কামরাঙ্গীরচরে কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ছুরিকাঘাতে জীবন চৌধুরী (১৯) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় রাফি আহমেদ (১৮) ও মো. বিজয় (১৭) নামে আরও দু’জন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচর কলেজ রোডে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত অবস্থায় তিনজনকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জীবন। জীবন কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার পশ্চিমঘর গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে। তিনি কামরাঙ্গীরচর কলেজ রোডে নুরু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

নিহত জীবনের বাবা আবদুল হাকিম জানান, জীবন দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। স্থানীয় একটি কারাখানায় কাজ করত সে। রাতে কলেজ রোডে একটি মারামারির ঘটনা শুনতে পাই। তবে কী নিয়ে মারামারি হয়েছে, তা জানতে পারিনি। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে জীবন ছিল বড়।

নিহত জীবনের বন্ধু মো. নীরব বলেন, আমরা বেশ কয়েকজন মিলে কলেজ রোডে ক্রিকেট খেলি। পরে বিজয়সহ মোট আটজন বন্ধু কলেজের ১ নম্বর গেটে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় অন্য এলাকার প্রায় ৪০-৫০ জন সেখানে জড়ো হয়। সেখানে মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় দুই গ্রুপের মারামারি থামাতে গেলে নাজমুল, হƒদয়, বাবুসহ কয়েকজন মিলে বিজয়, রাফি ও জীবনকে ছুরিকাঘাত করে।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, জীবনের পেট, পাঁজর ও পিঠে ছুরিকাঘাত ছিল। তিনি জানান, আহত রাফির বাম পাঁজরে ছুরিকাঘাত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। বিজয়ের হাতে আঘাত ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটি মোবাইল হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারি ঘটনায় ছুরিকাঘাতে তৃতীয় পক্ষের একজন মারা যায়। তিনি বলেন, ওই এলাকার নোমান নামের একজনের মোবাইল হারিয়ে যায়। এই বিষয়ে তার রুমমেট শামীমকে সন্দেহ করা হয়। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে শামীম-নোমানের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নোমান তার বন্ধু হƒদয় ও বাবুসহ কয়েকজন মিলে গত শুক্রবার রাতে কলেজ রোডের একটি গলিতে শামীমের ওপর হামলা করে। ঘটনার সময় সেখানে অবস্থান করা এলাকার কয়েকজন ছেলে তাদের মারামারি না করার জন্য বাধা দেয়। একপর্যায়ে হƒদয়, বাবু ও নোমান মিলে জীবনসহ তিনজনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে জীবন মারা যায়। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নোমান, শামীমসহ বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

রবিবার, ২৬ জুন ২০২২ , ১২ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলকদ ১৪৪৩

কামরাঙ্গীরচরে কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ২

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ ও ছুরিকাঘাতে জীবন চৌধুরী (১৯) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় রাফি আহমেদ (১৮) ও মো. বিজয় (১৭) নামে আরও দু’জন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচর কলেজ রোডে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আহত অবস্থায় তিনজনকে রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জীবন। জীবন কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার পশ্চিমঘর গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে। তিনি কামরাঙ্গীরচর কলেজ রোডে নুরু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

নিহত জীবনের বাবা আবদুল হাকিম জানান, জীবন দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। স্থানীয় একটি কারাখানায় কাজ করত সে। রাতে কলেজ রোডে একটি মারামারির ঘটনা শুনতে পাই। তবে কী নিয়ে মারামারি হয়েছে, তা জানতে পারিনি। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে জীবন ছিল বড়।

নিহত জীবনের বন্ধু মো. নীরব বলেন, আমরা বেশ কয়েকজন মিলে কলেজ রোডে ক্রিকেট খেলি। পরে বিজয়সহ মোট আটজন বন্ধু কলেজের ১ নম্বর গেটে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় অন্য এলাকার প্রায় ৪০-৫০ জন সেখানে জড়ো হয়। সেখানে মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় দুই গ্রুপের মারামারি থামাতে গেলে নাজমুল, হƒদয়, বাবুসহ কয়েকজন মিলে বিজয়, রাফি ও জীবনকে ছুরিকাঘাত করে।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, জীবনের পেট, পাঁজর ও পিঠে ছুরিকাঘাত ছিল। তিনি জানান, আহত রাফির বাম পাঁজরে ছুরিকাঘাত রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। বিজয়ের হাতে আঘাত ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, একটি মোবাইল হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মারামারি ঘটনায় ছুরিকাঘাতে তৃতীয় পক্ষের একজন মারা যায়। তিনি বলেন, ওই এলাকার নোমান নামের একজনের মোবাইল হারিয়ে যায়। এই বিষয়ে তার রুমমেট শামীমকে সন্দেহ করা হয়। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে শামীম-নোমানের মধ্যে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নোমান তার বন্ধু হƒদয় ও বাবুসহ কয়েকজন মিলে গত শুক্রবার রাতে কলেজ রোডের একটি গলিতে শামীমের ওপর হামলা করে। ঘটনার সময় সেখানে অবস্থান করা এলাকার কয়েকজন ছেলে তাদের মারামারি না করার জন্য বাধা দেয়। একপর্যায়ে হƒদয়, বাবু ও নোমান মিলে জীবনসহ তিনজনকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে জীবন মারা যায়। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। নোমান, শামীমসহ বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।