সড়কে ঝরল ৭ প্রাণ

নিহতদের মধ্যে ৪ জন শিক্ষক

পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই জেলায় ৭জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁয়ে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে শিক্ষকসহ ৫জন প্রাণ হারায় এবং তাদের মধ্যে ৪জনই মাধ্যমিকের শিক্ষক। এছাড়া সিলেটে ট্রাক চাপায় প্রাণ হারায় মা ও ছেলে।

জেলা বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধির পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

নওগাঁ

নওগাঁয় ট্রাক, ট্রাক্টর ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার বাবলাতলা এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের মধ্যে একজন নারীসহ চারজনই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।

নওগাঁ সদর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, লাশগুলো উদ্ধার করে নওগাঁ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় খাদিজা নামের এক গুরুতর আহত শিশু সন্তান প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নিহত ওই চার শিক্ষক সবাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তারা হলেনÑ নিয়ামতপুর উপজেলার পানিহারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও উপজেলার বাদ নেহেন্দা গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন (৪৭), বেলকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও নিয়ামতপুরের বিজলী গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেন (৫৮), উপজেলার গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ভাদর- গ্রামের বাসিন্দা জান্নাতুন (৩৫) এবং উপজেলার রামকুড়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো. লেলিন (২৬)। তারা একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে নিয়ামতপুর থেকে নওগাঁ শহরে যাচ্ছিলেন। নিহত অন্যজন হলেনÑ নিয়ামতপুরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের অটোরিকশাচালক সেলিম (৪৫)।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি নিয়ামতপুর থেকে নওগাঁ শহরের দিকে আসছিল। ট্রাকটি নওগাঁ থেকে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। নওগাঁ সদর উপজেলার বাবলাতলা এলাকায় যাত্রীবাহী অটোরিকশাটির সঙ্গে প্রথমে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এরপর ছিটকে পড়া অটোরিকশাটিকে পেছন থেকে আসা ট্রাক্টরটি চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের দুটি দল উদ্ধারকাজ শুরু করে এবং ৫টি লাশসহ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি সড়কের পাশের খাদ থেকে উদ্ধার করেছে।

সিলেট

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ট্রাকচাপায় মা-ছেলে নিহত হয়েছেন। গতকাল সকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে গত ১৬ জুন থেকে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পানি নামলেও তেলিখালে একটি সেতু ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল শুরু করা যায়নি। সেনাবাহিনী ওই সেতু মেরামত করার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। তার পরদিনই দুর্ঘটনায় ঝরলো প্রাণ।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, সকালে সিলেট থেকে কোম্পানীগঞ্জে যাচ্ছিল সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা। তেলিখাল এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক অটোরিকশাকে চাপা দেয়।

এ সময় ঘটনাস্থলেই মা ও ছেলে নিহত হয়। আহত হয় চালকসহ অটোরিকশা আরেহী ৩ জন। নিহতরা হলেনÑ উপজেলার ইসলামপুরের হনুফা বেগম ও তার ছেলে এমরাজ মিয়া।

আহতদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, আটক করা হয়েছে ঘাতক ট্রাক। তবে ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন।

শনিবার, ২৫ জুন ২০২২ , ১১ আষাড় ১৪২৮ ২৫ জিলকদ ১৪৪৩

সড়কে ঝরল ৭ প্রাণ

নিহতদের মধ্যে ৪ জন শিক্ষক

সংবাদ ডেক্স

পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই জেলায় ৭জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে নওগাঁয়ে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে শিক্ষকসহ ৫জন প্রাণ হারায় এবং তাদের মধ্যে ৪জনই মাধ্যমিকের শিক্ষক। এছাড়া সিলেটে ট্রাক চাপায় প্রাণ হারায় মা ও ছেলে।

জেলা বার্তা পরিবেশক ও প্রতিনিধির পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

নওগাঁ

নওগাঁয় ট্রাক, ট্রাক্টর ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার বাবলাতলা এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতের মধ্যে একজন নারীসহ চারজনই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।

নওগাঁ সদর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, লাশগুলো উদ্ধার করে নওগাঁ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় খাদিজা নামের এক গুরুতর আহত শিশু সন্তান প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নিহত ওই চার শিক্ষক সবাই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তারা হলেনÑ নিয়ামতপুর উপজেলার পানিহারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও উপজেলার বাদ নেহেন্দা গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন (৪৭), বেলকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও নিয়ামতপুরের বিজলী গ্রামের বাসিন্দা মকবুল হোসেন (৫৮), উপজেলার গুজিশহর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ভাদর- গ্রামের বাসিন্দা জান্নাতুন (৩৫) এবং উপজেলার রামকুড়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মো. লেলিন (২৬)। তারা একটি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে নিয়ামতপুর থেকে নওগাঁ শহরে যাচ্ছিলেন। নিহত অন্যজন হলেনÑ নিয়ামতপুরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের অটোরিকশাচালক সেলিম (৪৫)।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি নিয়ামতপুর থেকে নওগাঁ শহরের দিকে আসছিল। ট্রাকটি নওগাঁ থেকে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। নওগাঁ সদর উপজেলার বাবলাতলা এলাকায় যাত্রীবাহী অটোরিকশাটির সঙ্গে প্রথমে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এরপর ছিটকে পড়া অটোরিকশাটিকে পেছন থেকে আসা ট্রাক্টরটি চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের দুটি দল উদ্ধারকাজ শুরু করে এবং ৫টি লাশসহ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি সড়কের পাশের খাদ থেকে উদ্ধার করেছে।

সিলেট

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ট্রাকচাপায় মা-ছেলে নিহত হয়েছেন। গতকাল সকালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে গত ১৬ জুন থেকে যান চলাচল বন্ধ ছিল। পানি নামলেও তেলিখালে একটি সেতু ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল শুরু করা যায়নি। সেনাবাহিনী ওই সেতু মেরামত করার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে ওই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। তার পরদিনই দুর্ঘটনায় ঝরলো প্রাণ।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, সকালে সিলেট থেকে কোম্পানীগঞ্জে যাচ্ছিল সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা। তেলিখাল এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি ট্রাক অটোরিকশাকে চাপা দেয়।

এ সময় ঘটনাস্থলেই মা ও ছেলে নিহত হয়। আহত হয় চালকসহ অটোরিকশা আরেহী ৩ জন। নিহতরা হলেনÑ উপজেলার ইসলামপুরের হনুফা বেগম ও তার ছেলে এমরাজ মিয়া।

আহতদের উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, আটক করা হয়েছে ঘাতক ট্রাক। তবে ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন।