পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ২ থানা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

পদ্মা সেতুর উভয়পাশের এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পারে দুটি থানা স্থাপন করা হয়েছে, যা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত থানা দুটি উদ্বোধন করেন তিনি। এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১২টি পুলিশ হাসপাতাল, পুলিশের ছয়টি নারী ব্যারাক, ১২০ গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর প্রদান ও অনলাইন জিডি উদ্বোধন করেন সরকার প্রধান।

মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ‘পদ্মা সেতু উত্তর’ এবং শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ‘পদ্মা সেতু দক্ষিণ’ নামে নতুন এই থানা দুটিতে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে এরইমধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করে থানা দুটিতে জনবলও পদায়ন করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে সম্পূর্ণ বাংলাদেশের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি করেছি। এই পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ, যারা যাবে তাদের নিরাপত্তা বিধান এটাও আমাদের কর্তব্য। কাজেই পদ্মা সেতুকে সুরক্ষিত করা এবং যাত্রী সেবা দেয়া বা আশে পাশে যে জনগণ তাদেরও সেবা দেয়া আমাদের কর্তব্য সে জন্য আমরা দুটি থানা, জাজিরায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ আর মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু উত্তর, এই দুটি থানার আধুনিক ভবন সম্পন্ন করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ পুলিশের এই অনুষ্ঠানে গণভবনের সঙ্গে ভার্চুয়ালি রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পদ্মা সেতু উত্তর থানা, মুন্সীগঞ্জ, মহিলা পুলিশ বরাক প্রান্ত, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি), খুলনা, ময়মনসিংহ পুলিশ হাসপাতাল এবং পিরোজপুর জেলার পুলিশ লাইন প্রান্ত যুক্ত ছিল। অনুষ্ঠানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের প্রবেশমুখে গড়ে তোলা নান্দনিক চারতলা থানা ভবন শুধু যোগাযোগই নয়, সেতু ঘিরে বদলে যাওয়া এলাকার নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। দুটি থানা মূলত সেতুর নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের আইনি সহায়তার জন্য কাজ করবে। প্রতিটি থানায় একজন সহকারী পুলিশ সুপারসহ ৪০ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকবে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ সারাদেশে গৃহহীন মানুষের জন্য নিজস্ব অর্থে মোট ৫২০টি বাড়ি নির্মাণ করেছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী চলতি বছরের ১০ এপ্রিল গৃহহীনদের হাতে বাংলাদেশ পুলিশ নির্মিত ৪শ’টি বাড়ি হস্তান্তর করেন। গতকাল দ্বিতীয় পর্যায়ে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আরও ১২০টি বাড়ি হস্তান্তর করেন সরকার প্রধান।

বঙ্গবন্ধুর গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর এ দেশের দরিদ্র, শোষিত-বঞ্চিত মানুষ, গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষের দিকে কেউ তাকানোর প্রয়োজনই মনে করেনি।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আসার পর থেকে আমরা জাতির পিতার নেয়া গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প আবার চালু করি, পাশাপাশি দরিদ্র-হতদরিদ্র মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ করে পুনর্বাসনের পদক্ষেপ আমরা নিই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না।’

এসময় মুজিববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে যেয়ে বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে গৃহহীন মানুষকে ঘর করে দেয়ায় পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উদ্যোগ তুলে ধরেন তিনি।

বুধবার, ২২ জুন ২০২২ , ৮ আষাড় ১৪২৮ ২২ জিলকদ ১৪৪৩

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে ২ থানা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

পদ্মা সেতুর উভয়পাশের এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই পারে দুটি থানা স্থাপন করা হয়েছে, যা উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত থানা দুটি উদ্বোধন করেন তিনি। এছাড়া ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১২টি পুলিশ হাসপাতাল, পুলিশের ছয়টি নারী ব্যারাক, ১২০ গৃহহীন পরিবারের মধ্যে জমিসহ ঘর প্রদান ও অনলাইন জিডি উদ্বোধন করেন সরকার প্রধান।

মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ‘পদ্মা সেতু উত্তর’ এবং শরিয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ‘পদ্মা সেতু দক্ষিণ’ নামে নতুন এই থানা দুটিতে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে বলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে এরইমধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করে থানা দুটিতে জনবলও পদায়ন করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে সম্পূর্ণ বাংলাদেশের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি করেছি। এই পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ, যারা যাবে তাদের নিরাপত্তা বিধান এটাও আমাদের কর্তব্য। কাজেই পদ্মা সেতুকে সুরক্ষিত করা এবং যাত্রী সেবা দেয়া বা আশে পাশে যে জনগণ তাদেরও সেবা দেয়া আমাদের কর্তব্য সে জন্য আমরা দুটি থানা, জাজিরায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ আর মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু উত্তর, এই দুটি থানার আধুনিক ভবন সম্পন্ন করা হয়েছে।’

বাংলাদেশ পুলিশের এই অনুষ্ঠানে গণভবনের সঙ্গে ভার্চুয়ালি রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পদ্মা সেতু উত্তর থানা, মুন্সীগঞ্জ, মহিলা পুলিশ বরাক প্রান্ত, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি), খুলনা, ময়মনসিংহ পুলিশ হাসপাতাল এবং পিরোজপুর জেলার পুলিশ লাইন প্রান্ত যুক্ত ছিল। অনুষ্ঠানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একটি ভিডিও চিত্রও প্রদর্শিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের প্রবেশমুখে গড়ে তোলা নান্দনিক চারতলা থানা ভবন শুধু যোগাযোগই নয়, সেতু ঘিরে বদলে যাওয়া এলাকার নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। দুটি থানা মূলত সেতুর নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের আইনি সহায়তার জন্য কাজ করবে। প্রতিটি থানায় একজন সহকারী পুলিশ সুপারসহ ৪০ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকবে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ সারাদেশে গৃহহীন মানুষের জন্য নিজস্ব অর্থে মোট ৫২০টি বাড়ি নির্মাণ করেছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী চলতি বছরের ১০ এপ্রিল গৃহহীনদের হাতে বাংলাদেশ পুলিশ নির্মিত ৪শ’টি বাড়ি হস্তান্তর করেন। গতকাল দ্বিতীয় পর্যায়ে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আরও ১২০টি বাড়ি হস্তান্তর করেন সরকার প্রধান।

বঙ্গবন্ধুর গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর এ দেশের দরিদ্র, শোষিত-বঞ্চিত মানুষ, গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষের দিকে কেউ তাকানোর প্রয়োজনই মনে করেনি।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আসার পর থেকে আমরা জাতির পিতার নেয়া গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প আবার চালু করি, পাশাপাশি দরিদ্র-হতদরিদ্র মানুষের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ করে পুনর্বাসনের পদক্ষেপ আমরা নিই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না।’

এসময় মুজিববর্ষের বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে যেয়ে বেঁচে যাওয়া টাকা দিয়ে গৃহহীন মানুষকে ঘর করে দেয়ায় পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া উদ্যোগ তুলে ধরেন তিনি।