কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থানে পদ্মা সেতুতে যান পারাপার স্বাভাবিক

পদ্মা সেতু দিয়ে প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৩১৬টি গাড়ি পারাপার করেছে। একই সময়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকা। গতকাল বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। তবে দ্বিতীয়দিন কত যানবাহন পারাপার ও কত টাকা টোল আদায় হয়েছে তা জানা যায়নি।

এদিন সেতুতে যানবাহন পারাপার পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল। সেতু কর্তৃপক্ষের সুত্র জানায়, প্রথমদিনের তুলনায় দ্বিতীয়দিন যানবাহন পারাপার হয়েছে কম। তাই টোল আদায় কমেছে। মূলত দ্বিতীয়দিন মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ ছিল। তাছাড়া প্রথমদিনের মতো উৎসুক জনতাও কমে এসেছে।

গত শনিবার বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাংশের সংযোগ ঘটে। সেতু খুলে দেয়ার পর এক নজর দেখার জন্য গত রোববার প্রথমদিন সকাল থেকেই ভিড় শুরু হয়। দুপুরে কিছুটা কম থাকলেও বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা থেকে রাতেও হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে পদ্মার দুই পাড়ে। টোল প্লাজার কাউন্টারগুলোকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।

সূত্র মতে, প্রথম ২৪ ঘণ্টায় মাওয়া-প্রান্ত দিয়ে সেতু পার হয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৯টি গাড়ি এবং এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা। একই সময়ে জাজিরা-প্রান্ত দিয়ে সেতু পার হয়েছে ২৪ হাজার ৭২৭টি গাড়ি এবং টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা।

এদিকে পদ্মাসেতু পারাপারে প্রথমদিন বেশ কিছু অনভিপ্রেত ঘটনায় গতকাল দ্বিতীয়দিনে কঠোর অবস্থানে যায় স্থানীয় প্রশাসন ও সেতু কর্তৃপক্ষ। এদিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভোর থেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে অনেকেই ভিড় জমান সেতুর দুই প্রান্তে। তাদের বাধা দেয়ায় এক পর্যায়ে বিক্ষোভও করেন মোটর আরোহীরা। এরপরও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর অবস্থানে সেতু পার হতে পারেননি তারা।

এছাড়াও সেতু পারাপারের নিয়ম মানাতে কঠোর অবস্থানে ছিল প্রশাসন ও সেতু কর্তৃপক্ষ। কেউ যাতে গাড়ি থেকে সেতুতে না নামে ও ছবি না তোলে, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।

প্রসাশনের কঠোর অবস্থানে সকাল থেকে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে কোনও যানবাহনের জট ছিল না। ব্যক্তিগত গাড়ি, বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক সরাসরি টোল দিয়ে সেতু পার হয়েছে।

তবে সকালে পদ্মা সেতু পার হতে না দেয়ায় কয়েকজন মোটরসাইকেলচালক টোল প্লাজায় জড়ো হয়। তারা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা কিছু সময়ের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখলেও পুলিশ এসে তাদের শিমুলিয়া ঘাটে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে ফেরির ব্যবস্থা করে দেয় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। পরবর্তীতে মোটরসাইকেলের যাত্রীরা ফেরিতে পদ্মা নদী পাড়ি দেন।

বাইকে নিষেধাজ্ঞা

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি, জানান, পদ্মা-সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব দেখা গেছে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাাজায়। মোটরসাইকেল আরোহীরা টোল প্লাজার আশপাশে থাকলেও সেতুতে উঠতে সাহস পায়নি। তারা যে পথে এসে ছিল সে পথেই আবার চলে গেছে।

সেতু বিভাগের তত্ত্ব¡াবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’

দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে গত রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।

শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হয় রোববার সকাল ৬টা থেকে।

সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় আগের রাত থেকেই হাজার হাজার যানবাহন জড়ো হতে থাকে মাওয়া প্রান্তে। এসব গাড়ির বড় অংশ ছিল মোটরসাইকেল।

মোটরসাইকেলের চাপে সেতুর টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় বাইকচালকরা বিশৃঙ্খলা শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সামাল দিতে হিমশিম খান।

টোল দিয়ে সেতুতে উঠে বাইকাররা যেন পাগলা ঘোড়া হয়ে যান। গত রোববার রাতে দুর্ঘটনাও ঘটে, যাতে প্রাণ যায় দুই বাইক আরোহীর।

এমন পরিস্থিতিতে সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আসে সরকারের তরফ থেকে।

সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক হামিদুল হক বলেন, ‘রোববার যে ব্যারিয়ারটি ভেঙে গিয়েছিল, সেটা ঠিক হয়ে গেছে। গতকালের চাইতে আজকে গাড়ির চাপ কম।

গতকালের মতো তেমন একটা চাপ নেই সুন্দরভাবেই সব রকম গাড়ি চলাচল করছে।

মঙ্গলবার, ২৮ জুন ২০২২ , ১৪ আষাড় ১৪২৮ ২৬ জিলকদ ১৪৪৩

কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থানে পদ্মা সেতুতে যান পারাপার স্বাভাবিক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

পদ্মা সেতুতে বাইক উঠতে না দেয়ায় বাইকাররা গতকাল মাওয়া ঘাটে কিছু সময় সড়ক অবরোধ করে -সংবাদ

পদ্মা সেতু দিয়ে প্রথম ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৩১৬টি গাড়ি পারাপার করেছে। একই সময়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকা। গতকাল বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। তবে দ্বিতীয়দিন কত যানবাহন পারাপার ও কত টাকা টোল আদায় হয়েছে তা জানা যায়নি।

এদিন সেতুতে যানবাহন পারাপার পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল। সেতু কর্তৃপক্ষের সুত্র জানায়, প্রথমদিনের তুলনায় দ্বিতীয়দিন যানবাহন পারাপার হয়েছে কম। তাই টোল আদায় কমেছে। মূলত দ্বিতীয়দিন মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ ছিল। তাছাড়া প্রথমদিনের মতো উৎসুক জনতাও কমে এসেছে।

গত শনিবার বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাংশের সংযোগ ঘটে। সেতু খুলে দেয়ার পর এক নজর দেখার জন্য গত রোববার প্রথমদিন সকাল থেকেই ভিড় শুরু হয়। দুপুরে কিছুটা কম থাকলেও বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা থেকে রাতেও হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে পদ্মার দুই পাড়ে। টোল প্লাজার কাউন্টারগুলোকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়।

সূত্র মতে, প্রথম ২৪ ঘণ্টায় মাওয়া-প্রান্ত দিয়ে সেতু পার হয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৯টি গাড়ি এবং এ থেকে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা। একই সময়ে জাজিরা-প্রান্ত দিয়ে সেতু পার হয়েছে ২৪ হাজার ৭২৭টি গাড়ি এবং টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা।

এদিকে পদ্মাসেতু পারাপারে প্রথমদিন বেশ কিছু অনভিপ্রেত ঘটনায় গতকাল দ্বিতীয়দিনে কঠোর অবস্থানে যায় স্থানীয় প্রশাসন ও সেতু কর্তৃপক্ষ। এদিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভোর থেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে অনেকেই ভিড় জমান সেতুর দুই প্রান্তে। তাদের বাধা দেয়ায় এক পর্যায়ে বিক্ষোভও করেন মোটর আরোহীরা। এরপরও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর অবস্থানে সেতু পার হতে পারেননি তারা।

এছাড়াও সেতু পারাপারের নিয়ম মানাতে কঠোর অবস্থানে ছিল প্রশাসন ও সেতু কর্তৃপক্ষ। কেউ যাতে গাড়ি থেকে সেতুতে না নামে ও ছবি না তোলে, সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।

প্রসাশনের কঠোর অবস্থানে সকাল থেকে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে কোনও যানবাহনের জট ছিল না। ব্যক্তিগত গাড়ি, বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক সরাসরি টোল দিয়ে সেতু পার হয়েছে।

তবে সকালে পদ্মা সেতু পার হতে না দেয়ায় কয়েকজন মোটরসাইকেলচালক টোল প্লাজায় জড়ো হয়। তারা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজা কিছু সময়ের জন্য অবরুদ্ধ করে রাখলেও পুলিশ এসে তাদের শিমুলিয়া ঘাটে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে ফেরির ব্যবস্থা করে দেয় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। পরবর্তীতে মোটরসাইকেলের যাত্রীরা ফেরিতে পদ্মা নদী পাড়ি দেন।

বাইকে নিষেধাজ্ঞা

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি, জানান, পদ্মা-সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব দেখা গেছে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাাজায়। মোটরসাইকেল আরোহীরা টোল প্লাজার আশপাশে থাকলেও সেতুতে উঠতে সাহস পায়নি। তারা যে পথে এসে ছিল সে পথেই আবার চলে গেছে।

সেতু বিভাগের তত্ত্ব¡াবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’

দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে গত রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। ঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।

শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হয় রোববার সকাল ৬টা থেকে।

সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় আগের রাত থেকেই হাজার হাজার যানবাহন জড়ো হতে থাকে মাওয়া প্রান্তে। এসব গাড়ির বড় অংশ ছিল মোটরসাইকেল।

মোটরসাইকেলের চাপে সেতুর টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় বাইকচালকরা বিশৃঙ্খলা শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সামাল দিতে হিমশিম খান।

টোল দিয়ে সেতুতে উঠে বাইকাররা যেন পাগলা ঘোড়া হয়ে যান। গত রোববার রাতে দুর্ঘটনাও ঘটে, যাতে প্রাণ যায় দুই বাইক আরোহীর।

এমন পরিস্থিতিতে সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আসে সরকারের তরফ থেকে।

সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক হামিদুল হক বলেন, ‘রোববার যে ব্যারিয়ারটি ভেঙে গিয়েছিল, সেটা ঠিক হয়ে গেছে। গতকালের চাইতে আজকে গাড়ির চাপ কম।

গতকালের মতো তেমন একটা চাপ নেই সুন্দরভাবেই সব রকম গাড়ি চলাচল করছে।