গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশ উন্নত হচ্ছে

সংসদে প্রধানমন্ত্রী

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।? সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে জাতীয় সংসদে তিনি বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ যাতে হয় সেই পরিকল্পনা তিনি তৈরি করে দিয়েছেন। এই ধারাবাহিকতা নিয়ে দেশ চলতে থাকলে, দেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না।

আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের আওয়ামী লীগের ভূমিকা তুলে ধরে দলের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নামের সঙ্গে স্বাধীনতা ও অধিকার জড়িত। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত করে সংবিধান দিয়েছিলেন জাতির পিতা। অল্প সময়ের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দেয় বাংলাদেশকে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সৃষ্টিলগ্ন থেকে সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। পাকিস্তান নামে দেশটি যেভাবে আমাদের শোষণ করে যাচ্ছিল। ২৩ বছরের সংগ্রাম ও জাতির পিতার নেতৃত্বে সেখান থেকে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেয়া।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমরা কেবল জাতির পিতাকে হারাইনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনাকেও হারিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হয়েছিল। জয় বাংলা সেøাগান নির্বাসিত হয়েছিল। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর বাংলাদেশ সারাবিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হতে হবে না। কারো কাছে হাত পেতে চলতে হবে না। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণেরই সংগঠন। আওয়ামী লীগ সবসময়ই এদেশের শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে গেছে। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। কত পরিবার কষ্ট পেয়েছে, কত মানুষ আত্মত্যাগ করেছে!’

বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্মরণ করে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের সেবা করার অধিকার পেয়েছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আজকে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। সেটাও গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা করেছি। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই সব হারিয়ে আমি ফিরে এসেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করেছিল। পাশাপাশি জনগণের আশ্রয়েই আমি এসেছিলাম। তাদের মাঝে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম আমার হারানো বাবা মায়ের স্নেহ। হারানো ভাইয়ের স্নেহ। কাজেই এদেশের মানুষের জন্য যেকোন আত্মত্যাগে আমি সবসময় প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলা ভাষায় কথা বলা, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।’

শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২ , ১০ আষাড় ১৪২৮ ২৪ জিলকদ ১৪৪৩

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই দেশ উন্নত হচ্ছে

সংসদে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।? সরকারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে জাতীয় সংসদে তিনি বলেন, ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ যাতে হয় সেই পরিকল্পনা তিনি তৈরি করে দিয়েছেন। এই ধারাবাহিকতা নিয়ে দেশ চলতে থাকলে, দেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ থামাতে পারবে না।

আওয়ামী লীগের ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের আওয়ামী লীগের ভূমিকা তুলে ধরে দলের প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নামের সঙ্গে স্বাধীনতা ও অধিকার জড়িত। মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার এবং একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রদেশকে রাষ্ট্রে উন্নীত করে সংবিধান দিয়েছিলেন জাতির পিতা। অল্প সময়ের মধ্যে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা দেয় বাংলাদেশকে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সৃষ্টিলগ্ন থেকে সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। পাকিস্তান নামে দেশটি যেভাবে আমাদের শোষণ করে যাচ্ছিল। ২৩ বছরের সংগ্রাম ও জাতির পিতার নেতৃত্বে সেখান থেকে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীন জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। বাংলাদেশ নামটিও বঙ্গবন্ধুর দেয়া।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমরা কেবল জাতির পিতাকে হারাইনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনাকেও হারিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হয়েছিল। জয় বাংলা সেøাগান নির্বাসিত হয়েছিল। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার সরকারে আসার পর বাংলাদেশ সারাবিশ্বে একটা মর্যাদা পেয়েছে। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হতে হবে না। কারো কাছে হাত পেতে চলতে হবে না। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমি স্যালুট করি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণেরই সংগঠন। আওয়ামী লীগ সবসময়ই এদেশের শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করে গেছে। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। কত পরিবার কষ্ট পেয়েছে, কত মানুষ আত্মত্যাগ করেছে!’

বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্মরণ করে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের সেবা করার অধিকার পেয়েছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আজকে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নতি হচ্ছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণ নিজেদের অর্থায়নে করতে পেরেছি। সেটাও গণমানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা করেছি। ঠিক এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বাবা-মা-ভাই সব হারিয়ে আমি ফিরে এসেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করেছিল। পাশাপাশি জনগণের আশ্রয়েই আমি এসেছিলাম। তাদের মাঝে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম আমার হারানো বাবা মায়ের স্নেহ। হারানো ভাইয়ের স্নেহ। কাজেই এদেশের মানুষের জন্য যেকোন আত্মত্যাগে আমি সবসময় প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলা ভাষায় কথা বলা, আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ। আওয়ামী লীগ অর্থ বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।’