ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ডা. হিরন্ময় হালদার কারিগরি কলেজে এইচএসসি (বিএম) শাখার পরীক্ষার ফর্ম পূরণ বাবদ ৩ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারিভাবে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক নির্ধাতির ফরম পূরণ বাবদ প্রথম বর্ষের ১২৭০ টাকা, দ্বিতীয় বর্ষের ১৩৯৫ টাকা, অনিয়মিত হলে ৯২৫ টাকা ধার্য্য থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক। পরীক্ষার্থীরা সরকারীভাবে শিক্ষা বোর্ড কর্র্তৃক নির্ধারিত ফিস অনুযায়ী ফর্ম পূরন করতে পরে সে বিষয়ে উর্দ্ধতন প্রশাসনের প্রতি দাবী জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ডা. হিরন্ময় কলেজের অধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন এইচ.এস.সি (বি.এম) শাখায় পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরনের জন্য ৪ হাজার ৫শ’ টাকা ধার্য করে সকল পরীক্ষার্থীদের সাফ সাফ জানিয়ে দেন। এ ঘটনার পর পরই বুধবার কলেজে ক্ষোভে ফেটে পড়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ উদ্ভুতকর পরিস্থিতি সামলিয়ে গত বৃহস্পতিবার ৩ হাজার টাকা ধার্য করে পুনরায় ফর্ম ফিলাপ শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার ফর্ম ফিলাপ করেছেন পরীক্ষার্থী নিরব আকন, সালাউদ্দিন খান, মফিজুল মুন্সি সহ একাধিকরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ধার্যকৃত এ ৩ হাজার টাকা ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে এলাকার দিনমজুর, কৃষক, দরিদ্র অভিভাবকদের কাছে। ক্ষোভের সঙ্গে অভিভাবক বজলু মুন্সী, আলমগীর খান, ফারুক আকন সহ একাধিকরা বলেন, শিক্ষা বোর্ডের ধার্যকৃত ফিসের পরিবর্তে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে যা অনেক কষ্টে যোগাড় করে সন্তানের ফর্ম পূরণ করতে হয়েছে। প্রতিবাদ করলে অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়।

এ বিষয়ে ডা. হিরন্ময় কলেজের অধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ভর্তির সময়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সেশন চার্জ, নিয়মিত মাসিক বেতন আদায় করা হয়না সব মিলিয়ে ফরম ফিলাপের সময় নেওয়া হয়। ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত নয়। বিষয়টি ইতোমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।

এ সর্ম্পকে ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন তালুকদার বলেন, ছাত্রছাত্রী অভিভাবকদের অভিযোগের ফরম পূরণের অতিরিক্ত ধার্যকৃত টাকার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতাকে অবহিত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোর্ডের ধার্যকৃত টাকা নেওয়া হচ্ছে না। কলেজটি অধ্যক্ষের খামখেয়ালিপনায় শিক্ষা ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। উপজেলা মাসিক সভায় এ কলেজের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় ইতোমধ্যে তোলা হয়েছে।

কলেজের সভাপতি ডা. হিরন্ময় হালদার বলেন, ফরম ফিলাপে কলেজ কর্তৃক ধার্যকৃত টাকার বিষয়ে আমাকে অবহিত করেছেন একাধিক অভিভাবকরা। অধ্যক্ষকে ফোন করে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ফোনটি তিনি রিসিপ করছেন না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নিবাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কারিগরি কলেজে ফরম পূরনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি অবহিত হয়ে অধ্যক্ষকে তলব করা হয়েছে।

অধ্যক্ষ সময় নিয়েছেন ঘটনাটি যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

শনিবার, ২৫ জুন ২০২২ , ১১ আষাড় ১৪২৮ ২৫ জিলকদ ১৪৪৩

ডা. হিরন্ময় কারিগরি কলেজ

ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ

প্রতিনিধি, মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট)

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ডা. হিরন্ময় হালদার কারিগরি কলেজে এইচএসসি (বিএম) শাখার পরীক্ষার ফর্ম পূরণ বাবদ ৩ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারিভাবে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক নির্ধাতির ফরম পূরণ বাবদ প্রথম বর্ষের ১২৭০ টাকা, দ্বিতীয় বর্ষের ১৩৯৫ টাকা, অনিয়মিত হলে ৯২৫ টাকা ধার্য্য থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক। পরীক্ষার্থীরা সরকারীভাবে শিক্ষা বোর্ড কর্র্তৃক নির্ধারিত ফিস অনুযায়ী ফর্ম পূরন করতে পরে সে বিষয়ে উর্দ্ধতন প্রশাসনের প্রতি দাবী জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ডা. হিরন্ময় কলেজের অধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন এইচ.এস.সি (বি.এম) শাখায় পরীক্ষার্থীদের ফর্ম পূরনের জন্য ৪ হাজার ৫শ’ টাকা ধার্য করে সকল পরীক্ষার্থীদের সাফ সাফ জানিয়ে দেন। এ ঘটনার পর পরই বুধবার কলেজে ক্ষোভে ফেটে পড়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ উদ্ভুতকর পরিস্থিতি সামলিয়ে গত বৃহস্পতিবার ৩ হাজার টাকা ধার্য করে পুনরায় ফর্ম ফিলাপ শুরু করেন।

বৃহস্পতিবার ফর্ম ফিলাপ করেছেন পরীক্ষার্থী নিরব আকন, সালাউদ্দিন খান, মফিজুল মুন্সি সহ একাধিকরা। কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত ধার্যকৃত এ ৩ হাজার টাকা ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে এলাকার দিনমজুর, কৃষক, দরিদ্র অভিভাবকদের কাছে। ক্ষোভের সঙ্গে অভিভাবক বজলু মুন্সী, আলমগীর খান, ফারুক আকন সহ একাধিকরা বলেন, শিক্ষা বোর্ডের ধার্যকৃত ফিসের পরিবর্তে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে যা অনেক কষ্টে যোগাড় করে সন্তানের ফর্ম পূরণ করতে হয়েছে। প্রতিবাদ করলে অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়।

এ বিষয়ে ডা. হিরন্ময় কলেজের অধ্যক্ষ সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ভর্তির সময়ে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সেশন চার্জ, নিয়মিত মাসিক বেতন আদায় করা হয়না সব মিলিয়ে ফরম ফিলাপের সময় নেওয়া হয়। ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত নয়। বিষয়টি ইতোমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।

এ সর্ম্পকে ইউপি চেয়ারম্যান রিপন হোসেন তালুকদার বলেন, ছাত্রছাত্রী অভিভাবকদের অভিযোগের ফরম পূরণের অতিরিক্ত ধার্যকৃত টাকার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকতাকে অবহিত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বোর্ডের ধার্যকৃত টাকা নেওয়া হচ্ছে না। কলেজটি অধ্যক্ষের খামখেয়ালিপনায় শিক্ষা ব্যবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। উপজেলা মাসিক সভায় এ কলেজের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় ইতোমধ্যে তোলা হয়েছে।

কলেজের সভাপতি ডা. হিরন্ময় হালদার বলেন, ফরম ফিলাপে কলেজ কর্তৃক ধার্যকৃত টাকার বিষয়ে আমাকে অবহিত করেছেন একাধিক অভিভাবকরা। অধ্যক্ষকে ফোন করে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ফোনটি তিনি রিসিপ করছেন না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নিবাহী অফিসার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কারিগরি কলেজে ফরম পূরনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের বিষয়টি অবহিত হয়ে অধ্যক্ষকে তলব করা হয়েছে।

অধ্যক্ষ সময় নিয়েছেন ঘটনাটি যাচাই বাছাই করে দেখা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।