বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো দেশে শক্তিশালী কোন রাজনেতিক দল নেই বলে মনে করেন দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। তার মতে, নেতৃত্ব সংকটে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির অবস্থা এখন খুবই দুর্বল। বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে আনতে একজন যোগ্য নেতা খুঁজে বের করতে হবে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে এই বিষয়গুলো উঠে আসে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি দল নির্বাচনে অংশ নিতে আর মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হলে দেখাতে হবে, সেই দল নির্বাচনে জয়ী হলে কে হবে তাদের সরকারপ্রধান। বিএনপি যে অংশ নেবে আগামী নির্বাচনে তারা কাকে দেখাবে?’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন ‘দলটির নেতৃত্ব কার হাতে এবং কে নেতা? ওরা ইলেকশন করবে কী নিয়ে, পুঁজি কী? বিএনপির কি একটাও যোগ্য নেতা নেই যাকে তারা চেয়ারম্যান করতে পারে?’

‘ওদের জন্য কান্নাকাটি করে লাভ নেই। ওরা ইলেকশন করবে কাকে নিয়ে, আমাকে বলতে পারবেন?’ পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একজন দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি’ যাকে তিনি নির্বাহী আদেশে বয়স বিবেচনায় বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন, অন্যজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত।

আগের দুটি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি- এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি একেক সিটে দিনে তিনবার করে প্রার্র্থী পরিবর্তন করে। ঢাকা থেকে একজন ঠিক হয়। আবার লন্ডন থেকে আরেকজন। যে যত টাকা দিয়েছে, তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তারা মাঝখানে নির্বাচন ছেড়ে চলে গেল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন মাঝপথে কেউ নির্বাচন ছেড়ে চলে যায়, তখন তো মাঠ ফাঁকা। বাকিরা তখন যা

ে পৃষ্ঠা : ২ ক : ২

বিএনপির নেতৃত্ব

(১৬ পৃষ্ঠার পর)

খুশি, তাই করতে পারে। সেই দোষ তো আওয়ামী লীগের না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোন দল নির্বাচনে জয়ী হলে কে সরকারপ্রধান হবেন, সেটা আগেই বিবেচনা করা হয়। তারা যে নির্বাচন করবে, তাতে কাকে দেখাবে? সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে? সে তো দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে কত টাকা খরচ করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেল একটু খোঁজ করেন। এখানে গণতন্ত্রের দোষ কোথায়?’

সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা দলের তো তথৈবচ অবস্থা। তাদের তো সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। আর আমাদের বাকি ছিল বাম দলগুলো।’ ভাঙতে ভাঙতে বাম দলগুলো এখন ‘ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র’ অবস্থা বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আছে কে আমাকে সেটা বলেন না? একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন, মাঠে দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখবো কম্পিটিশনে জনগণ যাকে চায়। আমার কথা একটাই স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ অনেক থাকে কিন্তু ওরকম সুযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তো আমি হইনি কখনো।’

জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে তিনি ক্ষমতায় থাকতে চান না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ক্ষমতার ইচ্ছা হলো আমার দেশের উন্নতি করা। আমি নির্বাচন করব, জিতে ক্ষমতায় আসব।’

বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রশ্নে বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ কোন চাপের মুখে কখনো নতি স্বীকার করেনি, করবেও না। আর মানবাধিকার আমাদের শিখাতে আসবে কারা? যারা খুনিদের আশ্রয় দেয়, যে দেশে প্রতিনিয়ত স্কুলে গুলি হয়, ছাত্রছাত্রী মারা যায়, রাস্তাঘাটে পুলিশ গলায় পাড়ায়ে মেরে ফেলে, তো তারা আমাদের কি মানবাধিকার শেখাবে?’

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ এগুলো নিয়ে (মানবাধিকার) তারা কথা ওঠাবে, আর আমাদের কিছু লোক নাচবে এটাই। কিন্তু আমাদের যে আত্মবিশ্বাস আছে, আমরা সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই চলব। জনগণের শক্তি নিয়ে চলবো।’

বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২ , ৯ আষাড় ১৪২৮ ২৩ জিলকদ ১৪৪৩

বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো দেশে শক্তিশালী কোন রাজনেতিক দল নেই বলে মনে করেন দলটির প্রধান শেখ হাসিনা। তার মতে, নেতৃত্ব সংকটে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির অবস্থা এখন খুবই দুর্বল। বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে আনতে একজন যোগ্য নেতা খুঁজে বের করতে হবে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে এই বিষয়গুলো উঠে আসে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি দল নির্বাচনে অংশ নিতে আর মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হলে দেখাতে হবে, সেই দল নির্বাচনে জয়ী হলে কে হবে তাদের সরকারপ্রধান। বিএনপি যে অংশ নেবে আগামী নির্বাচনে তারা কাকে দেখাবে?’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন ‘দলটির নেতৃত্ব কার হাতে এবং কে নেতা? ওরা ইলেকশন করবে কী নিয়ে, পুঁজি কী? বিএনপির কি একটাও যোগ্য নেতা নেই যাকে তারা চেয়ারম্যান করতে পারে?’

‘ওদের জন্য কান্নাকাটি করে লাভ নেই। ওরা ইলেকশন করবে কাকে নিয়ে, আমাকে বলতে পারবেন?’ পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একজন দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি’ যাকে তিনি নির্বাহী আদেশে বয়স বিবেচনায় বাসায় থাকার সুযোগ দিয়েছেন, অন্যজন ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও একুশে অগাস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত।

আগের দুটি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি- এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি একেক সিটে দিনে তিনবার করে প্রার্র্থী পরিবর্তন করে। ঢাকা থেকে একজন ঠিক হয়। আবার লন্ডন থেকে আরেকজন। যে যত টাকা দিয়েছে, তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। তারা মাঝখানে নির্বাচন ছেড়ে চলে গেল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন মাঝপথে কেউ নির্বাচন ছেড়ে চলে যায়, তখন তো মাঠ ফাঁকা। বাকিরা তখন যা

ে পৃষ্ঠা : ২ ক : ২

বিএনপির নেতৃত্ব

(১৬ পৃষ্ঠার পর)

খুশি, তাই করতে পারে। সেই দোষ তো আওয়ামী লীগের না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোন দল নির্বাচনে জয়ী হলে কে সরকারপ্রধান হবেন, সেটা আগেই বিবেচনা করা হয়। তারা যে নির্বাচন করবে, তাতে কাকে দেখাবে? সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে? সে তো দেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে কত টাকা খরচ করে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেল একটু খোঁজ করেন। এখানে গণতন্ত্রের দোষ কোথায়?’

সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরেকটা দলের তো তথৈবচ অবস্থা। তাদের তো সাংগঠনিক তৎপরতা নেই। আর আমাদের বাকি ছিল বাম দলগুলো।’ ভাঙতে ভাঙতে বাম দলগুলো এখন ‘ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র’ অবস্থা বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আছে কে আমাকে সেটা বলেন না? একটা ভালো শক্তিশালী দল করে দেন, মাঠে দেখা হবে। মাঠে আমরা দেখবো কম্পিটিশনে জনগণ যাকে চায়। আমার কথা একটাই স্পষ্ট, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ অনেক থাকে কিন্তু ওরকম সুযোগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তো আমি হইনি কখনো।’

জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে তিনি ক্ষমতায় থাকতে চান না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ক্ষমতার ইচ্ছা হলো আমার দেশের উন্নতি করা। আমি নির্বাচন করব, জিতে ক্ষমতায় আসব।’

বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রশ্নে বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ কোন চাপের মুখে কখনো নতি স্বীকার করেনি, করবেও না। আর মানবাধিকার আমাদের শিখাতে আসবে কারা? যারা খুনিদের আশ্রয় দেয়, যে দেশে প্রতিনিয়ত স্কুলে গুলি হয়, ছাত্রছাত্রী মারা যায়, রাস্তাঘাটে পুলিশ গলায় পাড়ায়ে মেরে ফেলে, তো তারা আমাদের কি মানবাধিকার শেখাবে?’

তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ এগুলো নিয়ে (মানবাধিকার) তারা কথা ওঠাবে, আর আমাদের কিছু লোক নাচবে এটাই। কিন্তু আমাদের যে আত্মবিশ্বাস আছে, আমরা সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই চলব। জনগণের শক্তি নিয়ে চলবো।’