দীর্ঘ ১৫ বছর পর গৃহহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রংপুর নগরীর মডার্ন মোড় এলাকার কাছে এক গৃহবধূকে রিকশা থেকে টেনে নামিয়ে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল গতকাল বিকেলে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত থাকলেও প্রধান আসামি বাবু পলাতক রয়েছে। পরে আসামিদের পুলিশি পাহারায় আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রংপুর নগরীর এরশাদ নগর এলাকার মো. আবদুল জলিলের ছেলে আসাদুল ইসলাম, আউয়াল মিয়ার ছেলে রঞ্জু মিয়া ও কেডিসি রোড এলাকার আবদুস ছাত্তারের ছেলে বাবু মিয়া।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ২৬ মে নগরীর তাজহাট টিবি হাসপাতাল বস্তির মৃত আলাউদ্দিন হোসেনের মেয়ে গৃহবধূ (২৪) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে রিকশাযোগে লালবাগ মোড় হয়ে নগরীর মডার্ন মোড় যাওয়ার পথে তিন আসামি রিকশার গতিরোধ করে তাকে টেনে হেঁচড়ে রিকশা থেকে নামিয়ে নগরীর খামার এলাকার পূর্ব দিকে গাছের নিচে খুপড়ি ঘরে নিয়ে গিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে। ধর্ষিতা গৃহবধূর আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আসামি আসাদুলকে আটক করে। এ সময় অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী মাহিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ এসে আসামি আসাদুলকে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওইদিনই ধর্ষিতা গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে করান। পরে ফরেনসিক বিভাগ গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদন প্রদান করে।
কোতয়ালি থানার এসআই আজিজুল ইসলাম তদন্ত শেষে প্রধান আসামি বাবুসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মামলাটি বিচার চলাকালীন ১২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা শেষে বিচারক আসামি বাবু, আসাদুল ও রঞ্জু মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। মামলা চলাকালীন থেকেই আসামি বাবু পলাতক ছিল। রায় ঘোষণার সময় আসামি আসাদুল ও রঞ্জু মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিল। বিচারক পলাতক আসামি বাবুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন এবং গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকে রায় কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এর বিশেষ পিপি রফিক হাসনাইন অ্যাডভোকেট জানান, বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে এ রায়ে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে আসামি পক্ষের কোন আইনজীবী রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
সোমবার, ২৭ জুন ২০২২ , ১৩ আষাড় ১৪২৮ ২৫ জিলকদ ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর
দীর্ঘ ১৫ বছর পর গৃহহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রংপুর নগরীর মডার্ন মোড় এলাকার কাছে এক গৃহবধূকে রিকশা থেকে টেনে নামিয়ে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী একটি স্থানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এর বিচারক মোস্তফা কামাল গতকাল বিকেলে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত থাকলেও প্রধান আসামি বাবু পলাতক রয়েছে। পরে আসামিদের পুলিশি পাহারায় আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রংপুর নগরীর এরশাদ নগর এলাকার মো. আবদুল জলিলের ছেলে আসাদুল ইসলাম, আউয়াল মিয়ার ছেলে রঞ্জু মিয়া ও কেডিসি রোড এলাকার আবদুস ছাত্তারের ছেলে বাবু মিয়া।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের ২৬ মে নগরীর তাজহাট টিবি হাসপাতাল বস্তির মৃত আলাউদ্দিন হোসেনের মেয়ে গৃহবধূ (২৪) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে রিকশাযোগে লালবাগ মোড় হয়ে নগরীর মডার্ন মোড় যাওয়ার পথে তিন আসামি রিকশার গতিরোধ করে তাকে টেনে হেঁচড়ে রিকশা থেকে নামিয়ে নগরীর খামার এলাকার পূর্ব দিকে গাছের নিচে খুপড়ি ঘরে নিয়ে গিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে। ধর্ষিতা গৃহবধূর আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আসামি আসাদুলকে আটক করে। এ সময় অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী মাহিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ এসে আসামি আসাদুলকে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওইদিনই ধর্ষিতা গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে কোতয়ালি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা রংপুর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে করান। পরে ফরেনসিক বিভাগ গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদন প্রদান করে।
কোতয়ালি থানার এসআই আজিজুল ইসলাম তদন্ত শেষে প্রধান আসামি বাবুসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে মামলাটি বিচার চলাকালীন ১২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী সাক্ষীদের জেরা শেষে বিচারক আসামি বাবু, আসাদুল ও রঞ্জু মিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদ-ের আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। মামলা চলাকালীন থেকেই আসামি বাবু পলাতক ছিল। রায় ঘোষণার সময় আসামি আসাদুল ও রঞ্জু মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিল। বিচারক পলাতক আসামি বাবুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন এবং গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকে রায় কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন।
বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১ এর বিশেষ পিপি রফিক হাসনাইন অ্যাডভোকেট জানান, বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছে এ রায়ে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে আসামি পক্ষের কোন আইনজীবী রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত না থাকায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।