অগ্নিপথে এবারও পিছু হটবে মোদি

অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে গতকাল রোববার নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে অহিংস আন্দোলন করবে কংগ্রেস। এ দলের সব সংসদ সদস্য, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির পদাধিকারীরা সেখানে অংশ নেবেন। রাহুল গান্ধী বলেছেন, যেভাবে কৃষকদের আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খামার আইন প্রত্যাহার করেছিলেন, ঠিক একইভাবে তাকে যুবকদের দাবি মেনে নিতে হবে এবং অগ্নিপথ প্রতিরক্ষা নিয়োগ প্রকল্পটি ফিরিয়ে নিতে হবে। ভারতে সেনা নিয়োগ পদ্ধতি অগ্নিপথ নিয়ে এরই মধ্যে উত্তাল ভারত। বিভিন্ন স্থানে চলছে আন্দোলন। অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

এ পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, যেভাবে কৃষকদের আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খামার আইন প্রত্যাহার করেছিলেন, ঠিক একইভাবে তাকে যুবকদের দাবি মেনে নিতে হবে এবং অগ্নিপথ প্রতিরক্ষা নিয়োগ প্রকল্পটি ফিরিয়ে নিতে হবে। রাহুল আরও অভিযোগ করেন, টানা আট বছর বিজেপি সরকার যে ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’-এর মূল্যবোধকে অপমান করেছে।

অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে রোববার নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে অহিংস আন্দোলন করবে কংগ্রেস। দলের সব সংসদ সদস্য, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির পদাধিকারীরা সেখানে অংশ নেবেন।

এদিকে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রোববার নয়াদিল্লিতে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এরই মধ্যে অগ্নিপথ নিয়োগ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের কারণে ভারত সরকার গত শনিবার কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) ও আসাম রাইফেলসে নিয়োগে অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণের ঘোষণা দিয়েছে। আর অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে যারা সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে, সরকার তাদের ‘অগ্নিবীর’ নামে সম্বোধন করবে।

মূলত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য বিজেপি সরকার ‘অগ্নিপথ প্রকল্প’ ঘোষণা করতেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়ও বিক্ষোভ হয়েছে। গত শুক্রবার রাজ্যটির একাধিক রেলওয়ে স্টেশন ও রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। হাওড়া ব্রিজও অবরোধ করা হয়। উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর, ভাটপাড়াসহ বেশকিছু স্টেশনে ট্রেন আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।

গত মঙ্গলবার ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প ঘোষণা করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রকল্পের চুক্তিতে জানানো হয়, ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সীদের চার বছরের জন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের চুক্তিতে ভারতের তিন সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে।

এচার বছর শেষে ২৫ শতাংশ সেনাকে বাহিনীর শূন্য পদে নিয়োগ করা হবে। বাকিরা এককালীন অর্থের বিনিময়ে অবসর নেবেন। তারা কোনো রকম পেনশন পাবেন না। এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন চাকরিপ্রার্থীরা এরপর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

বিহার, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। জায়গায় জায়গায় বিজেপির দলীয় অফিস ও ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসে। বিহারের লখিসরাই স্টেশনেও আগুন ধরিয়ে দেন চাকরি প্রার্থীরা।

বিভিন্ন শহরে আধা সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ আন্দোলনের কারণে পূর্ব রেলের ২২টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এই প্রকল্প ঘোষণার পর হরিয়ানার এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিজেপি সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে চাকরি প্রার্থীর বয়স দুই বছর বাড়িয়েছে।

সোমবার, ২০ জুন ২০২২ , ৬ আষাড় ১৪২৮ ২০ জিলকদ ১৪৪৩

অগ্নিপথে এবারও পিছু হটবে মোদি

অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে গতকাল রোববার নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে অহিংস আন্দোলন করবে কংগ্রেস। এ দলের সব সংসদ সদস্য, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির পদাধিকারীরা সেখানে অংশ নেবেন। রাহুল গান্ধী বলেছেন, যেভাবে কৃষকদের আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খামার আইন প্রত্যাহার করেছিলেন, ঠিক একইভাবে তাকে যুবকদের দাবি মেনে নিতে হবে এবং অগ্নিপথ প্রতিরক্ষা নিয়োগ প্রকল্পটি ফিরিয়ে নিতে হবে। ভারতে সেনা নিয়োগ পদ্ধতি অগ্নিপথ নিয়ে এরই মধ্যে উত্তাল ভারত। বিভিন্ন স্থানে চলছে আন্দোলন। অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনাও ঘটেছে।

এ পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, যেভাবে কৃষকদের আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি খামার আইন প্রত্যাহার করেছিলেন, ঠিক একইভাবে তাকে যুবকদের দাবি মেনে নিতে হবে এবং অগ্নিপথ প্রতিরক্ষা নিয়োগ প্রকল্পটি ফিরিয়ে নিতে হবে। রাহুল আরও অভিযোগ করেন, টানা আট বছর বিজেপি সরকার যে ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’-এর মূল্যবোধকে অপমান করেছে।

অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে রোববার নয়াদিল্লির যন্তর মন্তরে অহিংস আন্দোলন করবে কংগ্রেস। দলের সব সংসদ সদস্য, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির পদাধিকারীরা সেখানে অংশ নেবেন।

এদিকে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদের মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং রোববার নয়াদিল্লিতে তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

এরই মধ্যে অগ্নিপথ নিয়োগ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের কারণে ভারত সরকার গত শনিবার কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) ও আসাম রাইফেলসে নিয়োগে অগ্নিবীরদের জন্য ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণের ঘোষণা দিয়েছে। আর অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে যারা সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে, সরকার তাদের ‘অগ্নিবীর’ নামে সম্বোধন করবে।

মূলত ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য বিজেপি সরকার ‘অগ্নিপথ প্রকল্প’ ঘোষণা করতেই দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়ও বিক্ষোভ হয়েছে। গত শুক্রবার রাজ্যটির একাধিক রেলওয়ে স্টেশন ও রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। হাওড়া ব্রিজও অবরোধ করা হয়। উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর, ভাটপাড়াসহ বেশকিছু স্টেশনে ট্রেন আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।

গত মঙ্গলবার ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প ঘোষণা করেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। প্রকল্পের চুক্তিতে জানানো হয়, ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সীদের চার বছরের জন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের চুক্তিতে ভারতের তিন সশস্ত্র বাহিনীতে নিয়োগ করা হবে।

এচার বছর শেষে ২৫ শতাংশ সেনাকে বাহিনীর শূন্য পদে নিয়োগ করা হবে। বাকিরা এককালীন অর্থের বিনিময়ে অবসর নেবেন। তারা কোনো রকম পেনশন পাবেন না। এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন চাকরিপ্রার্থীরা এরপর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

বিহার, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। জায়গায় জায়গায় বিজেপির দলীয় অফিস ও ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আগুন জ্বালিয়ে দেয়া হয় জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেসে। বিহারের লখিসরাই স্টেশনেও আগুন ধরিয়ে দেন চাকরি প্রার্থীরা।

বিভিন্ন শহরে আধা সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভ আন্দোলনের কারণে পূর্ব রেলের ২২টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। এই প্রকল্প ঘোষণার পর হরিয়ানার এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিজেপি সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে চাকরি প্রার্থীর বয়স দুই বছর বাড়িয়েছে।