আর কে চৌধুরী
বর্ষার শুরুতেই ভেসেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহর। বৃষ্টি আর অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সিলেট নগরীসহ পাঁচ উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। আড়াই শর বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
দেশে বন্যা পরিস্থিতি আকস্মিক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১০ নদ-নদীর ১৩ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগ। সিলেট-সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎকেন্দ্র ডুবে যাওয়ায় অন্ধকারে সাড়ে ৪ লক্ষাধিক গ্রাহক। বিভিন্ন অঞ্চলে পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ।
রংপুরে তিস্তার পানিতে তিন উপজেলার আটটি ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। তিস্তায় পানি বাড়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার প্রায় ১৫ গ্রামের দুই সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের তীরবর্তী ১৭টি গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। সিরাজগঞ্জে যমুনায় পানি বাড়ায় আশপাশের চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
সিলেট, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যার কারণে সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
উজান থেকে নেমে আসা পানিতে চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে। এর আগে গত এপ্রিলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে অসময়ে বন্যা দেখা দেয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আশঙ্কা করছে, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের পাশাপাশি নেত্রকোনা জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
প্রতিবছরই বন্যা আসে প্রাকৃতিক নিয়মে। কিন্তু দেশের নদ-নদীগুলোর এখন যে অবস্থা, তাতে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হয়ে সাগরে চলে যেতে পারছে না। বেশির ভাগ নদী ভরাট হয়ে গেছে। গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় পানি ধরে রাখার ক্ষমতা হারিয়েছে অনেক নদী। সে কারণে যতই দিন যাচ্ছে বন্যার স্থায়িত্ব ও ভয়াবহতা বাড়ছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণে এখনই স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আপাতত দাঁড়াতে হবে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে। পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধসহ মেডিকেল টিম পাঠাতে হবে।
[লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক]
সোমবার, ২০ জুন ২০২২ , ৬ আষাড় ১৪২৮ ২০ জিলকদ ১৪৪৩
আর কে চৌধুরী
বর্ষার শুরুতেই ভেসেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহর। বৃষ্টি আর অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সিলেট নগরীসহ পাঁচ উপজেলার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। আড়াই শর বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
দেশে বন্যা পরিস্থিতি আকস্মিক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১০ নদ-নদীর ১৩ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেটের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগ। সিলেট-সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎকেন্দ্র ডুবে যাওয়ায় অন্ধকারে সাড়ে ৪ লক্ষাধিক গ্রাহক। বিভিন্ন অঞ্চলে পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ।
রংপুরে তিস্তার পানিতে তিন উপজেলার আটটি ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে। তিস্তায় পানি বাড়ায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার প্রায় ১৫ গ্রামের দুই সহস্রাধিক পরিবার বন্যাকবলিত। কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের তীরবর্তী ১৭টি গ্রামের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। সিরাজগঞ্জে যমুনায় পানি বাড়ায় আশপাশের চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে।
সিলেট, সুনামগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকায় বন্যার কারণে সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
উজান থেকে নেমে আসা পানিতে চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে। এর আগে গত এপ্রিলে সিলেটের নিম্নাঞ্চলে অসময়ে বন্যা দেখা দেয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝিতে সিলেটে ১৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আশঙ্কা করছে, সুনামগঞ্জ ও সিলেটের পাশাপাশি নেত্রকোনা জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
প্রতিবছরই বন্যা আসে প্রাকৃতিক নিয়মে। কিন্তু দেশের নদ-নদীগুলোর এখন যে অবস্থা, তাতে অতিরিক্ত পানি প্রবাহিত হয়ে সাগরে চলে যেতে পারছে না। বেশির ভাগ নদী ভরাট হয়ে গেছে। গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় পানি ধরে রাখার ক্ষমতা হারিয়েছে অনেক নদী। সে কারণে যতই দিন যাচ্ছে বন্যার স্থায়িত্ব ও ভয়াবহতা বাড়ছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণে এখনই স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে আপাতত দাঁড়াতে হবে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে। পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে। বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধসহ মেডিকেল টিম পাঠাতে হবে।
[লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক]