১৮ বছর পর গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার রায় : ২ জনের যাবজ্জীবন

দীর্ঘ ১৮ বছর পর গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রংপুরের পীরগঞ্জে স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বিকেলে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ৩-এর বিচারক এম আলী আহাম্মেদ এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার একবারপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের শওকত শেখের ছেলে মিলন শেখ তার স্ত্রীকে নিয়ে আত্মীয়র বাসায় দাওয়াত খেয়ে বাসায় ফেরার পথে আসামি একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদ তাদের পথরোধ করে। অস্ত্রের মুখে স্বামী মিলন শেখকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে মাদারগঞ্জ কলেজের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে গণধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে যায়। তার আর্তচিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে এসে স্বামী ও স্ত্রীকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী মিলন শেখ বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ইকবাল বাহার দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মামলা চলার পর অবশেষে গতকাল বিচারক দুই আসামি একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদকে দোষী সাব্যস্ত করে ধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং অপহরণের অভিযোগে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর দুই আসামিকে পুলিশি পাহারায় কোট হাজতে নিয়ে যাওয়া হয় পরে তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট তাইবুর রহমান লাইজু এবং এপিপি অ্যাডভোকেট মাকজিয়া হাসান দীবা। তারা জানান, দেরিতে হলেও জঘন্য ঘটনার ন্যায়বিচার পেয়েছে বিচারপ্রার্থীরা। এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতি হলো বলে আমরা মনে করি। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সালাম জানান, তার মক্কেল ন্যায়বিচার পায়নি, তারা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করবেন।

শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২ , ১০ আষাড় ১৪২৮ ২৪ জিলকদ ১৪৪৩

১৮ বছর পর গৃহবধূ গণধর্ষণ মামলার রায় : ২ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

দীর্ঘ ১৮ বছর পর গৃহবধূকে গণধর্ষণের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রংপুরের পীরগঞ্জে স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বিকেলে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ৩-এর বিচারক এম আলী আহাম্মেদ এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার একবারপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের শওকত শেখের ছেলে মিলন শেখ তার স্ত্রীকে নিয়ে আত্মীয়র বাসায় দাওয়াত খেয়ে বাসায় ফেরার পথে আসামি একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদ তাদের পথরোধ করে। অস্ত্রের মুখে স্বামী মিলন শেখকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে মাদারগঞ্জ কলেজের পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে গণধর্ষণ করে ফেলে রেখে চলে যায়। তার আর্তচিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে এসে স্বামী ও স্ত্রীকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী মিলন শেখ বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ইকবাল বাহার দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মামলা চলার পর অবশেষে গতকাল বিচারক দুই আসামি একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদকে দোষী সাব্যস্ত করে ধর্ষণের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং অপহরণের অভিযোগে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পর দুই আসামিকে পুলিশি পাহারায় কোট হাজতে নিয়ে যাওয়া হয় পরে তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট তাইবুর রহমান লাইজু এবং এপিপি অ্যাডভোকেট মাকজিয়া হাসান দীবা। তারা জানান, দেরিতে হলেও জঘন্য ঘটনার ন্যায়বিচার পেয়েছে বিচারপ্রার্থীরা। এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতি হলো বলে আমরা মনে করি। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুস সালাম জানান, তার মক্কেল ন্যায়বিচার পায়নি, তারা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করবেন।