পদ্মা সেতু : উন্নয়নের স্বপ্নে উজ্জীবিত দক্ষিণাঞ্চলবাসী

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে উচ্ছ্বাস বইছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে। উন্নয়নের আশায় এখন উজ্জীবিত দক্ষিণাঞ্চলবাসী। স্থানীয়রা বলছেন, সেতুটি চালু হলে এ অঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থায় অভাবনীয় উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। বদলে যাবে আর্থসামাজিকচিত্র।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের ইন্টিগ্রিটি অ্যাডভাইজর এবং প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার দূরদৃষ্টি ও সৎ সাহসের ফসল পদ্মা সেতু। বাংলাদেশ এককভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এটা আমাদের একটা বড় অর্জন। পদ্মা সেতু দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দেবে।

বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের মধ্যে নতুন আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। এ সেতু বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক। এ সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হচ্ছে এ অঞ্চলের ২১ জেলা। এতে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হবে। গড়ে উঠবে শিল্প-কারখানাসহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। বাড়বে মানুষের কর্মসংস্থান, কমবে বেকার সমস্যা।

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, এ অঞ্চলে শিল্পায়নের ধুম পড়বে। আরও নতুন নতুন শিল্প কল-কারখানা স্থাপন হবে। মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠছে ছোট-বড় অসংখ্য কল-কারখানা। জাজিরা থেকে শুরু করে মোংলা বন্দর পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে বিভিন্ন শিল্প কারখানার মালিকরা জমি কিনে রেখেছেন।

এ অঞ্চলে আরও কয়েকটি মেগাপ্রকল্প বিশেষকরে খুলনা-মোংলা রেললাইন, খানজাহান আলী বিমানবন্দর, পাইপলাইনে গ্যাস, অর্থনৈতিক অঞ্চল, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন এবং মোংলা বন্দর, নওয়াপাড়া নদীবন্দর, বেনাপোল, ভোমরা ও দর্শনা স্থলবন্দর উন্নয়নের পাশাপাশি বেনাপোল থেকে সরাসরি ঢাকা রেল যোগাযোগ চালু হলে বদলে যাবে আর্থসামজিকচিত্র।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, যোগাযোগ, অবকাঠামো ও গ্যাস না থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে খুলনার অনেক উৎপাদনমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক শিল্প-কারখানা অস্তিত্ব হারিয়েছে। কাজের খোঁজে খুলনা ছেড়েছে মানুষ। পদ্মা সেতু চালু হলে আবার খুলনায় ফিরবে মানুষ। নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। কৃষি, যোগাযোগ, নগরায়ন, জীবনমানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন মোংলার মহাসচিব সুলতান হোসেন খান বলেন, পদ্মা সেতু ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মাত্র চার ঘণ্টায় খুলনা থেকে ঢাকায় যাওয়া যাবে। ঢাকার সঙ্গে মোংলা বন্দরকেন্দ্রীক পণ্যপরিবহনের খরচ কমায় ব্যাবসায়ীরা আকৃষ্ট হবেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। হাবিব অ্যাগ্রো জুট ব্যাগ কোম্পানির চেয়ারম্যান আহসান হাবীব বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতি সঞ্চার হবে। দক্ষিণাঞ্চলে মানুষের চলাচল বাড়বে। খুলবে সম্ভাবনার দুয়ার। নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। একইসঙ্গে শিল্পউদ্যোক্তারা যাতে সহজশর্তে ঋণ পেতে পারেন সে দাবি জানান তিনি।

খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, ঢাকাসহ অন্য অঞ্চলে দ্রুত পণ্য পাঠানো সহজ হবে। সেতুতে রেল যোগাযোগ থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যপরিবহন ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। হিমায়িত মৎস্য ও পাটশিল্প থেকে রপ্তানি আয় বাড়বে। উজ্জীবিত হবে কৃষি, পর্যটন ও পরিবহন সেক্টর।

কাজী আমিন বলেন, সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে মোংলা বন্দর ব্যবহার এবং এ অঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছেন। খান জাহান আলী বিমানবন্দর এবং গ্যাস সরবরাহ চালু হলে দক্ষিণাঞ্চল হবে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চল।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, বন্দরের কর্মব্যস্ততা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। গতি আসবে আমদানি-রপ্তানিতে। বাড়তি চাপ সামাল দিতে এরইমধ্যে নানা পরিকল্পনা এবং বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে জানান, তিনি।

এই বন্দর দিয়ে কার্গো, কন্টেইনার এবং গাড়ি আমদানি বেশি হয় জানিয়ে মুসা বলেন, চলতি বছরও গাড়ি ও কার্গো আমদানিতে যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার থেকে বেশি আমদানি হয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) পরিচালক প্রণব কুমার রায় বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। এরফলে এ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১৩৪টি ছোট-বড় ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিনিয়োগ হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ২৩ হাজার ৩৫৫ জনের।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প নিতে চলে যায় আট বছর। এরপর অর্থায়ন জটিলতায় কেটে যায় আরও পাঁচ বছর। ২০১২ সালে দেশীয় অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের পর শুরু হয় নির্মাণকাজ। এর প্রায় এক দশক পর চালু হতে যাচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু।

সোমবার, ২০ জুন ২০২২ , ৬ আষাড় ১৪২৮ ২০ জিলকদ ১৪৪৩

পদ্মা সেতু : উন্নয়নের স্বপ্নে উজ্জীবিত দক্ষিণাঞ্চলবাসী

জেলা বার্তা পরিবেশক, খুলনা

image

স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে উচ্ছ্বাস বইছে গোটা দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে। উন্নয়নের আশায় এখন উজ্জীবিত দক্ষিণাঞ্চলবাসী। স্থানীয়রা বলছেন, সেতুটি চালু হলে এ অঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থায় অভাবনীয় উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। বদলে যাবে আর্থসামাজিকচিত্র।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের ইন্টিগ্রিটি অ্যাডভাইজর এবং প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার দূরদৃষ্টি ও সৎ সাহসের ফসল পদ্মা সেতু। বাংলাদেশ এককভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এটা আমাদের একটা বড় অর্জন। পদ্মা সেতু দেশের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে পাল্টে দেবে।

বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের মধ্যে নতুন আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। এ সেতু বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক। এ সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হচ্ছে এ অঞ্চলের ২১ জেলা। এতে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হবে। গড়ে উঠবে শিল্প-কারখানাসহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। বাড়বে মানুষের কর্মসংস্থান, কমবে বেকার সমস্যা।

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, এ অঞ্চলে শিল্পায়নের ধুম পড়বে। আরও নতুন নতুন শিল্প কল-কারখানা স্থাপন হবে। মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে।

খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠছে ছোট-বড় অসংখ্য কল-কারখানা। জাজিরা থেকে শুরু করে মোংলা বন্দর পর্যন্ত সড়কের দুইপাশে বিভিন্ন শিল্প কারখানার মালিকরা জমি কিনে রেখেছেন।

এ অঞ্চলে আরও কয়েকটি মেগাপ্রকল্প বিশেষকরে খুলনা-মোংলা রেললাইন, খানজাহান আলী বিমানবন্দর, পাইপলাইনে গ্যাস, অর্থনৈতিক অঞ্চল, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন এবং মোংলা বন্দর, নওয়াপাড়া নদীবন্দর, বেনাপোল, ভোমরা ও দর্শনা স্থলবন্দর উন্নয়নের পাশাপাশি বেনাপোল থেকে সরাসরি ঢাকা রেল যোগাযোগ চালু হলে বদলে যাবে আর্থসামজিকচিত্র।

বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, যোগাযোগ, অবকাঠামো ও গ্যাস না থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে খুলনার অনেক উৎপাদনমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক শিল্প-কারখানা অস্তিত্ব হারিয়েছে। কাজের খোঁজে খুলনা ছেড়েছে মানুষ। পদ্মা সেতু চালু হলে আবার খুলনায় ফিরবে মানুষ। নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। কৃষি, যোগাযোগ, নগরায়ন, জীবনমানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

ফেডারেশন অব বাংলাদেশ কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন মোংলার মহাসচিব সুলতান হোসেন খান বলেন, পদ্মা সেতু ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মাত্র চার ঘণ্টায় খুলনা থেকে ঢাকায় যাওয়া যাবে। ঢাকার সঙ্গে মোংলা বন্দরকেন্দ্রীক পণ্যপরিবহনের খরচ কমায় ব্যাবসায়ীরা আকৃষ্ট হবেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। হাবিব অ্যাগ্রো জুট ব্যাগ কোম্পানির চেয়ারম্যান আহসান হাবীব বলেন, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ে গতি সঞ্চার হবে। দক্ষিণাঞ্চলে মানুষের চলাচল বাড়বে। খুলবে সম্ভাবনার দুয়ার। নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফিরবে। ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। একইসঙ্গে শিল্পউদ্যোক্তারা যাতে সহজশর্তে ঋণ পেতে পারেন সে দাবি জানান তিনি।

খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সভাপতি কাজী আমিনুল হক বলেন, ঢাকাসহ অন্য অঞ্চলে দ্রুত পণ্য পাঠানো সহজ হবে। সেতুতে রেল যোগাযোগ থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ পণ্যপরিবহন ছাড়াও প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গেও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। হিমায়িত মৎস্য ও পাটশিল্প থেকে রপ্তানি আয় বাড়বে। উজ্জীবিত হবে কৃষি, পর্যটন ও পরিবহন সেক্টর।

কাজী আমিন বলেন, সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে মোংলা বন্দর ব্যবহার এবং এ অঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনে আগ্রহী হচ্ছেন। খান জাহান আলী বিমানবন্দর এবং গ্যাস সরবরাহ চালু হলে দক্ষিণাঞ্চল হবে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অঞ্চল।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, বন্দরের কর্মব্যস্ততা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। গতি আসবে আমদানি-রপ্তানিতে। বাড়তি চাপ সামাল দিতে এরইমধ্যে নানা পরিকল্পনা এবং বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে জানান, তিনি।

এই বন্দর দিয়ে কার্গো, কন্টেইনার এবং গাড়ি আমদানি বেশি হয় জানিয়ে মুসা বলেন, চলতি বছরও গাড়ি ও কার্গো আমদানিতে যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার থেকে বেশি আমদানি হয়েছে।

খুলনা বিভাগীয় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) পরিচালক প্রণব কুমার রায় বলেন, পদ্মা সেতুকে ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। এরফলে এ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১৩৪টি ছোট-বড় ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিনিয়োগ হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ২৩ হাজার ৩৫৫ জনের।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্প নিতে চলে যায় আট বছর। এরপর অর্থায়ন জটিলতায় কেটে যায় আরও পাঁচ বছর। ২০১২ সালে দেশীয় অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের পর শুরু হয় নির্মাণকাজ। এর প্রায় এক দশক পর চালু হতে যাচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু।