পরিবারহীন শৈশব

বৃদ্ধাশ্রম সম্পর্কে কমবেশি সকলেই জানি। কিন্তু আমরা কি কখনো সন্তান আশ্রমের কথা শুনেছি? আসুন আজকে এ বিষয়টি নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য অথবা ছোট সন্তানটিকে ধর্মীয় শিক্ষার্জন বা একটু বেশি দুষ্টুমি করার শাস্তি স্বরূপ কিংবা উন্নত ক্যারিয়ার গঠনের উদ্দেশ্যে বোডিং স্কুল, হেফজখানা, ক্যাডেট স্কুল, মিশনারি স্কুলগুলোতে পাঠানো হয়; তাকে পরোক্ষভাবে শিশু আশ্রম বলতে পারি।

শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাসপূর্ণ সময় কাটানোর সময়টিকে চার দেয়ালের কপাটে বইপুস্তক ও নিয়ম-শৃঙ্খলায় আবদ্ধ রাখা হয়, স্বর্ণসময়ের পুরোটা সময় মায়ের আঁচলের ছায়া বঞ্চিত করা হয়। এই শিশু আশ্রমের কারণে শিশুর সামাজিকীকরণে বিরুপ প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা রয়েছে। কারণ সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার বাহন হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে পরিবার।

বোডিং স্কুল একটি দ-। বেশিরভাগ সময় হেফজখানা কিংবা বোডিং স্কুলগুলোতে একটু দুষ্টু ছেলেদের পাঠানো হয়। এতে করে শিশুটির মনে আগে থেকেই একটি চিন্তা লালিত হয় যে ‘আমি দুষ্টু বলেই তো শাস্তি হিসেবে এখানে এসেছি’ তা থেকেই সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

দুরন্ত এই শিশুটিকে শৃঙ্খলায় রাখতে চাইলে তার জন্য প্রয়োজন শাসন ও ভালোবাসার সমন্বয় একটি পরিবেশ। যা বোডিং স্কুলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে সম্ভব নয়। এখানে নির্ধারিত দায়িত্বশীলের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকলেও সম্পূর্ণভাবে সুশিক্ষা প্রদান করা সম্ভব নয়। ‘ক্লাস কিংবা আবাসিক শিক্ষার্থীদের মনিটররা চাকরি সূত্রে ডিউটি পালন করেন। এক্ষেত্রে ‘ডিউটি’ এবং ‘রেসপন্সিবিলিটি‘ দুটোই সম্পূর্ণ আলাদা পরিভাষা’। আর ছোট থেকেই দায়িত্বশীলহীনতায় ভোগা শিশুটি কখনো সম্পূর্ণ সুশিক্ষা ও সঠিক বিকাশ পেতে পারে না। সামাজিক জীবনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটাই প্রয়োজন পরিবারের। শিশুকে মেধা ও মননশীলতায় এগিয়ে রাখতে চাইলে বোডিং স্কুল নামক শিশু আশ্রমে নয় বরং প্রয়োজন পরিবারের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার।

মাসুম মাহমুদ

রবিবার, ১৯ জুন ২০২২ , ৫ আষাড় ১৪২৮ ১৯ জিলকদ ১৪৪৩

পরিবারহীন শৈশব

বৃদ্ধাশ্রম সম্পর্কে কমবেশি সকলেই জানি। কিন্তু আমরা কি কখনো সন্তান আশ্রমের কথা শুনেছি? আসুন আজকে এ বিষয়টি নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক। পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য অথবা ছোট সন্তানটিকে ধর্মীয় শিক্ষার্জন বা একটু বেশি দুষ্টুমি করার শাস্তি স্বরূপ কিংবা উন্নত ক্যারিয়ার গঠনের উদ্দেশ্যে বোডিং স্কুল, হেফজখানা, ক্যাডেট স্কুল, মিশনারি স্কুলগুলোতে পাঠানো হয়; তাকে পরোক্ষভাবে শিশু আশ্রম বলতে পারি।

শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাসপূর্ণ সময় কাটানোর সময়টিকে চার দেয়ালের কপাটে বইপুস্তক ও নিয়ম-শৃঙ্খলায় আবদ্ধ রাখা হয়, স্বর্ণসময়ের পুরোটা সময় মায়ের আঁচলের ছায়া বঞ্চিত করা হয়। এই শিশু আশ্রমের কারণে শিশুর সামাজিকীকরণে বিরুপ প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা রয়েছে। কারণ সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার বাহন হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে পরিবার।

বোডিং স্কুল একটি দ-। বেশিরভাগ সময় হেফজখানা কিংবা বোডিং স্কুলগুলোতে একটু দুষ্টু ছেলেদের পাঠানো হয়। এতে করে শিশুটির মনে আগে থেকেই একটি চিন্তা লালিত হয় যে ‘আমি দুষ্টু বলেই তো শাস্তি হিসেবে এখানে এসেছি’ তা থেকেই সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

দুরন্ত এই শিশুটিকে শৃঙ্খলায় রাখতে চাইলে তার জন্য প্রয়োজন শাসন ও ভালোবাসার সমন্বয় একটি পরিবেশ। যা বোডিং স্কুলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে সম্ভব নয়। এখানে নির্ধারিত দায়িত্বশীলের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকলেও সম্পূর্ণভাবে সুশিক্ষা প্রদান করা সম্ভব নয়। ‘ক্লাস কিংবা আবাসিক শিক্ষার্থীদের মনিটররা চাকরি সূত্রে ডিউটি পালন করেন। এক্ষেত্রে ‘ডিউটি’ এবং ‘রেসপন্সিবিলিটি‘ দুটোই সম্পূর্ণ আলাদা পরিভাষা’। আর ছোট থেকেই দায়িত্বশীলহীনতায় ভোগা শিশুটি কখনো সম্পূর্ণ সুশিক্ষা ও সঠিক বিকাশ পেতে পারে না। সামাজিক জীবনে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার যতটা প্রয়োজন ঠিক ততটাই প্রয়োজন পরিবারের। শিশুকে মেধা ও মননশীলতায় এগিয়ে রাখতে চাইলে বোডিং স্কুল নামক শিশু আশ্রমে নয় বরং প্রয়োজন পরিবারের সঙ্গে মিলেমিশে থাকার।

মাসুম মাহমুদ