বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর হতে নগরীর ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহনের আওতায় ২০০ নতুন বাস চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র (ডিএসসিসি) শেখ ফজলে নূর তাপস। আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট যাত্রাপথগুলোতে যাত্রীছাউনি, বাস-বেসহ সব অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন হবে। ১ সেপ্টেম্বর নতুন তিন রুটে সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৩তম সভা শেষে সাংবাদিকদেরকে এ কথা জানান তিনি।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা নতুন তিনটি যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহন চালু করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। এই তিনটি যাত্রাপথেই আমরা আবেদন পেয়েছি। সেই আবেদনগুলোসহ বিআরটিসি’র আবেদন পর্যালোচনা করেছি। আমরা নতুন তিনটি যাত্রাপথের মধ্যে ২২ নম্বর যাত্রাপথে অভি মোটরসের ২০২২ সালে নির্মিত ৫০টি বাস চালুর প্রস্তাব পেয়েছি। তাদের আবেদন গ্রহণ করেছি।’
এছাড়া ২৩ নম্বর যাত্রাপথে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ২০২২ সালে নতুন নির্মিত ১০০টি বাস চালুর আবেদন করেছে। সেটাও গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২৬ নম্বর যাত্রাপথে বিআরটিসি’র আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ৫০টি ডাবল ডেকার বাস দিয়ে চালু করা হবে। আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর ২০২২ সালের মধ্যেই এই বাসগুলো নির্মিত হবে, আমাদের সব অবকাঠামো নির্মাণও সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি। পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া ঘাটারচর- কাঁচপুর রুটে বাস কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘ঢাকা নগর পরিবহন ঢাকাবাসীর কাছে সমাদৃত হয়েছে। একটি দুটি বাস কমলো বা বাড়লো, সেটা কিন্তু সাফল্যের নির্ণায়ক নয়। সফলতার বিষয় হচ্ছে এই যাত্রাপথটি এখনও চালু রয়েছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রান্স সিলভা তাদের বাসগুলো সরিয়ে নিয়েছে। তারা নতুন আরও ২০টি বাস চালু করার আবেদন করেছিল কিন্তু আমরা তাদের নতুন করে আর অনুমোদন দেব না। এছাড়া জাহান এন্টারপ্রাইজ ২০টি বাস চালুর আবেদন করেছিল এবং সেগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে। সুতারাং সেই বাসগুলো এই যাত্রাপথে আমরা চালু করব।’
এক প্রশ্নের উত্তরে ঢাদসিক মেয়র শেখ তাপস বলেন বলেন, ‘ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএ এবং ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে আমরা আগামী ১৭ জুলাই হতে ২৮ জুলাই পর্যন্ত যৌথ অভিযান করব। এই অবৈধ ১৬৪৬টি বাস, যারা বিভিন্নভাবে লুকিয়ে-চুকিয়ে বিভিন্ন যাত্রাপথে চলে, এদের আমরা ঢাকা শহরের যেখানে পাই সেখানেই ব্যবস্থা নেবো। শুধু দিনের বেলায়ই নয়, প্রয়োজনে আমরা রাতেও অভিযান পরিচালনা করব। তারা টার্মিনালে রাখলে টার্মিনালে থেকে খুঁজে বের করব, রাস্তায় রাখলে রাস্তার মধ্যে খুঁজে বের করবো। কাউন্টারের পাশে রাখলে কাউন্টারের পাশ থেকে আমরা খুঁজে বের করবো। আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এই ১৬৪৬টি বাস জব্দ করব, ধ্বংস করব।’
২১ নম্বর যাত্রাপথে রুট পারমিটবিহীন ও অবৈধ কোন বাস চলবে না জানিয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘২১ নম্বর যাত্রাপথ ঘাটারচর হতে কাঁচপুরে ঢাকা নগর পরিবহন ছাড়া অন্য কোন বাস চলবে না। এই যাত্রাপথে শুধু ঢাকা নগর পরিবহনই চলবে।’
রুটগুলো হলোÑ ২২ নম্বর রুট : ঘাটারচর- ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর টাউন হল- আসাদ গেট-ফার্মগেট কাওরানবাজার - শাহবাগ-কাকরাইল ফকিরাপুল-মতিঝিল- টিকাটুলি-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-কোনাপাড়া -ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার।
২৩ নম্বর রুট : ঘাটারচর-ওয়াশপুর-বসিলা -মোহাম্মদপুর-জাপান গার্ডেন সিটি-শ্যামলী -কলেজ গেট-আসাদ গেট-কলাবাগান- সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-মৎস্য ভবন- প্রেসক্লাব-গুলিস্তান (জিরো পয়েন্ট)-দৈনিক বাংলা-রাজারবাগ-কমলাপুর-ধলপুর- যাত্রাবাড়ী- শনিরআখড়া-রায়েরবাগ- মাতুয়াইল-সাইনবোর্ড-চিটাগাং রোড।
২৬ নম্বর রুট : ঘাটারচর-ওয়াশপুর-বসিলা -মোহাম্মদপুর-টাউন হল-আসাদ গেট- কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-নিউমার্কেট- আজিমপুর-পলাশী-চাঁনখার পুল-ফ্লাইওভার হয়ে-পোস্তগোলা কদমতলী।
সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান মিয়া, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার, ২২ জুন ২০২২ , ৮ আষাড় ১৪২৮ ২২ জিলকদ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর হতে নগরীর ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহনের আওতায় ২০০ নতুন বাস চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র (ডিএসসিসি) শেখ ফজলে নূর তাপস। আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট যাত্রাপথগুলোতে যাত্রীছাউনি, বাস-বেসহ সব অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন হবে। ১ সেপ্টেম্বর নতুন তিন রুটে সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৩তম সভা শেষে সাংবাদিকদেরকে এ কথা জানান তিনি।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা নতুন তিনটি যাত্রাপথে ঢাকা নগর পরিবহন চালু করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। এই তিনটি যাত্রাপথেই আমরা আবেদন পেয়েছি। সেই আবেদনগুলোসহ বিআরটিসি’র আবেদন পর্যালোচনা করেছি। আমরা নতুন তিনটি যাত্রাপথের মধ্যে ২২ নম্বর যাত্রাপথে অভি মোটরসের ২০২২ সালে নির্মিত ৫০টি বাস চালুর প্রস্তাব পেয়েছি। তাদের আবেদন গ্রহণ করেছি।’
এছাড়া ২৩ নম্বর যাত্রাপথে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ২০২২ সালে নতুন নির্মিত ১০০টি বাস চালুর আবেদন করেছে। সেটাও গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ২৬ নম্বর যাত্রাপথে বিআরটিসি’র আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের ৫০টি ডাবল ডেকার বাস দিয়ে চালু করা হবে। আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর ২০২২ সালের মধ্যেই এই বাসগুলো নির্মিত হবে, আমাদের সব অবকাঠামো নির্মাণও সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি। পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া ঘাটারচর- কাঁচপুর রুটে বাস কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘ঢাকা নগর পরিবহন ঢাকাবাসীর কাছে সমাদৃত হয়েছে। একটি দুটি বাস কমলো বা বাড়লো, সেটা কিন্তু সাফল্যের নির্ণায়ক নয়। সফলতার বিষয় হচ্ছে এই যাত্রাপথটি এখনও চালু রয়েছে। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ট্রান্স সিলভা তাদের বাসগুলো সরিয়ে নিয়েছে। তারা নতুন আরও ২০টি বাস চালু করার আবেদন করেছিল কিন্তু আমরা তাদের নতুন করে আর অনুমোদন দেব না। এছাড়া জাহান এন্টারপ্রাইজ ২০টি বাস চালুর আবেদন করেছিল এবং সেগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে। সুতারাং সেই বাসগুলো এই যাত্রাপথে আমরা চালু করব।’
এক প্রশ্নের উত্তরে ঢাদসিক মেয়র শেখ তাপস বলেন বলেন, ‘ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএ এবং ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের সমন্বয়ে আমরা আগামী ১৭ জুলাই হতে ২৮ জুলাই পর্যন্ত যৌথ অভিযান করব। এই অবৈধ ১৬৪৬টি বাস, যারা বিভিন্নভাবে লুকিয়ে-চুকিয়ে বিভিন্ন যাত্রাপথে চলে, এদের আমরা ঢাকা শহরের যেখানে পাই সেখানেই ব্যবস্থা নেবো। শুধু দিনের বেলায়ই নয়, প্রয়োজনে আমরা রাতেও অভিযান পরিচালনা করব। তারা টার্মিনালে রাখলে টার্মিনালে থেকে খুঁজে বের করব, রাস্তায় রাখলে রাস্তার মধ্যে খুঁজে বের করবো। কাউন্টারের পাশে রাখলে কাউন্টারের পাশ থেকে আমরা খুঁজে বের করবো। আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করে এই ১৬৪৬টি বাস জব্দ করব, ধ্বংস করব।’
২১ নম্বর যাত্রাপথে রুট পারমিটবিহীন ও অবৈধ কোন বাস চলবে না জানিয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘২১ নম্বর যাত্রাপথ ঘাটারচর হতে কাঁচপুরে ঢাকা নগর পরিবহন ছাড়া অন্য কোন বাস চলবে না। এই যাত্রাপথে শুধু ঢাকা নগর পরিবহনই চলবে।’
রুটগুলো হলোÑ ২২ নম্বর রুট : ঘাটারচর- ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর টাউন হল- আসাদ গেট-ফার্মগেট কাওরানবাজার - শাহবাগ-কাকরাইল ফকিরাপুল-মতিঝিল- টিকাটুলি-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-কোনাপাড়া -ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার।
২৩ নম্বর রুট : ঘাটারচর-ওয়াশপুর-বসিলা -মোহাম্মদপুর-জাপান গার্ডেন সিটি-শ্যামলী -কলেজ গেট-আসাদ গেট-কলাবাগান- সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-মৎস্য ভবন- প্রেসক্লাব-গুলিস্তান (জিরো পয়েন্ট)-দৈনিক বাংলা-রাজারবাগ-কমলাপুর-ধলপুর- যাত্রাবাড়ী- শনিরআখড়া-রায়েরবাগ- মাতুয়াইল-সাইনবোর্ড-চিটাগাং রোড।
২৬ নম্বর রুট : ঘাটারচর-ওয়াশপুর-বসিলা -মোহাম্মদপুর-টাউন হল-আসাদ গেট- কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-নিউমার্কেট- আজিমপুর-পলাশী-চাঁনখার পুল-ফ্লাইওভার হয়ে-পোস্তগোলা কদমতলী।
সভায় অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান মিয়া, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।