বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদেরকে কৃষি ঋণ প্রদানের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য গঠিত ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের অব্যবহৃত স্থিতির ন্যূনতম ৪০ শতাংশ অর্থ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণ হিসেবে দিতে বলা হয়েছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের বন্যাকবলিত এলাকা সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার পাশাপাশি দেশের উত্তররাঞ্চলে বন্যা কবলিত শেরপুর, জামালপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক চিহ্নিত জেলাসমূহের জন্য এ ঋণ প্রযোজ্য হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ৪ শতাংশ সুদহারে কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য গঠিত ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের আওতায় বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যাংকসমূহ কর্তৃক তাদের অব্যবহৃত স্থিতির ন্যূনতম ৪০ শতাংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমূহে বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত বছর কৃষি খাতের জন্য নতুন করে ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তহবিলের আওতায় কৃষক ব্যাংক থেকে ৪ শতাংশ সুদহারে ঋণ নিতে পারবেন। করোনায় অর্থনৈতিক মন্দা থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে ‘কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিম (দ্বিতীয় পর্যায়)’ নামে এ তহবিল গঠন করা হয়। এ প্যাকেজ থেকে ব্যাংকগুলো ১ শতাংশ সুদে তহবিল পাবে, আরও ৩ শতাংশ বাড়তি নিয়ে তারা ঋণ বিতরণ করতে পারবে।

দুধ উৎপাদনে দেয়া ঋণ সমন্বয়ের মেয়াদ বাড়ল

এছাড়াও দুধ উৎপাদনে খামারিদের ৪ শতাংশ সুদে দেয়া ঋণ সমন্বয়ের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় ব্যাংকগুলো থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন খামারি ও গাভি-বকনা বাছুর লালনপালনকারীরা। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া ব্যাংকগুলোর পুনঃঅর্থায়ন করা ঋণ আদায় ও সমন্বয় এবং ব্যাংকগুলোর ক্ষতিপূরণ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুদ ভর্তুকি দেয়াসহ স্কিমটির মেয়াদ আগামী ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর আগে এ সংক্রান্ত ইস্যু করা ওই স্কিম সংক্রান্ত সার্কুলারের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া সুবিধার ফলে এখন ৪ শতাংশ সুদে গাভি-বকনা বাছুর কেনা ও লালনপালনের জন্য ব্যাংক ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ঋণ নিতে পারবেন দুধ উৎপাদন এবং কৃত্রিম প্রজননের সঙ্গে জড়িত খামারিরা। একক ও যৌথ নামে এই ঋণ নেয়া যাবে। একটি বকনা বাছুর কেনার জন্য ৪০ হাজার টাকা এবং লালনপালনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে ঋণ নেয়া যায়। ফলে একজন খামারি সর্বোচ্চ চারটি বকনা বাছুরের জন্য সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারেন। এ ঋণ পুরোপুরি জামানতবিহীন।

মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২ , ১৪ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলকদ ১৪৪৩

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদেরকে কৃষি ঋণ প্রদানের নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য গঠিত ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের অব্যবহৃত স্থিতির ন্যূনতম ৪০ শতাংশ অর্থ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঋণ হিসেবে দিতে বলা হয়েছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের বন্যাকবলিত এলাকা সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার পাশাপাশি দেশের উত্তররাঞ্চলে বন্যা কবলিত শেরপুর, জামালপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক চিহ্নিত জেলাসমূহের জন্য এ ঋণ প্রযোজ্য হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ৪ শতাংশ সুদহারে কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য গঠিত ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের আওতায় বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যাংকসমূহ কর্তৃক তাদের অব্যবহৃত স্থিতির ন্যূনতম ৪০ শতাংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমূহে বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত বছর কৃষি খাতের জন্য নতুন করে ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তহবিলের আওতায় কৃষক ব্যাংক থেকে ৪ শতাংশ সুদহারে ঋণ নিতে পারবেন। করোনায় অর্থনৈতিক মন্দা থেকে কৃষকদের রক্ষা করতে ‘কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিম (দ্বিতীয় পর্যায়)’ নামে এ তহবিল গঠন করা হয়। এ প্যাকেজ থেকে ব্যাংকগুলো ১ শতাংশ সুদে তহবিল পাবে, আরও ৩ শতাংশ বাড়তি নিয়ে তারা ঋণ বিতরণ করতে পারবে।

দুধ উৎপাদনে দেয়া ঋণ সমন্বয়ের মেয়াদ বাড়ল

এছাড়াও দুধ উৎপাদনে খামারিদের ৪ শতাংশ সুদে দেয়া ঋণ সমন্বয়ের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনঃঅর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় ব্যাংকগুলো থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন খামারি ও গাভি-বকনা বাছুর লালনপালনকারীরা। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, বিতরণ করা ঋণের বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া ব্যাংকগুলোর পুনঃঅর্থায়ন করা ঋণ আদায় ও সমন্বয় এবং ব্যাংকগুলোর ক্ষতিপূরণ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুদ ভর্তুকি দেয়াসহ স্কিমটির মেয়াদ আগামী ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর আগে এ সংক্রান্ত ইস্যু করা ওই স্কিম সংক্রান্ত সার্কুলারের অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া সুবিধার ফলে এখন ৪ শতাংশ সুদে গাভি-বকনা বাছুর কেনা ও লালনপালনের জন্য ব্যাংক ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ঋণ নিতে পারবেন দুধ উৎপাদন এবং কৃত্রিম প্রজননের সঙ্গে জড়িত খামারিরা। একক ও যৌথ নামে এই ঋণ নেয়া যাবে। একটি বকনা বাছুর কেনার জন্য ৪০ হাজার টাকা এবং লালনপালনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে ঋণ নেয়া যায়। ফলে একজন খামারি সর্বোচ্চ চারটি বকনা বাছুরের জন্য সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারেন। এ ঋণ পুরোপুরি জামানতবিহীন।