খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আল্টিমেটাম

রংপুরের বদরগঞ্জে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিএ আবদুল মজিদ হত্যার মাস্টারমাইন্ড কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা শহিদুল হক মানিকসহ তার ক্যাডার ও সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবং বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমানের খুনিদের গ্রেপ্তার না করে মোটা অঙ্কের অর্থ ঘুষ নিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরিয়ে ফেলাসহ খুনিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করার অভিযোগে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বদরগজ্ঞ পৌরসভার শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধন বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসি।

মানববন্ধনে বদরগজ্ঞ পৌর এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য দেন নিহত আবদুল মজিদের স্ত্রী বিলকিস বেগম, ছেলে সাকিব আহমেদ, বন্ধু মুকেশ চন্দ্র রায় নিক্সন, প্রতিবেশী মিন্টু মিয়া প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করেন গত ২৮ মে আবদুল মজিদকে মোবাইল ফোনে সাবেক ইউপি সদস্য সাইদার মেম্বার বদরগজ্ঞে তার পাওনা টাকা নেয়ার জন্য ডেকে পাঠান। নিহত মজিদ মোটরসাইকেলে করে বদরগজ্ঞে আসলে কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক তাকে উপজেলা সদরে নিয়ে একটি গোপন কক্ষে এক দফা নির্যাতন করে। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মানিক আবদুল মজিদকে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে। সেখান থেকে তার লাশ বদরগজ্ঞ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ফেলে রেখে খুনিরা পালিয়ে যায়।

নিহত মজিদের স্বজনরা অভিযোগ করে এ ঘটনার পর বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হত্যা মামলা রেকর্ড না করে ইউডি মামলা রেকর্ড করে। শুধু তাই নয় নিহত মজিদকে ফোন করে ডেকে আনা সাবেক ইউপি সদস্য সাইদার মেম্বারকে থানায় নিয়ে এসে একদিন একরাত আটকে রেখে মোটা অঙ্কের অর্থ ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেয়। শুধু তাই নয় মজিদের লাশ হাসপাতালে যারা ফেলে এসেছিল তাদের মধ্যে সাইদার মেম্বারও ছিল, সে কারণে ওসি হাসপাতালের ওই সময়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরিয়ে ফেলে এমনকি মানিক চেয়ারম্যানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসি টিভির ফুটেজ সরিয়ে ফেলতে সহায়তা করে।

নিহত মজিদের স্ত্রী বিলকিছ বেগম অভিযোগ করেন তার স্বামীকে হত্যার পর দু’দিন থানায় ওসির কাছে এজাহার দিতে গেলে ওসি এজাহার গ্রহণ করেনি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার ৫ দিন পর ওসি একটি এজাহার নিয়ে মামলা রেকর্ড করে এবং আবারও সাইদার রহমানকে বাসা থেকে ডেকে এনে আদালতে চালান দেয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমান মজিদ হত্যার মাস্টারমাইন্ড মানিক চেয়ারম্যান ও তার ক্যাডারদের গ্রেপ্তার না করে তাদের বাঁচাতে চেষ্টা করে আসছে। পুলিশই তাকে অনত্র সরে যেতে সহায়তা করে।

এমনকি মানিক চেয়ারম্যানের বাড়িতে থাকা নিহত মজিদের মোটরসাইকেলটি বাসা থেকে সরিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখতেও সহায়তা করেছে। পরে পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় ঘটনার দশ দিন পর উদ্ধার করে। বক্তারা অবিলম্বে মাস্টারমাইন্ড মানিক চেয়ারম্যানসহ অন্য খুনিদের গ্রেপ্তার করার জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম প্রদান করে অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান মানিক চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত আছে কিন্তু সে বার বার স্থান বদল করায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মিথ্যা বলেও দাবি করেন তিনি।

শুক্রবার, ২৪ জুন ২০২২ , ১০ আষাড় ১৪২৮ ২৪ জিলকদ ১৪৪৩

খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আল্টিমেটাম

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক রংপুর ও প্রতিনিধি, বদরগঞ্জ

রংপুরের বদরগঞ্জে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিএ আবদুল মজিদ হত্যার মাস্টারমাইন্ড কালুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা শহিদুল হক মানিকসহ তার ক্যাডার ও সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এবং বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমানের খুনিদের গ্রেপ্তার না করে মোটা অঙ্কের অর্থ ঘুষ নিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরিয়ে ফেলাসহ খুনিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করার অভিযোগে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বদরগজ্ঞ পৌরসভার শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধন বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসি।

মানববন্ধনে বদরগজ্ঞ পৌর এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য দেন নিহত আবদুল মজিদের স্ত্রী বিলকিস বেগম, ছেলে সাকিব আহমেদ, বন্ধু মুকেশ চন্দ্র রায় নিক্সন, প্রতিবেশী মিন্টু মিয়া প্রমুখ।

বক্তারা অভিযোগ করেন গত ২৮ মে আবদুল মজিদকে মোবাইল ফোনে সাবেক ইউপি সদস্য সাইদার মেম্বার বদরগজ্ঞে তার পাওনা টাকা নেয়ার জন্য ডেকে পাঠান। নিহত মজিদ মোটরসাইকেলে করে বদরগজ্ঞে আসলে কালুপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক তাকে উপজেলা সদরে নিয়ে একটি গোপন কক্ষে এক দফা নির্যাতন করে। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান মানিক আবদুল মজিদকে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করে। সেখান থেকে তার লাশ বদরগজ্ঞ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ফেলে রেখে খুনিরা পালিয়ে যায়।

নিহত মজিদের স্বজনরা অভিযোগ করে এ ঘটনার পর বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হত্যা মামলা রেকর্ড না করে ইউডি মামলা রেকর্ড করে। শুধু তাই নয় নিহত মজিদকে ফোন করে ডেকে আনা সাবেক ইউপি সদস্য সাইদার মেম্বারকে থানায় নিয়ে এসে একদিন একরাত আটকে রেখে মোটা অঙ্কের অর্থ ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেয়। শুধু তাই নয় মজিদের লাশ হাসপাতালে যারা ফেলে এসেছিল তাদের মধ্যে সাইদার মেম্বারও ছিল, সে কারণে ওসি হাসপাতালের ওই সময়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সরিয়ে ফেলে এমনকি মানিক চেয়ারম্যানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিসি টিভির ফুটেজ সরিয়ে ফেলতে সহায়তা করে।

নিহত মজিদের স্ত্রী বিলকিছ বেগম অভিযোগ করেন তার স্বামীকে হত্যার পর দু’দিন থানায় ওসির কাছে এজাহার দিতে গেলে ওসি এজাহার গ্রহণ করেনি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার ৫ দিন পর ওসি একটি এজাহার নিয়ে মামলা রেকর্ড করে এবং আবারও সাইদার রহমানকে বাসা থেকে ডেকে এনে আদালতে চালান দেয়।

বক্তারা অভিযোগ করেন বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমান মজিদ হত্যার মাস্টারমাইন্ড মানিক চেয়ারম্যান ও তার ক্যাডারদের গ্রেপ্তার না করে তাদের বাঁচাতে চেষ্টা করে আসছে। পুলিশই তাকে অনত্র সরে যেতে সহায়তা করে।

এমনকি মানিক চেয়ারম্যানের বাড়িতে থাকা নিহত মজিদের মোটরসাইকেলটি বাসা থেকে সরিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখতেও সহায়তা করেছে। পরে পুলিশ পরিত্যক্ত অবস্থায় ঘটনার দশ দিন পর উদ্ধার করে। বক্তারা অবিলম্বে মাস্টারমাইন্ড মানিক চেয়ারম্যানসহ অন্য খুনিদের গ্রেপ্তার করার জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম প্রদান করে অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এ ব্যাপারে বদরগজ্ঞ থানার ওসি হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান মানিক চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত আছে কিন্তু সে বার বার স্থান বদল করায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো মিথ্যা বলেও দাবি করেন তিনি।