ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআই) প্রকল্পের ২০০ কোটি টাকার সম্পদ চুরির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের নামে মামলার আবেদন করেছেন ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে মামলাটির আবেদন করা হয়। এ সময় প্রয়োজনীয় নথিপত্র উপস্থাপন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুনজুর আলম। কিন্তু এখতিয়ার বহির্ভূত উল্লেখ করে আদালত মামলার আবেদন ফেরত দেয়।

তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী মামলা গ্রহণ করে আদেশ দেয়ার জন্য অন্য আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। ‘পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের সিডিউলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় সেখানে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য আবেদন জানাবেন।’

আদালত সূত্র জানিয়েছে, গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আবেদন করেন ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সরকার। আদালতকে বাদীর জবানবন্দি নিয়ে আদেশ দেয়ার জন্য বাদীপক্ষের আইনজীবী মুনজুর আলম আর্জি জানান। কিন্তু আদালত জানিয়েছে, বাদীর আবেদন বাদীকে ফেরত দেয়া হলো। এ ধরনের মামলা নেয়া আমার (আদালতের) এখতিয়ার বহির্ভূত। এ ধরনের ঘটনায় মামলা করার এখতিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদকের)। তাই মামলাটি ফেরত দেয়া হলো।

মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সংস্থাটির কাছ থেকে রাজস্ব আদায় বাবদ ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা পায়। আর ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে একই কাজ বাবদ সমিতি ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টাকা পায়। এর মধ্যে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে সমিতির হিসাবে জমা হয় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা। বাকি ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ৬টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে এমডি তাকসিম এ খানের নির্দেশে অন্য আসামিরা আত্মসাৎ করে। অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিদের এই ‘আত্মসাতের’ বিষয়টি সমবায় অধিদপ্তরের অডিট রিপোর্টে প্রমাণ হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ওয়াসার প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআইয়ের) ২০০ কোটি টাকার বিভিন্ন সরঞ্জামও রাতের আধাঁরে ওয়াসার এমডি তাসকিম এ খানের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট আসামিরা চুরি করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেনÑ ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী শারমিন হক আমীর, সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক মিঞা মো. মিজানুর রহমান, প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান, উপসচিব শেখ এনায়েত উল্লাহ, রাজস্ব পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন, জনতা ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম শ্যামল বিশ্বাস, প্রকৌশলী মো. বদরুল আলম ও উপপ্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সালেকুর রহমান।

জানতে চাইলে বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুনজুর আলম জানান, ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি ১৯৭৩ সালে গঠিত। বর্তমানে এ সংগঠনে ৩৮০০ সদস্য রয়েছে। ঢাকা ওয়াসা প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআই) নামে একটি প্রকল্প নেয়। ওই প্রকল্পের চেয়ারম্যান ছিলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আকতারুজ্জামান।

এ প্রকল্পের কাজ ছিল রাজধানীতে ওয়াসার লাইস মেরামত, মিটার স্থাপন, বিল উত্তোলন, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ইত্যাদি। এ প্রকল্পের আওতায় যেসব কর্মচারীরা কাজ করতেন নিয়ম ছিল তারা যত বকেয়া বিলসহ বিল উত্তোলন করবেন তার ১০ শতাংশ পিপিআই প্রকল্পের আওতায় থাকা কর্মচারীরা পাবেন। কমিশনের টাকা জমা হতো কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাবে। সেই টাকা কর্মচারীরা ভাগ করে নিতো। কিন্তু ২০১৭ থেকে ২০১৯ অর্থবছরে কমিশনের ১৩২ কোটি টাকা ওয়াসার এমডি তাসকিম এ খানের নির্দেশে তুলে নেয়া হয়। পাশাপাশি পিপিআই প্রকল্পের গাড়ি, ইলেক্ট্রনিক্স সরঞ্জাম, মেশিনসহ ২০০ কোটি টাকার বিভিন্ন মালামাল এমডি তাসকিম এ খানের নির্দেশে রাতের আধাঁরে চুরি করা হয়। এ কারণে আমরা চুরি ও অর্থ লুটের অভিযোগ এনে মামলার আবেদন জানিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিক। কিন্তু আদালত বলেছে এটি দুদকের সিডিউলভুক্ত অপরাধ। কিন্তু আমরা দুর্নীতির কোন অভিযোগ সেখানে করিনি। আমরা বলেছি, অর্থ লোপাট করা হয়েছে। আদালত যথাযথ আদালতে মামলাটি দায়ের করার জন্য বলেছেন।

অ্যাডভোকেট মুনজুর আলম জানান, মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা করা যায়। তাই আমরা সার্টিফাইড কপি উঠিয়ে সেখানে যাবো। এখানে ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী সমবায় সমিতির ৩৮০০ সদস্য। তারা প্রত্যেকেই পিপিআইয়ের সদস্য। পিপিআই হলো ঢাকা ওয়াসার একটি প্রজেক্টের আওতায়। এরা ঢাকা ওয়াসার বকেয়া বিল আদায় করে। বিল আদায়ের ১০ শতাংশ কর্মচারীরা কমিশন হিসাবে পান। এসব অর্থ কর্মচারী সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। ঢাকা ওয়াসার এমডি পিপিআইয়ের সদস্য নয়। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনেও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দুদকেও আমরা এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য আবেদন জানাবো।

ঢাকা ওয়াসার এমডি তাসকিম এ খান নানা কারণে আযাচিত। ওয়াসার লাইনে ময়লা পানি থাকার কারণে ওয়াসার এমডির অপসারণ দাবি করে আন্দোলন করেন ঢাকার জুরাইনের বাসিন্দা। ওই আন্দোলনের নেতা মিজানুর রহমান ময়লা পানিতে সরবত তৈরি করে তা ওয়াসার এমডিকে পান করাতে যান। সম্প্রতি ওই আন্দোলনের নেতা মিজানুর রহমানকে পুলিশ অন্য একটি ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নেয়। তখন অনেকেই সন্দেহ করেন ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় হয়ত মিজানুর রহমানকে গোয়েন্দা পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হতে পারে। যদিও গোয়েন্দা পুলিশ মিজানুর রহমানকে পরে ছেড়ে দেয়। এছাড়া ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেও বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছেন তাসকিম এ খান। টানা ১২ বছর ধরে তিনি ওয়াসার এমডির দায়িত্ব পালন করছেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে বার বার চুক্তিভিত্তিক একই পদে একই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে।

শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২ , ১০ আষাড় ১৪২৮ ২৪ জিলকদ ১৪৪৩

প্রকল্পের মালামাল চুরি ও কর্মচারীদের টাকা লুট

ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ১৩২ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআই) প্রকল্পের ২০০ কোটি টাকার সম্পদ চুরির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের নামে মামলার আবেদন করেছেন ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী বহুমুখী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে মামলাটির আবেদন করা হয়। এ সময় প্রয়োজনীয় নথিপত্র উপস্থাপন করেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুনজুর আলম। কিন্তু এখতিয়ার বহির্ভূত উল্লেখ করে আদালত মামলার আবেদন ফেরত দেয়।

তবে বাদীপক্ষের আইনজীবী মামলা গ্রহণ করে আদেশ দেয়ার জন্য অন্য আদালতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। ‘পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনের সিডিউলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় সেখানে এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য আবেদন জানাবেন।’

আদালত সূত্র জানিয়েছে, গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আবেদন করেন ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সরকার। আদালতকে বাদীর জবানবন্দি নিয়ে আদেশ দেয়ার জন্য বাদীপক্ষের আইনজীবী মুনজুর আলম আর্জি জানান। কিন্তু আদালত জানিয়েছে, বাদীর আবেদন বাদীকে ফেরত দেয়া হলো। এ ধরনের মামলা নেয়া আমার (আদালতের) এখতিয়ার বহির্ভূত। এ ধরনের ঘটনায় মামলা করার এখতিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদকের)। তাই মামলাটি ফেরত দেয়া হলো।

মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সংস্থাটির কাছ থেকে রাজস্ব আদায় বাবদ ৯৯ কোটি ৬৫ লাখ ১৯ হাজার ১৭৩ টাকা পায়। আর ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে একই কাজ বাবদ সমিতি ৩৪ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৭৯০ টাকা পায়। এর মধ্যে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে সমিতির হিসাবে জমা হয় ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৩ টাকা। বাকি ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ৬টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে এমডি তাকসিম এ খানের নির্দেশে অন্য আসামিরা আত্মসাৎ করে। অভিযোগে আরও বলা হয়, আসামিদের এই ‘আত্মসাতের’ বিষয়টি সমবায় অধিদপ্তরের অডিট রিপোর্টে প্রমাণ হয়েছে। এছাড়া ঢাকা ওয়াসার প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআইয়ের) ২০০ কোটি টাকার বিভিন্ন সরঞ্জামও রাতের আধাঁরে ওয়াসার এমডি তাসকিম এ খানের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট আসামিরা চুরি করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেনÑ ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী শারমিন হক আমীর, সাবেক রাজস্ব পরিদর্শক মিঞা মো. মিজানুর রহমান, প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান, উপসচিব শেখ এনায়েত উল্লাহ, রাজস্ব পরিদর্শক মো. জাকির হোসেন, জনতা ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম শ্যামল বিশ্বাস, প্রকৌশলী মো. বদরুল আলম ও উপপ্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সালেকুর রহমান।

জানতে চাইলে বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুনজুর আলম জানান, ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি ১৯৭৩ সালে গঠিত। বর্তমানে এ সংগঠনে ৩৮০০ সদস্য রয়েছে। ঢাকা ওয়াসা প্রোগ্রাম ফর পারফরমেন্স ইমপ্রুভমেন্ট (পিপিআই) নামে একটি প্রকল্প নেয়। ওই প্রকল্পের চেয়ারম্যান ছিলেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আকতারুজ্জামান।

এ প্রকল্পের কাজ ছিল রাজধানীতে ওয়াসার লাইস মেরামত, মিটার স্থাপন, বিল উত্তোলন, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ ইত্যাদি। এ প্রকল্পের আওতায় যেসব কর্মচারীরা কাজ করতেন নিয়ম ছিল তারা যত বকেয়া বিলসহ বিল উত্তোলন করবেন তার ১০ শতাংশ পিপিআই প্রকল্পের আওতায় থাকা কর্মচারীরা পাবেন। কমিশনের টাকা জমা হতো কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাবে। সেই টাকা কর্মচারীরা ভাগ করে নিতো। কিন্তু ২০১৭ থেকে ২০১৯ অর্থবছরে কমিশনের ১৩২ কোটি টাকা ওয়াসার এমডি তাসকিম এ খানের নির্দেশে তুলে নেয়া হয়। পাশাপাশি পিপিআই প্রকল্পের গাড়ি, ইলেক্ট্রনিক্স সরঞ্জাম, মেশিনসহ ২০০ কোটি টাকার বিভিন্ন মালামাল এমডি তাসকিম এ খানের নির্দেশে রাতের আধাঁরে চুরি করা হয়। এ কারণে আমরা চুরি ও অর্থ লুটের অভিযোগ এনে মামলার আবেদন জানিয়েছিলাম।

তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিক। কিন্তু আদালত বলেছে এটি দুদকের সিডিউলভুক্ত অপরাধ। কিন্তু আমরা দুর্নীতির কোন অভিযোগ সেখানে করিনি। আমরা বলেছি, অর্থ লোপাট করা হয়েছে। আদালত যথাযথ আদালতে মামলাটি দায়ের করার জন্য বলেছেন।

অ্যাডভোকেট মুনজুর আলম জানান, মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা করা যায়। তাই আমরা সার্টিফাইড কপি উঠিয়ে সেখানে যাবো। এখানে ঢাকা ওয়াসার কর্মচারী সমবায় সমিতির ৩৮০০ সদস্য। তারা প্রত্যেকেই পিপিআইয়ের সদস্য। পিপিআই হলো ঢাকা ওয়াসার একটি প্রজেক্টের আওতায়। এরা ঢাকা ওয়াসার বকেয়া বিল আদায় করে। বিল আদায়ের ১০ শতাংশ কর্মচারীরা কমিশন হিসাবে পান। এসব অর্থ কর্মচারী সমবায় সমিতির ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। ঢাকা ওয়াসার এমডি পিপিআইয়ের সদস্য নয়। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনেও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দুদকেও আমরা এ বিষয়ে অনুসন্ধানের জন্য আবেদন জানাবো।

ঢাকা ওয়াসার এমডি তাসকিম এ খান নানা কারণে আযাচিত। ওয়াসার লাইনে ময়লা পানি থাকার কারণে ওয়াসার এমডির অপসারণ দাবি করে আন্দোলন করেন ঢাকার জুরাইনের বাসিন্দা। ওই আন্দোলনের নেতা মিজানুর রহমান ময়লা পানিতে সরবত তৈরি করে তা ওয়াসার এমডিকে পান করাতে যান। সম্প্রতি ওই আন্দোলনের নেতা মিজানুর রহমানকে পুলিশ অন্য একটি ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নেয়। তখন অনেকেই সন্দেহ করেন ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় হয়ত মিজানুর রহমানকে গোয়েন্দা পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হতে পারে। যদিও গোয়েন্দা পুলিশ মিজানুর রহমানকে পরে ছেড়ে দেয়। এছাড়া ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগেও বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছেন তাসকিম এ খান। টানা ১২ বছর ধরে তিনি ওয়াসার এমডির দায়িত্ব পালন করছেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে বার বার চুক্তিভিত্তিক একই পদে একই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠেছে।