জয় হোক মানবতার

রহিম আব্দুর রহিম

প্রবল বর্ষণ আসাম মিজোরাম পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে বাংলাদেশের পূর্ব-উত্তরাঞ্চল ৯০ শতাংশ ভূ-ভাগ পানির নিচে, ঘরে পানি, বাইরে পানি, বিদ্যুৎ নেই, ঘুটঘুটে অন্ধকার। ইলেকট্রনিকস যোগাযোগ বন্ধ, বিশুদ্ধ খাবারের মহাসংকট দেখা দিয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জের প্রকৃতিতে। বাংলার লন্ডন বলে খ্যাত ধনী অঞ্চলটি আজ ভাসছে পানির তোড়ে। রেলপথ, সড়কপথ রুদ্ধ। প্রাণ-প্রাণীর সুখের সংসারে অসহায়ত্বের কালো আঁধার।

দেশের এই অঞ্চলে অর্ধকোটি মানুষ যখন পানিবন্দী তখন তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে অসাধু একটি গোষ্ঠী আট শত টাকার নৌকা ভাড়া ৫০ হাজার টাকা, ১০ টাকার মোমবাতি ৩০০ টাকায় বিক্রি করছে। খাদ্যজাত দ্রব্যের মূল্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

সরকার তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো যার যার অবস্থান থেকে নেমে পড়েছে দুর্গতদের সহযোগিতার জন্য। এই দুঃসময়ে, বন্যাপীড়িত মানুষের চিকিৎসায় ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিনামূলে সরবরাহ করছেন মানবিক অনেক মানুষ। চট্টগ্রাম মেডিকেলগামী যাত্রীদের থেকে ভাড়া নিচ্ছে না ক্ষুধার্ত, পীড়িত, দরিদ্র ড্রাইভার, রাইডার চালকরা। ওষুধের দোকানগুলো থেকে মালিকরা বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ করে এক মানবিক বিশ্ব সৃষ্টির ইতিহাস গড়ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভাগীয় শহরে অনেক প্রতিষ্ঠানের শত শত তরুণ শিক্ষার্থীরা দুর্গতদের রক্তদানের প্লাকার্ড ঝুলিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুর্গত অঞ্চলে। দুর্যোগ, মহামারী কোন ব্যক্তি মানুষের একার দুঃখ, দুর্দশা ডেকে আনে না, যা সব প্রাণের অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। এ সময় কোন রাজনীতি, দোষারোপ সভ্য সমাজে চলতে পারে না। জাত-পাত দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে মানবিক বিশ্ব গড়তে হবে। দুর্গতদের প্রাণ রক্ষার সংগ্রামে নামতে হবে। জয় হোক মানবতার।

[লেখক : নাট্যকার]

image
আরও খবর

বুধবার, ২২ জুন ২০২২ , ৮ আষাড় ১৪২৮ ২২ জিলকদ ১৪৪৩

জয় হোক মানবতার

রহিম আব্দুর রহিম

image

প্রবল বর্ষণ আসাম মিজোরাম পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে বাংলাদেশের পূর্ব-উত্তরাঞ্চল ৯০ শতাংশ ভূ-ভাগ পানির নিচে, ঘরে পানি, বাইরে পানি, বিদ্যুৎ নেই, ঘুটঘুটে অন্ধকার। ইলেকট্রনিকস যোগাযোগ বন্ধ, বিশুদ্ধ খাবারের মহাসংকট দেখা দিয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জের প্রকৃতিতে। বাংলার লন্ডন বলে খ্যাত ধনী অঞ্চলটি আজ ভাসছে পানির তোড়ে। রেলপথ, সড়কপথ রুদ্ধ। প্রাণ-প্রাণীর সুখের সংসারে অসহায়ত্বের কালো আঁধার।

দেশের এই অঞ্চলে অর্ধকোটি মানুষ যখন পানিবন্দী তখন তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে অসাধু একটি গোষ্ঠী আট শত টাকার নৌকা ভাড়া ৫০ হাজার টাকা, ১০ টাকার মোমবাতি ৩০০ টাকায় বিক্রি করছে। খাদ্যজাত দ্রব্যের মূল্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

সরকার তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী। সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো যার যার অবস্থান থেকে নেমে পড়েছে দুর্গতদের সহযোগিতার জন্য। এই দুঃসময়ে, বন্যাপীড়িত মানুষের চিকিৎসায় ওষুধ, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিনামূলে সরবরাহ করছেন মানবিক অনেক মানুষ। চট্টগ্রাম মেডিকেলগামী যাত্রীদের থেকে ভাড়া নিচ্ছে না ক্ষুধার্ত, পীড়িত, দরিদ্র ড্রাইভার, রাইডার চালকরা। ওষুধের দোকানগুলো থেকে মালিকরা বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ করে এক মানবিক বিশ্ব সৃষ্টির ইতিহাস গড়ছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভাগীয় শহরে অনেক প্রতিষ্ঠানের শত শত তরুণ শিক্ষার্থীরা দুর্গতদের রক্তদানের প্লাকার্ড ঝুলিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুর্গত অঞ্চলে। দুর্যোগ, মহামারী কোন ব্যক্তি মানুষের একার দুঃখ, দুর্দশা ডেকে আনে না, যা সব প্রাণের অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। এ সময় কোন রাজনীতি, দোষারোপ সভ্য সমাজে চলতে পারে না। জাত-পাত দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে মানবিক বিশ্ব গড়তে হবে। দুর্গতদের প্রাণ রক্ষার সংগ্রামে নামতে হবে। জয় হোক মানবতার।

[লেখক : নাট্যকার]