বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার স্কুল ছাত্র নওফেল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। দামি মোবাইল ফোনের লোভেই খুন করা হয় স্কুল ছাত্র নওফেল শেখকে (১৪)। জন্মদিনে তাকে নিয়ে আনন্দ-ফূর্তি করার প্রলোভন দিয়ে ডেকে নেয় তারই বন্ধু নবির হোসেন (১৬)। এরপর গলায় মাফলার পেঁঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে নওফেলকে হত্যা করে তার ভিভো ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন সেট নিয়ে নেয় নবির। পরে সেই ফোন বিক্রির টাকায় বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলে গিয়ে ফূর্তি করে সে। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার দাড়িগাছা গ্রামের ইসরাইল শেখের ছেলে নওফেলকে গত ১৮ জুন খুন করা হয়। নওফেল দাড়িগাছা ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। গত সোমবার গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে নবির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নবির দাড়িগাছা গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে। গতকাল দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্তী তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, নবির হোসেন লেখাপড়া না করলেও নওফেল শেখ ছিল তার ঘনিষ্ট বন্ধু। তারা দাড়িগাছা গ্রামের বিভিন্ন জঙ্গলে গিয়ে মাঝেমধ্যেই ধুমপান করতো। দুই মাস আগে জমি বিক্রি করে ১৮ হাজার টাকায় একমাত্র ছেলে নওফেলকে স্মার্ট ফোন কিনে দেন তার বাবা। এরপর থেকেই বন্ধু নওফেলের মোবাইল ফোনটি হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে নবির হোসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৮ জুন নওফেলের জন্মদিন থাকায় বেলা ১১ টার দিকে নওফেলকে ধুমপান করার কথা বলে কৌশলে জঙ্গলে নিয়ে যায়। নবির আগে থেকেই নওফেলকে হত্যার উদ্দেশে একটি মাফলার সঙ্গে রেখেছিল।
জঙ্গলের একটি ইউক্যালিপ্টাস গাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে ধুমপান করার সময় নওফেলের গলায় সেই মাফলার পেঁচিয়ে গাছের সঙ্গে ফাঁস দেয়। এতে নওফেল নিস্তেজ হয়ে পড়লে নবির পাশের জমি থেকে একটি বাঁশের লাঠি এনে নওফেলের মাথায় আঘাতে করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর মরদেহ টেনে গভীর জঙ্গলে ফেলে দিয়ে মোবাইল ফোন সেটটি নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। সেই মোবাইল ফোনটি বগুড়া শহরে নিয়ে যায়। একই সঙ্গে বগুড়ার শেরপুর থেকে তার এক বান্ধবীকে শহরে ডেকে নেয়। দুইজন একত্রিত হয়ে নিজেদের ভাই বোন পরিচয় দিয়ে শহরের সাতমাথায় একটি দোকানে ৫ হাজার টাকায় মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে। সেখান থেকে তারা বগুড়া শহরের গালা পট্টির একটি আবাসিক হোটেলে গিয়ে একটি রুম ভাড়া করে। সেখানে বান্ধবীর সঙ্গে ফূর্তি করে তাকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে।
হত্যাকাণ্ডের দু’দিন পর ২০ জুন বিকেলে জঙ্গল থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন গিয়ে নওফেলের মরদেহ সনাক্ত করে। এরপর পর থেকেই পলাতক ছিল নবির। পুলিশ সুপার বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করা হয়। পুলিশের টিম প্রথমে সাতমাথা থেকে নওফেলের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে। এরপর ফোনের সূত্র ধরে আটক করা হয় নবিরের কথিত বান্ধবীকে। পরে পুলিশের একটি দল নবির হোসেনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে টঙ্গী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে জঙ্গল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাফলারটি উদ্ধার করে পুলিশ।
বুধবার, ২৯ জুন ২০২২ , ১৫ আষাড় ১৪২৮ ২৭ জিলকদ ১৪৪৩
প্রতিনিধি, বগুড়া
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার স্কুল ছাত্র নওফেল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। দামি মোবাইল ফোনের লোভেই খুন করা হয় স্কুল ছাত্র নওফেল শেখকে (১৪)। জন্মদিনে তাকে নিয়ে আনন্দ-ফূর্তি করার প্রলোভন দিয়ে ডেকে নেয় তারই বন্ধু নবির হোসেন (১৬)। এরপর গলায় মাফলার পেঁঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে নওফেলকে হত্যা করে তার ভিভো ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন সেট নিয়ে নেয় নবির। পরে সেই ফোন বিক্রির টাকায় বান্ধবীকে নিয়ে হোটেলে গিয়ে ফূর্তি করে সে। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার দাড়িগাছা গ্রামের ইসরাইল শেখের ছেলে নওফেলকে গত ১৮ জুন খুন করা হয়। নওফেল দাড়িগাছা ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। গত সোমবার গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকা থেকে নবির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নবির দাড়িগাছা গ্রামের মুকুল হোসেনের ছেলে। গতকাল দুপুরে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্তী তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, নবির হোসেন লেখাপড়া না করলেও নওফেল শেখ ছিল তার ঘনিষ্ট বন্ধু। তারা দাড়িগাছা গ্রামের বিভিন্ন জঙ্গলে গিয়ে মাঝেমধ্যেই ধুমপান করতো। দুই মাস আগে জমি বিক্রি করে ১৮ হাজার টাকায় একমাত্র ছেলে নওফেলকে স্মার্ট ফোন কিনে দেন তার বাবা। এরপর থেকেই বন্ধু নওফেলের মোবাইল ফোনটি হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করতে থাকে নবির হোসেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৮ জুন নওফেলের জন্মদিন থাকায় বেলা ১১ টার দিকে নওফেলকে ধুমপান করার কথা বলে কৌশলে জঙ্গলে নিয়ে যায়। নবির আগে থেকেই নওফেলকে হত্যার উদ্দেশে একটি মাফলার সঙ্গে রেখেছিল।
জঙ্গলের একটি ইউক্যালিপ্টাস গাছের সঙ্গে হেলান দিয়ে ধুমপান করার সময় নওফেলের গলায় সেই মাফলার পেঁচিয়ে গাছের সঙ্গে ফাঁস দেয়। এতে নওফেল নিস্তেজ হয়ে পড়লে নবির পাশের জমি থেকে একটি বাঁশের লাঠি এনে নওফেলের মাথায় আঘাতে করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর মরদেহ টেনে গভীর জঙ্গলে ফেলে দিয়ে মোবাইল ফোন সেটটি নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। সেই মোবাইল ফোনটি বগুড়া শহরে নিয়ে যায়। একই সঙ্গে বগুড়ার শেরপুর থেকে তার এক বান্ধবীকে শহরে ডেকে নেয়। দুইজন একত্রিত হয়ে নিজেদের ভাই বোন পরিচয় দিয়ে শহরের সাতমাথায় একটি দোকানে ৫ হাজার টাকায় মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে। সেখান থেকে তারা বগুড়া শহরের গালা পট্টির একটি আবাসিক হোটেলে গিয়ে একটি রুম ভাড়া করে। সেখানে বান্ধবীর সঙ্গে ফূর্তি করে তাকে দেড় হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে।
হত্যাকাণ্ডের দু’দিন পর ২০ জুন বিকেলে জঙ্গল থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন গিয়ে নওফেলের মরদেহ সনাক্ত করে। এরপর পর থেকেই পলাতক ছিল নবির। পুলিশ সুপার বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর গোয়েন্দা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করা হয়। পুলিশের টিম প্রথমে সাতমাথা থেকে নওফেলের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে। এরপর ফোনের সূত্র ধরে আটক করা হয় নবিরের কথিত বান্ধবীকে। পরে পুলিশের একটি দল নবির হোসেনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে টঙ্গী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে জঙ্গল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাফলারটি উদ্ধার করে পুলিশ।