পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শুধু দেশে নয়, বিদেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোও জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান উদযাপন করেছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে জাতির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে।
এ উপলক্ষে গত শুক্রবার রাতে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘দেশ-বিদেশে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের পাশাপাশি দৃঢ় সংকল্প ও মনোবলের কারণে দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।’ এর আগে ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেয়া বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ কামাল আহমেদ বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ দেশের জন্য বিশাল গৌরবের ব্যাপার। গত কয়েক বছরে দেশের যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং পদ্মা সেতু এই খাতকে আরও শক্তিশালী করেছে।’
জুনায়েদ আহমেদ আশা প্রকাশ করেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল-এ পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করা হয়। এর জন্য কনস্যুলেটে বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশেষ অতিথি হিসেবে নর্থ ক্যারোলিনা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. এবিএম নাসির উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া নিউইয়র্কে বসবাসকারী বীর মুক্তযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে কনস্যুলেটে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
গতকাল পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসী বীরমুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা, নারী নেতা, মিডিয়াকর্মীসহ দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান উল্লেখ করেন যে, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গর্ব, আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। বাঙালি জাতির এ গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিনে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতা, বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত ও যুগোপযোগী পদক্ষেপের ফলেই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার বুকে এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
এদিকে ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসেও পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এ সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলো। অন্যদিকে, এই সেতুর ফলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদন এক দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। প্রতি বছর ০.৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু অনন্য অবদান রাখবে।’
রবিবার, ২৬ জুন ২০২২ , ১২ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলকদ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শুধু দেশে নয়, বিদেশের বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোও জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান উদযাপন করেছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে জাতির দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপন করেছে।
এ উপলক্ষে গত শুক্রবার রাতে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বাংলাদেশে পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এক আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। আলোচনায় অংশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। এটি আমাদের গৌরব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘দেশ-বিদেশে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বের পাশাপাশি দৃঢ় সংকল্প ও মনোবলের কারণে দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।’ এর আগে ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেয়া বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনাইদ কামাল আহমেদ বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ দেশের জন্য বিশাল গৌরবের ব্যাপার। গত কয়েক বছরে দেশের যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এবং পদ্মা সেতু এই খাতকে আরও শক্তিশালী করেছে।’
জুনায়েদ আহমেদ আশা প্রকাশ করেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত করায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
নিউইয়র্কের বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল-এ পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনের ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করা হয়। এর জন্য কনস্যুলেটে বাংলাদেশ সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশেষ অতিথি হিসেবে নর্থ ক্যারোলিনা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. এবিএম নাসির উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া নিউইয়র্কে বসবাসকারী বীর মুক্তযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে কনস্যুলেটে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রবাসীদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
গতকাল পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ইতালির রোমে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসী বীরমুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা, নারী নেতা, মিডিয়াকর্মীসহ দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান উল্লেখ করেন যে, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গর্ব, আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মমর্যাদার প্রতীক। বাঙালি জাতির এ গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিনে তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাহসিকতা, বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত ও যুগোপযোগী পদক্ষেপের ফলেই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে প্রমত্তা পদ্মার বুকে এই সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।
এদিকে ভিয়েতনামের বাংলাদেশ দূতাবাসেও পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন উদযাপন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ এবং যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। এ সেতু নির্মাণের ফলে রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হলো। অন্যদিকে, এই সেতুর ফলে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদন এক দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। প্রতি বছর ০.৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ সেতু অনন্য অবদান রাখবে।’