ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়ায় টানা বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভারিরবর্ষণের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্নেল বাজার এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত খোরশেদ আলম ও কিরণ মিয়া বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া উপজেলার কালনন্দি খাল এবং হাওড়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আখাউড়া দক্ষিণ এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে এসব গ্রামের লোকজন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর, বঙ্গিরচর, বাউতলা, সেনারবাদী, উমিদপুর এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের জয়নগর, খলাপাড়া, আইড়ল, ষোলঘর, লক্ষ্মীপুর, খাড়কুট, তুলাইশিমুল, বড়লোহঘর ও বান্ডুসার গ্রামে শতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি, গাছ-পালা, এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি।
ক্ষতিগ্রস্ত শাহানারা বেগম জানান উজান থেকে নেমে আসা পানি তার বসতঘরে প্রবেশ করেছে। তিনি অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তিনি কোন ধরনের সহায়তা পাননি। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে সহায়তা প্রত্যাশা করছেন।
উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, তার এলাকার ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তারা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করছেন।
উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল চৌধুরী দীপক বলেন, তার এলাকার ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে সরকারি সাহায্য-সহযোগীতা এখন পর্যন্ত সব এলাকায় পৌঁছায়নি। তবে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে হাওড়া নদীর বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে জেলা, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ২৮টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। পানি কমে যাওয়ার পর বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হবে বলে জানান।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি -রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, উজানে বর্ষণের ফলে আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের একাংশ তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকগুলো তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোন মুহূর্তে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আখাউড়ায় ভেঙে যাওয়া হাওড়া নদীর বাঁধ -সংবাদ
আরও খবররবিবার, ১৯ জুন ২০২২ , ৫ আষাড় ১৪২৮ ১৯ জিলকদ ১৪৪৩
জেলা বার্তা পরিবেশক, ব্রাক্ষণবাড়িয়া
আখাউড়ায় ভেঙে যাওয়া হাওড়া নদীর বাঁধ -সংবাদ
ব্রাক্ষণবাড়িয়ার আখাউড়ায় টানা বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ভারিরবর্ষণের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে মনিয়ন্দ ইউনিয়নের কর্নেল বাজার এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত খোরশেদ আলম ও কিরণ মিয়া বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আখাউড়া উপজেলার কালনন্দি খাল এবং হাওড়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আখাউড়া দক্ষিণ এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে এসব গ্রামের লোকজন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর মধ্যে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর, বঙ্গিরচর, বাউতলা, সেনারবাদী, উমিদপুর এবং মনিয়ন্দ ইউনিয়নের জয়নগর, খলাপাড়া, আইড়ল, ষোলঘর, লক্ষ্মীপুর, খাড়কুট, তুলাইশিমুল, বড়লোহঘর ও বান্ডুসার গ্রামে শতাধিক পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি, গাছ-পালা, এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি।
ক্ষতিগ্রস্ত শাহানারা বেগম জানান উজান থেকে নেমে আসা পানি তার বসতঘরে প্রবেশ করেছে। তিনি অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে তিনি কোন ধরনের সহায়তা পাননি। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে সহায়তা প্রত্যাশা করছেন।
উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, তার এলাকার ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তারা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করছেন।
উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল চৌধুরী দীপক বলেন, তার এলাকার ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে সরকারি সাহায্য-সহযোগীতা এখন পর্যন্ত সব এলাকায় পৌঁছায়নি। তবে জেলা এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে হাওড়া নদীর বাঁধ ভাঙার খবর পেয়ে জেলা, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ২৮টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। পানি কমে যাওয়ার পর বাঁধ মেরামত কাজ শুরু হবে বলে জানান।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি -রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, উজানে বর্ষণের ফলে আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক সড়কের একাংশ তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকগুলো তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোন মুহূর্তে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে।