘এডুকেশন ওয়াচ’ রিপোর্টে বলেছে, করোনার সময় দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শকরা ৬৯.৫ ভাগ শিক্ষার্থী অলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারেনি। টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসেও অংশগ্রহণ করতে পারেনি অনেকে। অংশগ্রহণ না করার এই হার শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে বেশি। তাদের জরিপ বলছে, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া এবং অনুপস্থিতি বাড়বে। করোনার কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব সহনশীল মাত্রায় ছিল না। যার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের ওপর।

বেসরকারি সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) বলছে, করোনায় বাংলাদেশ দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়েছে। আগে এটা ছিলো ২০.৫ শতাংশ। চরম দরিদ্র অবস্থার মধ্যে আছেন ২৮.৫ শতাংশ মানুষ। করোনায় বাল্য বিয়েও বেড়েছে। করোনার মাঝে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনেকে আত্মহত্যাও করেন।

প্রকৃতি সৃষ্ট দুর্যোগ করোনার কবলে শিক্ষার্থীদের সুন্দর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে মূল্যবান দেড় বছর। সব কিছু পিছনে ফেলে যখন সবাই ঘুরে দাঁড়াতে সংকল্পবদ্ধ তখনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) দুয়ারে কড়া নাড়ে তালা লাগানোর সংস্কৃতি। তালা লাগানোর সংস্কৃতি বহুল আলোচিত এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ। যা রীতিমতো সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারও ব্যক্তিগত সমস্যা, ক্লাসরুম নিয়ে সমস্যা, কর্মচারীদের নিজস্ব স্বার্থ, কর্মকর্তাদের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিকসহ যে কোন কিছু হলে তালা ঝুলিয়ে পুরো একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এতে কারও চলমান পরীক্ষা স্থগিত, ক্লাস স্থগিত হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের এই দুঃসময়ে যা কখনোই কাম্য নয়। এই বাজে সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সুন্দর সমাধান খোঁজা এখন সময়ের দাবি।

জুবায়েদ মোস্তফা