নিম্নমানের সামগ্রীতে বিন্দুসার পোলঘাটা সড়ক সংস্কার

টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের প্রধান সড়কের ৩টি স্থানে পৃথক পৃথকভাবে সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সড়কগুলো হচ্ছে আব্দুল্লাপুর বাজারে যাওয়ার পথে সেতুর কাছ থেকে পানাম পোলঘাটা পর্যন্ত । অপরটি হচ্ছে আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পর নাসিরের বাড়ি থেকে পুলিন্দারপাড় বটতলা বিন্দুসার বিবিআই কলোনি পর্যন্ত । আর অন্যটি হচ্ছে আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের পশ্চিমের বটতলা বিন্দুসার কালভার্ট থেকে রামিশা হিমাগার পর্যন্ত । তবে এ্ সড়কের পরিধি খ-ভাবে শেষ হয়েছে বেতকার খাল পর্যন্ত । এ সড়কের সংস্কার শেষ হলে মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে বেতকা বাজার পর্যন্ত খুব সহজেই যাতায়াত করা যাবে। তবে এ সড়কের সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের ঘটনায় এ সড়কে সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরদ্ধে। একাধিকবার গ্রামবাসী ও আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাঁধার মুখে ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী বদলাতে বাধ্য হয় বলে জানা গেছে। তারপরেও সুযোগ বুঝে ঠিকাদার এ সড়কের সংস্কার কাজে ব্যাপকভাবে দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন বলে জোর অভিযোগ উঠেছে।

ঠিকাদারী শর্তবলীর নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এ কাজের ঠিকাদার নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করায় ঠিকাদারের প্রতি স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ সড়কের প্রধান ঠিকাদার এ কাজের অংশটি আরেকজনের কাছে সাব ঠিাকাদার দিয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তার ফলে এ কাজের লাভের অংশ হাত বদলের কারণে এখানে নানা রকমের নিম্নমানের কাজ সড়কে করছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

টঙ্গীবাড়ী এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদেও নাসির উদ্দিনের বাড়ি থেকে শুরু করে রামিশা কোল্ড স্টোরেজ পর্যন্ত মোট ৩২০ মিটারের কাজ চলমান রয়েছে। পানাম পোলঘাট থেকে ৩৬০ মিটার ও আব্দুল্লাপুর ইউপি কার্যালয় পর্যন্ত ৩৭৯ মিটার রাস্তা সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এই তিন কাজের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬২০ টাকা।

এ কাজটি বাস্তবায়নে রয়েছেন মেসার্স আবিদ এন্টার প্রাইজ নামের এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়দের অভিযোগ সংস্কার কাজে যে মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবেই ব্যবহারের অযোগ্য। কার্পেটিং সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের ইট ও ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। তাছাড়া অনেক জায়গায় সমান ভাবে বালু না ফেলে ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। ইট ও খোয়া খুবই নিম্নমানের। এই সড়কে পা রাখলেই ভেঙে যাচ্ছে। এমন মনগড়া কাজে এ সড়ক কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে এমন প্রশ্ন এখন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

স্থানীয় সত্তর মিয়া রোলারের আগে যে ইটগুলো দিয়ে কাজ করা হয়েছে এবং সেই সঙ্গে যে খোয়াগুলো ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিক হয়নি বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এখানকার কাজের সময় আমরা কয়েকজন বেশ কয়েকবার বলেছিলাম এষানকার কাজটি সঠিকভাবে হয়নি। কিন্তু ঠিকাদার আমাদের কথা শুনেননি। তাছাড়া বিন্দুসার বটতলা ছোট একটি কালভার্ট রয়েছে। কালর্ভাটির একাংশ এ্যাপ্রোচ সড়ক ৯০ শতাংশ জায়গা ইতোমধ্যে ধসে গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, একই ইউনিয়নের পৃথক ৩ টি কার্পেটিং সড়কটিতে মোট ১ হাজার ৫৯ মিটার ি অংশের সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার লক্ষ করা গেছে। হাত ও পা দিয়ে চাপ দিতেই ইটের খোয়া ভেঙ্গে যাচ্ছে।

আব্দুল্লাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন জানান, আমরা এমন উদ্ভব ঘটনার নিন্দা জানাই। ভালো রাস্তা কেটে সংস্কার করা বৃহত্তর স্বার্থ ছাড়া আর কিছু নয়। যা সংস্কার করা হচ্ছে তাও আবার নিম্ন মানের সামগ্রী। বিষয়টি অত্যšত দুঃখজনক।

আব্দুল্লাপুর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, আমি একাধিবার নিজে গিয়ে এখানকার নিম্নমানের কাজে বাঁধা দিয়েছি। কিন্তু ঠিকাদার আমি চলে গেলেই নিম্নমানের কাজ করতেই থাকে। ঠিকাদারকে কতো আর পাহাড়া দিয়ে রাখা যায়।

মেসার্স আবিদ এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটার মো. হানিফ জানান, সংস্কার কাজে কোন প্রকার অনিয়ম বা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। সিডিউলে যেভাবে আছে আমি সেই রকম ভাবে কাজ করেছি।

টঙ্গীবাড়ী এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম রাজু জানান, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের যে রা¯তাাগুলোর সংস্কার কাজ করা হচ্ছে, সে রা¯তাগুলো অনেক আগের। তাছাড়া রা¯তাগুলোর দু’পাশ অনেক ঢালু। তাই ঐ রাস্তাগুলো ভেঙ্গে পুনরায় সংস্কার করা হচ্ছে যান চলাচল উপযোগী করার জন্য। আর রা¯তার কাজে কোন প্রকার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়ে থাকলে আমরা বিষয়টি দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বুধবার, ২৯ জুন ২০২২ , ১৫ আষাড় ১৪২৮ ২৭ জিলকদ ১৪৪৩

নিম্নমানের সামগ্রীতে বিন্দুসার পোলঘাটা সড়ক সংস্কার

প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ

image

মুন্সীগঞ্জ : সড়ক নির্মাণে ব্যবহৃত নষ্ট ইটের স্তূপ - সংবাদ

টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের প্রধান সড়কের ৩টি স্থানে পৃথক পৃথকভাবে সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত সড়কগুলো হচ্ছে আব্দুল্লাপুর বাজারে যাওয়ার পথে সেতুর কাছ থেকে পানাম পোলঘাটা পর্যন্ত । অপরটি হচ্ছে আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পর নাসিরের বাড়ি থেকে পুলিন্দারপাড় বটতলা বিন্দুসার বিবিআই কলোনি পর্যন্ত । আর অন্যটি হচ্ছে আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের পশ্চিমের বটতলা বিন্দুসার কালভার্ট থেকে রামিশা হিমাগার পর্যন্ত । তবে এ্ সড়কের পরিধি খ-ভাবে শেষ হয়েছে বেতকার খাল পর্যন্ত । এ সড়কের সংস্কার শেষ হলে মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে বেতকা বাজার পর্যন্ত খুব সহজেই যাতায়াত করা যাবে। তবে এ সড়কের সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের ঘটনায় এ সড়কে সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরদ্ধে। একাধিকবার গ্রামবাসী ও আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাঁধার মুখে ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী বদলাতে বাধ্য হয় বলে জানা গেছে। তারপরেও সুযোগ বুঝে ঠিকাদার এ সড়কের সংস্কার কাজে ব্যাপকভাবে দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন বলে জোর অভিযোগ উঠেছে।

ঠিকাদারী শর্তবলীর নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এ কাজের ঠিকাদার নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করায় ঠিকাদারের প্রতি স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ সড়কের প্রধান ঠিকাদার এ কাজের অংশটি আরেকজনের কাছে সাব ঠিাকাদার দিয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তার ফলে এ কাজের লাভের অংশ হাত বদলের কারণে এখানে নানা রকমের নিম্নমানের কাজ সড়কে করছেন বলে অভিযোগ উঠছে।

টঙ্গীবাড়ী এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদেও নাসির উদ্দিনের বাড়ি থেকে শুরু করে রামিশা কোল্ড স্টোরেজ পর্যন্ত মোট ৩২০ মিটারের কাজ চলমান রয়েছে। পানাম পোলঘাট থেকে ৩৬০ মিটার ও আব্দুল্লাপুর ইউপি কার্যালয় পর্যন্ত ৩৭৯ মিটার রাস্তা সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। এই তিন কাজের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬২০ টাকা।

এ কাজটি বাস্তবায়নে রয়েছেন মেসার্স আবিদ এন্টার প্রাইজ নামের এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।

স্থানীয়দের অভিযোগ সংস্কার কাজে যে মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবেই ব্যবহারের অযোগ্য। কার্পেটিং সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের ইট ও ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। তাছাড়া অনেক জায়গায় সমান ভাবে বালু না ফেলে ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। ইট ও খোয়া খুবই নিম্নমানের। এই সড়কে পা রাখলেই ভেঙে যাচ্ছে। এমন মনগড়া কাজে এ সড়ক কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে এমন প্রশ্ন এখন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।

স্থানীয় সত্তর মিয়া রোলারের আগে যে ইটগুলো দিয়ে কাজ করা হয়েছে এবং সেই সঙ্গে যে খোয়াগুলো ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিক হয়নি বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, এখানকার কাজের সময় আমরা কয়েকজন বেশ কয়েকবার বলেছিলাম এষানকার কাজটি সঠিকভাবে হয়নি। কিন্তু ঠিকাদার আমাদের কথা শুনেননি। তাছাড়া বিন্দুসার বটতলা ছোট একটি কালভার্ট রয়েছে। কালর্ভাটির একাংশ এ্যাপ্রোচ সড়ক ৯০ শতাংশ জায়গা ইতোমধ্যে ধসে গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, একই ইউনিয়নের পৃথক ৩ টি কার্পেটিং সড়কটিতে মোট ১ হাজার ৫৯ মিটার ি অংশের সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার লক্ষ করা গেছে। হাত ও পা দিয়ে চাপ দিতেই ইটের খোয়া ভেঙ্গে যাচ্ছে।

আব্দুল্লাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন জানান, আমরা এমন উদ্ভব ঘটনার নিন্দা জানাই। ভালো রাস্তা কেটে সংস্কার করা বৃহত্তর স্বার্থ ছাড়া আর কিছু নয়। যা সংস্কার করা হচ্ছে তাও আবার নিম্ন মানের সামগ্রী। বিষয়টি অত্যšত দুঃখজনক।

আব্দুল্লাপুর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম জানান, আমি একাধিবার নিজে গিয়ে এখানকার নিম্নমানের কাজে বাঁধা দিয়েছি। কিন্তু ঠিকাদার আমি চলে গেলেই নিম্নমানের কাজ করতেই থাকে। ঠিকাদারকে কতো আর পাহাড়া দিয়ে রাখা যায়।

মেসার্স আবিদ এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটার মো. হানিফ জানান, সংস্কার কাজে কোন প্রকার অনিয়ম বা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। সিডিউলে যেভাবে আছে আমি সেই রকম ভাবে কাজ করেছি।

টঙ্গীবাড়ী এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম রাজু জানান, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের যে রা¯তাাগুলোর সংস্কার কাজ করা হচ্ছে, সে রা¯তাগুলো অনেক আগের। তাছাড়া রা¯তাগুলোর দু’পাশ অনেক ঢালু। তাই ঐ রাস্তাগুলো ভেঙ্গে পুনরায় সংস্কার করা হচ্ছে যান চলাচল উপযোগী করার জন্য। আর রা¯তার কাজে কোন প্রকার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়ে থাকলে আমরা বিষয়টি দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।