নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলা, গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ ১৫, গ্রেপ্তার ৮

নরসিংদীর রায়পুরায় পূর্ব শত্রুতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ১৩ জন গুলিবিদ্ধ ও ২ জন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছে। গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের নলবাটা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় নলবাটা ও ভাটিবদরপুর গ্রামের ১৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গুলিবিদ্ধ ও টেঁটাবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন আওলাদ হোসেনের ছেলে রিমন হোসেন (১০), নুরে আলমের ছেলে মো. মুন্না মিয়া (১২), মোক্তার হোসেনের ছেলে শাহীন মিয়া (১৬), আবদুল মোতালিবের ছেলে মো. মোহসিন (২০), আফাজউদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন (৩৪), শাজাহান মিয়ার ছেলে শাহালম মিয়া (৩০), আবদুল মিয়ার ছেলে খোরশেদ মিয়া (৪৫), ইদ্রিস আলীর ছেলে ইলিয়াস আলী (৫০), ইমান হোসেনের ছেলে আশিক হোসেন (২৩), মৃত আবদুল খালেকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৫), মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে মোতালিব (৭০), জুয়েল মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম (৩২), আবদুল হাকিমের ছেলে ছাত্তার (৫০), আবুল হোসেনের স্ত্রী রোফেজা বেগম (৩২), আহত ব্যক্তিদের নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, সাবেক ইউপি সদস্য গুলজার হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ওরফে রবির বালুর ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তাদের দ্বন্দ্বের জেরে কিছুদিন পরপরই এই গ্রামে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরেই ভোরে রফিকুল ইসলামের সমর্থকেরা গুলজার হোসেনের সমর্থকদের বাড়িঘরে অতর্কিতে হামলা চালান। হামলার সময় ককটেলের বিকট শব্দে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই রায়পুরার আমিরগঞ্জের নলবাটা গ্রামে রফিকুল ইসলাম রবি গ্রুপ ও গুলজার হোসেন মেম্বার গ্রুপের বিরোধ চলছিল। গত কয়েক বছরে এই দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। রফিকুল ইসলাম রবি জেল থেকে বের হয়েই গত ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর দলবল নিয়ে গুলজার মেম্বারের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে গুলজার অদ্যাবধি পঙ্গুত্ব নিয়ে জীবন যাপন করছে। পরবর্তীতে গুলজারের পক্ষের বেনু মেম্বারের গ্রুপের সঙ্গে রবি মেম্বার গ্রুপের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।

ভোর ৪টার দিকে রবি গ্রুপের শতাধিক সমর্থক আগ্নেয়াস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে বেনু গ্রুপের সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়। এ সময় উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে নারী, শিশুসহ ১৫ জন আহত হন।

পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন ও স্বজনেরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফজলুল কাদের বলেন, সকাল পৌনে ৬টার দিকে রায়পুরার নলবাটা এলাকার নারী, শিশুসহ মোট ১৫ জন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এরমধ্যে ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং খোরশেদসহ ২জন টেঁটাবিদ্ধ ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের সবাইকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, হামলার ঘটনায় রবি গ্রুপের ৫ জন এবং বেনু মেম্বার গ্রুপের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আরও খবর
সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা আইনের খসড়া অনুমোদন
পদ্মা সেতু : ভাবতে গেলে তিনটি শব্দ ভেসে উঠে সাহস, সংকল্প ও সমৃদ্ধি
বিএনপি নেতারা বন্যার্তদের পাশে না দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছেন : তথ্যমন্ত্রী
করোনা : শনাক্তের হার ১০ শতাংশ ছাড়ালো, মৃত্যু ১
অবৈধভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াচ্ছে সরকার
সুফিয়া কামাল ছিলেন নারীমুক্তিকে মানবমুক্তি হিসেবে দেখার মন্ত্রে দীক্ষিত
মাদ্রাসার ভেতর হাত-পা চেপে ধরে সাত বছরের ছাত্রকে জবাই
হবিগঞ্জে বন্যার্তদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় চাকরিচ্যুত ৮
তারেকের দুই বন্ধুসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
আলোচিত স্বপ্ন-পদ্মা-সেতু পেল প্রধানমন্ত্রীর উপহার
জাতীয় স্লোগানে ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ যুক্ত চেয়ে আইনি নোটিশ
‘আমারে ফাঁসি দিয়া আসামিগো মুক্তি দিক’
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নাম-পেশা পরিবর্তন করে ৩১ বছর আত্মগোপনে

মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২ , ৭ আষাড় ১৪২৮ ২১ জিলকদ ১৪৪৩

নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলা, গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ ১৫, গ্রেপ্তার ৮

জেলা বার্তা পরিবেশক, নরসিংদী

নরসিংদীর রায়পুরায় পূর্ব শত্রুতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ১৩ জন গুলিবিদ্ধ ও ২ জন টেঁটাবিদ্ধ হয়েছে। গতকাল ভোর পাঁচটার দিকে আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের নলবাটা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এসময় নলবাটা ও ভাটিবদরপুর গ্রামের ১৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গুলিবিদ্ধ ও টেঁটাবিদ্ধ ব্যক্তিরা হলেন আওলাদ হোসেনের ছেলে রিমন হোসেন (১০), নুরে আলমের ছেলে মো. মুন্না মিয়া (১২), মোক্তার হোসেনের ছেলে শাহীন মিয়া (১৬), আবদুল মোতালিবের ছেলে মো. মোহসিন (২০), আফাজউদ্দিনের ছেলে মনির হোসেন (৩৪), শাজাহান মিয়ার ছেলে শাহালম মিয়া (৩০), আবদুল মিয়ার ছেলে খোরশেদ মিয়া (৪৫), ইদ্রিস আলীর ছেলে ইলিয়াস আলী (৫০), ইমান হোসেনের ছেলে আশিক হোসেন (২৩), মৃত আবদুল খালেকের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৫), মৃত শুক্কুর আলীর ছেলে মোতালিব (৭০), জুয়েল মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম (৩২), আবদুল হাকিমের ছেলে ছাত্তার (৫০), আবুল হোসেনের স্ত্রী রোফেজা বেগম (৩২), আহত ব্যক্তিদের নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

আহত ব্যক্তিদের অভিযোগ, সাবেক ইউপি সদস্য গুলজার হোসেনের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ওরফে রবির বালুর ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। তাদের দ্বন্দ্বের জেরে কিছুদিন পরপরই এই গ্রামে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরেই ভোরে রফিকুল ইসলামের সমর্থকেরা গুলজার হোসেনের সমর্থকদের বাড়িঘরে অতর্কিতে হামলা চালান। হামলার সময় ককটেলের বিকট শব্দে এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই রায়পুরার আমিরগঞ্জের নলবাটা গ্রামে রফিকুল ইসলাম রবি গ্রুপ ও গুলজার হোসেন মেম্বার গ্রুপের বিরোধ চলছিল। গত কয়েক বছরে এই দুই গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। রফিকুল ইসলাম রবি জেল থেকে বের হয়েই গত ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর দলবল নিয়ে গুলজার মেম্বারের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে গুলজার অদ্যাবধি পঙ্গুত্ব নিয়ে জীবন যাপন করছে। পরবর্তীতে গুলজারের পক্ষের বেনু মেম্বারের গ্রুপের সঙ্গে রবি মেম্বার গ্রুপের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।

ভোর ৪টার দিকে রবি গ্রুপের শতাধিক সমর্থক আগ্নেয়াস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে বেনু গ্রুপের সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা চালায়। এ সময় উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে নারী, শিশুসহ ১৫ জন আহত হন।

পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন ও স্বজনেরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফজলুল কাদের বলেন, সকাল পৌনে ৬টার দিকে রায়পুরার নলবাটা এলাকার নারী, শিশুসহ মোট ১৫ জন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। এরমধ্যে ১৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং খোরশেদসহ ২জন টেঁটাবিদ্ধ ছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের সবাইকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, হামলার ঘটনায় রবি গ্রুপের ৫ জন এবং বেনু মেম্বার গ্রুপের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।