বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসুন

হঠাৎ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে দেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। পরিবারের ছোট ছেলেমেয়ে এবং বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে চলছে মানবেতর জীবনযাপন। চারিদিকে শুধু হাহাকার আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস। তীব্র বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, মসজিদ, মন্দির প্লাবিত হয়েছে।

পানির প্রবল তোড়ে বাঁধসংলগ্ন প্রায় সব সড়কও ভেসে গেছে। এতে করে বেঁচে থাকার জন্য শেষ সম্বলটুকু নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, গবাদিপশু, পাখি নিয়ে ছুটছে হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। সেখানেও মিলছে না একটুখানি শান্তি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রজুড়েও নেই আর নেই শব্দে তৈরি হচ্ছে হাহাকার। খাবারের সংকট, নিরাপদ পানির অভাব আর স্যানিটেশন ব্যবস্থার অসুবিধার হওয়ায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বানভাসি মানুষদের। তারা পথ চেয়ে বসে আছে সাহায্যের আশায়।

সরকারিভাবে কিংবা সমাজের বিত্তবান মানুষের করা সহযোগিতায় তাদের এখন একমাত্র বেঁচে থাকার উপায়। কিন্তু সরকার থেকে এসব মানুষের দুর্ভোগ কমাতে যে পরিমাণ সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে সেটা কোনভাবেই যথেষ্ট নয়। এমতাবস্থায় তাদের আরও বেশি খাদ্য সহায়তাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবার বিষয়ে সমাজের বিত্তবান মানুষসহ সব শ্রেণীর মানুষের এগিয়ে আসতে হবে।

ইতোমধ্যেই দেশের মানুষ সরাসরি নেমে এসেছে তাদের পাশে দাঁড়াতে। কেউ কেউ নিজে নগদ অর্থ দিয়ে, বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা, খাবার সংগ্রহ করে তাদের সহযোগিতা করছেন। অনেকে স্বশরীরে গিয়ে নৌকা নিয়ে তাদের উদ্ধার করেছেন। দেশের বিভিন্ন শহরে সামাজিক সংগঠন এসব বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া সাহায্য একজায়গায় করে তাদের কাছে পৌঁছে দিতেও দেখা গেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। যেটা আমাদের জাতীয় এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও ও সামাজিক সংগঠন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে বন্যা মোকাবিলায় সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে বর্তমানে জলবায়ুগত পরিবর্তনের ফলে এভাবে অতিবৃষ্টি কিংবা বন্যার প্রভাব আমাদের জন্য এক সময় বড় ভয়াবহ সংকট তৈরি করবে।

রিয়াদ হোসেন

বুধবার, ২২ জুন ২০২২ , ৮ আষাড় ১৪২৮ ২২ জিলকদ ১৪৪৩

বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে আসুন

image

হঠাৎ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে দেশের উত্তর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। পরিবারের ছোট ছেলেমেয়ে এবং বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে চলছে মানবেতর জীবনযাপন। চারিদিকে শুধু হাহাকার আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ-বাতাস। তীব্র বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলায় রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, মসজিদ, মন্দির প্লাবিত হয়েছে।

পানির প্রবল তোড়ে বাঁধসংলগ্ন প্রায় সব সড়কও ভেসে গেছে। এতে করে বেঁচে থাকার জন্য শেষ সম্বলটুকু নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে স্ত্রী, পুত্র-কন্যা, গবাদিপশু, পাখি নিয়ে ছুটছে হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। সেখানেও মিলছে না একটুখানি শান্তি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রজুড়েও নেই আর নেই শব্দে তৈরি হচ্ছে হাহাকার। খাবারের সংকট, নিরাপদ পানির অভাব আর স্যানিটেশন ব্যবস্থার অসুবিধার হওয়ায় বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বানভাসি মানুষদের। তারা পথ চেয়ে বসে আছে সাহায্যের আশায়।

সরকারিভাবে কিংবা সমাজের বিত্তবান মানুষের করা সহযোগিতায় তাদের এখন একমাত্র বেঁচে থাকার উপায়। কিন্তু সরকার থেকে এসব মানুষের দুর্ভোগ কমাতে যে পরিমাণ সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে সেটা কোনভাবেই যথেষ্ট নয়। এমতাবস্থায় তাদের আরও বেশি খাদ্য সহায়তাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবার বিষয়ে সমাজের বিত্তবান মানুষসহ সব শ্রেণীর মানুষের এগিয়ে আসতে হবে।

ইতোমধ্যেই দেশের মানুষ সরাসরি নেমে এসেছে তাদের পাশে দাঁড়াতে। কেউ কেউ নিজে নগদ অর্থ দিয়ে, বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা, খাবার সংগ্রহ করে তাদের সহযোগিতা করছেন। অনেকে স্বশরীরে গিয়ে নৌকা নিয়ে তাদের উদ্ধার করেছেন। দেশের বিভিন্ন শহরে সামাজিক সংগঠন এসব বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পাওয়া সাহায্য একজায়গায় করে তাদের কাছে পৌঁছে দিতেও দেখা গেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। যেটা আমাদের জাতীয় এই সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতায় যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন এনজিও ও সামাজিক সংগঠন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে বন্যা মোকাবিলায় সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে বর্তমানে জলবায়ুগত পরিবর্তনের ফলে এভাবে অতিবৃষ্টি কিংবা বন্যার প্রভাব আমাদের জন্য এক সময় বড় ভয়াবহ সংকট তৈরি করবে।

রিয়াদ হোসেন