ছাড়াও উত্তরবঙ্গের ৫৬ হাজার হেক্টর জমি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত

কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘অস্বাভাবিক বৃষ্টির কারণে সিলেটে পানি এসেছে। এখন তেমন কোন ফসল ছিল না। পতিত অনেক জমি ছিল। সিলেটে ২২ হাজার হেক্টর, আর সুনামগঞ্জসহ ২৮ হাজার হেক্টরের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের ৫৬ হাজার হেক্টর জমিও আক্রান্ত হয়েছে। বন্যায় আউশের ক্ষতি হবে।’

গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত শিরুজিমাথ সামিরের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময় বীজতলা করা হয়, রোপা। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় ফসল। প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমরা আমন করি। এটা থেকেই আমাদের এক কোটি ৫০ থেকে ৬০ লাখ টন ধান হয়। এটা কিন্তু বন্যার ওপর নির্ভর করে। এখনও বীজতলা সেভাবে করে নাই। কেবল শুরু করেছে। আর যদি বৃষ্টি না হয় আর বন্যা যদি না বাড়ে তাহলে ভালো। তবে অনেক সময় দেখা যায় আবার বন্যা আসে, এতে বীজতলা নষ্ট হয়। তখন আমরা আবার করি, পুনর্বাসন কর্মসূচিতে যাই।’

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার প্রভাব ধান উৎপাদনে না পড়লেও শাক-সবজি উৎপাদনে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘মাঠে এই মুহূর্তে তেমন কোন ফসল না থাকায় ধান জাতীয় ফসল উৎপাদনে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘এখন শাক-সবজি ছাড়া তেমন কোন ফসল মাঠে নেই। ফলে শাক-সবজিতে প্রভাব পড়বে। আমরা এ জন্য কনসার্ন আছি।’

বন্যায় শাক-সবজি উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫-৬ হাজার হেক্টরে। এ সময় গ্রীষ্মকালীন সবজির বেশ ক্ষতি হয়েছে। তিল ও বাদাম চর এলাকায় ছিল, সেটারও ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আউশ ও শাক-সবজির। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। এখন পর্যন্ত যা ক্ষতি হয়েছে সেটা কিছু না। যেহতু ফসলই নেই। এখন আমনটা কেমন হয়, তবে শাক-সবজির ওপরে প্রভাব পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন, আমনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি রাখতে। বীজতলা যদি নষ্ট হয় তাহলে আমরা যে এক্সট্রা কিছু বীজ রাখি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য, আবার বীজতলা তৈরি করে মানুষকে দেয়া, সে প্রস্ততি আমরা নিয়েছি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, আমন হলো ফটোসেনসিটিভ। দিন ছোট হলেই এতে ফুল চলে আসে। যে ধানগুলো সাধারণত আমনে করা হয় সেটা করলে ফুল আসবে আর উৎপাদন কম হবে। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা জাত উদ্ভাবন করেছেন যেগুলো লেস ফটোসেনসিটিভ। এগুলো বিবেচনায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যে পরিস্থিতিই আসুক, যদি আমন নষ্ট হয়ে যায় সেক্ষেত্রে রবি ফসল আমাদের বাড়াতে হবে। শাক-সবজি, আলু, তেলের বীজ ও সার আমরা বিনামূল্যে চাষিদের দেবো। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।

বুধবার, ২২ জুন ২০২২ , ৮ আষাড় ১৪২৮ ২২ জিলকদ ১৪৪৩

সিলেট-সুনামগঞ্জ

ছাড়াও উত্তরবঙ্গের ৫৬ হাজার হেক্টর জমি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘অস্বাভাবিক বৃষ্টির কারণে সিলেটে পানি এসেছে। এখন তেমন কোন ফসল ছিল না। পতিত অনেক জমি ছিল। সিলেটে ২২ হাজার হেক্টর, আর সুনামগঞ্জসহ ২৮ হাজার হেক্টরের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের ৫৬ হাজার হেক্টর জমিও আক্রান্ত হয়েছে। বন্যায় আউশের ক্ষতি হবে।’

গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত শিরুজিমাথ সামিরের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এ সময় বীজতলা করা হয়, রোপা। এটা আমাদের সবচেয়ে বড় ফসল। প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমরা আমন করি। এটা থেকেই আমাদের এক কোটি ৫০ থেকে ৬০ লাখ টন ধান হয়। এটা কিন্তু বন্যার ওপর নির্ভর করে। এখনও বীজতলা সেভাবে করে নাই। কেবল শুরু করেছে। আর যদি বৃষ্টি না হয় আর বন্যা যদি না বাড়ে তাহলে ভালো। তবে অনেক সময় দেখা যায় আবার বন্যা আসে, এতে বীজতলা নষ্ট হয়। তখন আমরা আবার করি, পুনর্বাসন কর্মসূচিতে যাই।’

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার প্রভাব ধান উৎপাদনে না পড়লেও শাক-সবজি উৎপাদনে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘মাঠে এই মুহূর্তে তেমন কোন ফসল না থাকায় ধান জাতীয় ফসল উৎপাদনে তেমন কোন প্রভাব পড়বে না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘এখন শাক-সবজি ছাড়া তেমন কোন ফসল মাঠে নেই। ফলে শাক-সবজিতে প্রভাব পড়বে। আমরা এ জন্য কনসার্ন আছি।’

বন্যায় শাক-সবজি উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫-৬ হাজার হেক্টরে। এ সময় গ্রীষ্মকালীন সবজির বেশ ক্ষতি হয়েছে। তিল ও বাদাম চর এলাকায় ছিল, সেটারও ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে আউশ ও শাক-সবজির। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। এখন পর্যন্ত যা ক্ষতি হয়েছে সেটা কিছু না। যেহতু ফসলই নেই। এখন আমনটা কেমন হয়, তবে শাক-সবজির ওপরে প্রভাব পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল নির্দেশ দিয়েছেন, আমনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি রাখতে। বীজতলা যদি নষ্ট হয় তাহলে আমরা যে এক্সট্রা কিছু বীজ রাখি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য, আবার বীজতলা তৈরি করে মানুষকে দেয়া, সে প্রস্ততি আমরা নিয়েছি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, আমন হলো ফটোসেনসিটিভ। দিন ছোট হলেই এতে ফুল চলে আসে। যে ধানগুলো সাধারণত আমনে করা হয় সেটা করলে ফুল আসবে আর উৎপাদন কম হবে। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানীরা জাত উদ্ভাবন করেছেন যেগুলো লেস ফটোসেনসিটিভ। এগুলো বিবেচনায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি। যে পরিস্থিতিই আসুক, যদি আমন নষ্ট হয়ে যায় সেক্ষেত্রে রবি ফসল আমাদের বাড়াতে হবে। শাক-সবজি, আলু, তেলের বীজ ও সার আমরা বিনামূল্যে চাষিদের দেবো। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি।